খেলাধুলা

দুই হাত ছাড়াই খেলেন ক্রিকেট, ভিডিও দেখে আবেগতাড়িত শচীন

ক্রিকেট খেলার জন্য শরীরের মূল অংশই হলো হাত। ব্যাট-বল ধরা ছাড়া ক্রিকেট তো অকল্পনীয়। অথচ হাত ছাড়াই ক্রিকেট খেলছেন কাশ্মীরের এক যুবক! তার নাম আমির হুসাইন লোন। জম্মু ও কাশ্মীর প্যারা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ৩৪ বছর বয়সী এই যুবা। তার ব্যাটিংয়ের ভিডিও দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার।  

ভারতীয় বার্তা সংস্থা ‘এএনআই’–এর একটি ভিডিওটি শেয়ার করেছেন শচীন। ভিডিওতে দেখা যায়, টেন্ডুলকারের নামাঙ্কিত ভারতীয় দলের জার্সি পরা আমির কংক্রিটের নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করছেন। ভিডিওটি ছুঁয়ে গেছে শচীনকে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন শচীন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ শচীন লিখেছেন, ‘অসম্ভবকে সম্ভব করেছে আমির। এটা দেখে আমি খুব আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি। এটা খেলার প্রতি তার ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগের বহিঃপ্রকাশ। আশা করি, একদিন তার সঙ্গে দেখা করে তার নাম লেখা একটি জার্সি নেওয়ার সুযোগ হবে। খেলাটিকে ভালোবাসা লাখ লাখ মানুষকে প্রেরণা দেওয়ার এই কাজটা দারুণ।’

আমির বল করেন পা দিয়ে, ব্যাটিং করেন কাঁধ ও ঘাড় দিয়ে ব্যাট ধরে! তার ব্যাট করার ধরনটা অন্যরকম। কাঁধ ও ঘাড় দিয়ে ব্যাটের হাতল চেপে স্ট্যান্স নেন আমির। বাকি কাজটা একজন পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যানের মতো। তবে সব শট খেলতে পারেন না। যা পারেন, সেটাও বা কম কিসে!

ভারতীয় গণমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র বরাতে জানা যায়, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ওয়াঘামা গ্রামে জন্ম আমিরের। বাবার কারখানায় ৮ বছর বয়সে এক দুর্ঘটনায় দুই হাত হারিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থেকেই নিজের শারীরিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও খেলার উপায় বের করে নিয়েছেন আমির।

২০১৩ সালে শুরু হয় আমিরের পেশাদার ক্রিকেটে যাত্রা। সে বছরই ২০১৩ সালে দিল্লিতে জাতীয় পর্যায়ে খেলেছেন তিনি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। এরপর নেপাল, শারজা ও দুবাই সফরেও গেছেন বিস্ময় জাগানো এই ক্রিকেটার। 

আমিরের হাত ছাড়া ব্যাটিং দেখে অবাক হন অনেকেই। আমিরের ভাষায়, ‘পা (বোলিং) এবং কাঁধ ও ঘাড়ের ব্যবহারে (ব্যাটিং) খেলতে দেখে সবাই খুব অবাক হতো। ক্রিকেট খেলার এই শক্তি দেওয়ার জন্য আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই।’

আমির আরও জানান, তিনি যেখানেই খেলতে যান, সবার প্রশংসা পান, ‘আমি সব জায়গাতেই আমার খেলার প্রশংসা শুনেছি। এটা সৃষ্টিকর্তার অবদান। তিনি আমাকে কঠোর পরিশ্রমের ফল দিয়েছেন। পা দিয়ে বল করা খুবই কঠিন, কিন্তু আমি সে দক্ষতা অর্জন করেছি। আমি নিজেই সব কাজ করি এবং সৃষ্টিকর্তা ছাড়া অন্য কারও ওপর নির্ভরশীল নই।’

আমিরের প্রিয় ক্রিকেটার কে, সেটার কিছুটা ইঙ্গিত শুরুতেই পাওয়া গিয়েছিল। আমিরের খেলা দেখে যিনি বিস্ময়ের সাগরে হাবুডুবু খেয়েছেন্, সেই শচীন ও বিরাট কোহলি তার প্রিয় ক্রিকেটার, ‘শচীন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলি আমাদের পছন্দের ক্রিকেটার। সৃষ্টিকর্তা চাইলে দ্রুতই তাদের সঙ্গে দেখা হবে।’