খেলাধুলা

‘হাথুরুসিংহে আমাকে ভালো বোঝে’-সেঞ্চুরির পর সৌম্য

বিশ্বকাপ দল গঠনের প্রায় তিন মাস আগে হঠাৎ করে আলোচনায় আসেন সৌম্য সরকার। কোথাও বলার মতো পারফর্ম না করলেও তাকে ক্যাম্পে ডাকেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তাকে নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করেন, সুযোগ দেন ইমার্জিং এশিয়া কাপে। 

ইমার্জিংয়ে সুযোগ পেয়ে ব্যাটে-বলে দাগ কাটতে পারেননি সৌম্য, হারিয়ে যান আলোচনা থেকে। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দল এই বাঁহাতি ক্রিকেটারকে নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি বলে জানান প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। 

আলোচনা না হলেও সৌম্য আড়াল হননি। বিশ্বকাপের আগে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সুযোগ পান ওয়ানডেতে। শূন্য রানে দেন প্রতিদান। বিশ্বকাপের পর এবার কিউইদের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে ডাক পান সৌম্য। এবারও প্রথম ম্যাচে শূন্য। বল হাতে খরুচে।

সাকিব আল হাসানের অবর্তমানে তাকে দলে নেওয়া হয়, অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের জন্য। সেখানে সৌম্যর এমন পারফর্মে দেশজুড়ে শুরু হয় সমালোচনা। হাথুরুসিংহে বলেন, তার সমস্যা কোথায় তিনি জানেন না। তার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই সৌম্য জবাবটা দিলেন ব্যাট হাতে।

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সৌম্য খেলেন রেকর্ডে মোড়ানো ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। ১৫১ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১৬৯ রান। বাংলাদেশিদের মধ্যে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে এশিয়ার কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ ইনিংস। ভেঙেছেন শচীন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির রেকর্ড। 

পর্দার আড়ালে চলে যাওয়া সৌম্যর প্রত্যাবর্তনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হাথুরুসিংহে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলেনে অনুমিতভাবেই হাথুরুসিংহেকে নিয়ে প্রশ্ন ছুটে যায়। রাখ-ডাক না রেখে সৌম্য বলেন, কোচ তাকে ভালো বোঝেন, ‘এরকম কোন কিছুই না, সৌম্য সৌম্যই ছিলাম। হয়তোবা সে (হাথুরুসিংহে) আমাকে ভালো বোঝে। যে জন্য ছোট এক কথা বলেছে যা আমার জন্য ক্লিক করেছে।’ 

‘আমরা কীভাবে দেখি সেটা বড় বিষয়। একটা মানুষ হেঁটে গেলে তার মধ্যে অনেক নেগেটিভিটি পাবেন। আপনি যদি কেবল নেগেটিভি দেখতে চান নেগেটিভিটিই দেখবেন। পজেটিভ চিন্তা করলে পজিটিভ জিনিস পাবেন। হয়তো উনি পজেটিভ জিনিসটাই চিন্তা করে’-আরও যোগ করেন সৌম্য। 

নেলসনের ব্যাটিং স্বর্গে সৌম্যর লম্বা ইনিংসের পরও বাংলাদেশ তিনশ পেরোতে পারেনি। অলআউট হয় ২৯১ রানে। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটের হেরে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্যর আক্ষেপ আরও ৩০/৪০ রান হলে গল্পটা ভিন্ন হতো। এখন তার কাছে মনে হচ্ছে সেঞ্চুরিই বিফলে গেলো। 

‘অবশ্যই সেঞ্চুরিটা বিফল মনে হচ্ছে। যদি ম্যাচ জিততাম তাহলে ভালো লাগত নিজের কাছে। ব্যক্তিগতভাবে যদি বলেন হ্যাঁ, ভালো লাগছে। কিন্তু দিনশেষে, এটা দলীয় খেলা। যদি দল জিততো তাহলে পরিপূর্ণ হতো, ভালো স্মৃতি থাকতো।’ 

‘আমাদের দ্রুত কিছু উইকেট চলে গেছে। সেটা যদি না যেত তাহলে হয়তো আমাদের একটা জুটি ওখানে হলে মুশি ভাই বা মিরাজ এসে আগাতো। আবার মুশি ভাই বা মিরাজ এসে যখন আউট হয়েছে তখন আউট না হলে রানটা বাড়তি হতো। আরও ৪০-৫০ রান যদি যোগ করতে পারতাম তাহলে চিত্রটা ভিন্ন হতো’-যোগ করেন সৌম্য।