খেলাধুলা

জ্যাকসের সেঞ্চুরি, নেমেই মঈনের হ্যাটট্রিক, রিশাদের ঘূর্ণি জাদু

মঈন আলীকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারলেন আল আমিন। বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন উইল জ্যাকসের হাতে। এই নিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পঞ্চম কোনো ব্যাটারের ক্যাচ জ্যাকসের তালুবন্দি হলো। জ্যাকস নিজেই হাত দিয়ে ইশারা করে দেখাচ্ছিলেন, আর হাসছিলেন। অথচ শূন্যরানে জীবন পেয়ে এই জ্যাকস সেঞ্চুরি করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে পাহাড়সম পুঁজি গড়ে দেন।

জ্যাকসের ধরা আল আমিনের এই ক্যাচ মঈন আলীর হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। বিলাল খান বোল্ড হয়ে সেটি যেন সত্য করে তোলে। রাতেই চট্টগ্রাম আসা এই ব্রিটিশ অলরাউন্ডার দুপুরে মাঠে নেমে ব্যাট হাতে করলেন ঝড়ো ফিফটি, বল হাতে করলেন হ্যাটট্রিক! সঙ্গে আছে প্রথম খেলতে নামা লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণি জাদু। তাতেই কুপোকাত চট্টগ্রাম। ৭৩ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো লিটন দাসের দল।

টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে জ্যাকসের সেঞ্চুরিতে ভর করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ২৩৯ রান করে কুমিল্লা। বিপিএলে এর আগে এই কীর্তি রয়েছে রংপুর রাইডার্সের। তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরুর পরও ১৬৬ রানের বেশি করতে পারেনি চট্টগ্রাম। ১৬.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারায় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় চট্টগ্রামকে। রান পাহাড়ে চাপা পড়লেও অবশ্য শুরুটা ছিল সম্ভাবনাময়ী। তানজীদ তামিম-জস ব্রাউনের জুটিতে মাত্র ৭.৩ ওভারে আসে ৮০ রান। ২৩ বলে ৩৬ রান করে তানজীদ আউট হতে পতনের শুরু। ১০ রানের ব্যবধানে ফেরেন ব্রাউনও। তিনি ২৪ বলে ৪১ রান করেন।

প্রথম খেলতে নামা রিশাদের ঘূর্ণিতে ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম শিবির। ব্রাউনের পর টম ব্রুস (১১), শাহাদাত হোসেন দিপুদের (১২) ফিরিয়ে চট্টগ্রামের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। মাঝে প্রাণ ফেরান সৈকত আলী। মাত্র ১১ বলে ৩৬ রান করে ঝড়ের আভাস দেন। মঈন আলীর শিকার হয়ে তিনি ফিরতেই চট্টগ্রাম আর ক্রিজে থাকতে পারে মাত্র ২ ওভার। মঈন  চলমান বিপিএলে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন। প্রথম হ্যাটট্রিক শরিফুলের দখলে। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন রিশাদ।

এর আগে চট্টগ্রামের ক্যাচ মিসের মহড়ায় জ্যাকসের সেঞ্চুরি আর লিটন-মঈনের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে কুমিল্লার স্কোরবোর্ড ফুলেফেঁপে ওঠে। মাত্র ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেন জ্যাকস। বিপিএলে প্রথম, সবমিলিয়ে তৃতীয়। জ্যাকস ১০৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

ঝড়ো ব্যাটিং করেছেন প্রথমবারের খেলতে নামা মঈন আলী। মাত্র ২৪ বলে ৫৩ রান করেন ইংলিশ অলরাউন্ডার। তাদের দুজনের শেষ দিকের ঝড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২৩৯ রান তুলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মঈন আলী ৫৩ রানের ইনিংসটি সাজান ২ চার ও ৫ ছক্কায়। তিনিও জ্যাকসের সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন।

এছাড়া শুরুর দিকে অধিনায়ক লিটন ৩১ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬০ রান। দলের রান উৎসবের দিনে গোল্ডেন ডাক পেয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। এছাড়া ১০ রানে থামে ব্রুক গেস্টের ইনিংস। শুরুতে লিটন ও জ্যাকসের ৪৭ বলে ৮৬ রানের জুটি দারুণ শুরু এনে দেয় কুমিল্লাকে। শেষ দিকে জ্যাকস ও মঈন আলী ৫৩ বলে করেন ১২৮ রান।

চট্টগ্রামের হয়ে বল হাতে বাজে রেকর্ড গড়েন আল-আমিন। তিনি ৪ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে বিপিএলের সবচেয়ে খরুচে বোলার হিসেবে নাম লেখান। সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন শহিদুল ইসলাম।