ম্যাচের পর ম্যাচে ব্যর্থতার মিছিলে থাকা নাজমুল হোসেনের শান্তকে ‘লর্ড’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করা হতো। বাংলাদেশ ক্রিকেটের কর্তা ব্যক্তি হতে শুরু করে ক্রিকেটারদের নিয়ে হারহামেশাই সামাজিক মাধ্যমে অযাচিত ট্রল চলতে থাকে। শান্ত এখন তিন সংস্করণে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হওয়ায়, তার সেই লর্ড নাম এখন খালেদ মাহমুদ সুজনের মুখে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হওয়া সমালোচনার কথা বলতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) এই পরিচালক বলেন, ‘আমাদের সামাজিক মাধ্যম দেখে যদি সিলেক্টর তৈরি করি, সিলেক্টর-প্লেয়ারদের গালি দেই! লর্ড শান্ত আজ তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন। কয়দিন আগেই শান্ত লর্ড ছিল।’
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন সুজন। এ সময় নতুন নির্বাচক নিয়োগসহ নানা বিষয় নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান তিনি।
‘এ সব কথা (সমালোচনা) সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই ছড়ায়। আপনাদের দায়িত্বও খুব জরুরি। সমালোচনা থাকবেই। শান্ত ভালো খেলবে না, সমালোচনা হবে। লিপু ভাই ভালো কাজ করবে না, সমালোচনা হবে। কিন্তু লিপু ভাইর ভালো কাজের কথাও বলতে হবে’ -কাজের প্রশংসা করার আহব্বান জানিয়ে এমন মন্তব্য করেন সুজন।
শান্ত তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে প্রতিবারই মূল অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে তাকে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। যার শুরুটা হয়েছিল গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে। লিটন দাস বিশ্রামে থাকায় শান্তকে অধিনায়ক করা হয়েছিল।
পরবর্তীতে বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে সাকিবের পরিবর্তে দলকে নেতৃত্ব দেন শান্ত। দুইবারই সাকিব চোটের কারণে খেলতে পারেননি। বিশ্বকাপের পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে (টেস্ট) এবং অ্যাওয়ে সিরিজে (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন। যেখানে বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজে ঘরের মাঠে প্রথমবার নিউ জিল্যান্ডকে হারায় এবং তাদের মাটিতে জয় পায় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে।
গত বছর ব্যাট হাতে শান্ত দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন। বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের এক বছরে পাঁচ সেঞ্চুরির রেকর্ড নেই। শান্ত পাঁচ সেঞ্চুরি করে তাক লাগিয়ে দেন। তিন টেস্ট সেঞ্চুরির সঙ্গে দুটি পান ওয়ানডেতে। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে রান করেন ১৬৫০। ব্যাটিং গড় ছিল ৪২.৩০।
শান্তকে নেতৃত্বের জন্য সেরা পছন্দ বলে মনে করেন সুজন, ‘না অবাক করা না, শান্ত তো ৩ ফরম্যাটেই খেলছে। এটা আমার কাছে অবাক করা না। সাকিব যদি না করে আমি মনে করি শান্ত অন্যতম সেরা পছন্দ। এ নিয়ে সন্দেহ নেই। শান্ত একদম মাঠের ছেলে।’
‘হয়ত এক ফরম্যাটে অন্য এক ক্যাপ্টেন দিতে পারতাম। লাল বল, সাদা বল আলাদা, হয়ত। অনেক সময় ভালোও হয়, খারাপও হয়। যেহেতু শান্ত ৩ ফরম্যাট খেলছে। দল নিয়ে কাজ করতে পারবে। ওকে শুভকামনা জানাই, এক বছর দেওয়া হয়েছে ওকে। ও যেন ভালো কিছু করে, লম্বা সময় অধিনায়কত্ব করে, পারফরম্যান্স ধরে রাখে।’