খেলাধুলা

টি-টোয়েন্টিতে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন নেই 

টিম বাস দাঁড়িয়ে আছে। নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, কখন বের হবে! কিন্তু দুর্দান্ত ঢাকার বের হওয়ার কোনও সম্ভাবনা যেন দেখা যাচ্ছিল না। কারণ, ভেতরে চলছিল রুদ্ধধার টিমমিটিং। টুর্নামেন্টে ১২ ম্যাচে ১১ হার, ক্রিকেটারদের মনোবল চাঙা রাখতেও মিটিং ছিল গুরুত্বপূর্ণ। 

একটা সময় মিটিং শেষ হয়, ক্রিকেটাররা বের হতে থাকেন ধীরে ধীরে। আলাদা নজর ছিল পেসার শরিফুল ইসলামের দিকে। জাতীয় দলের এই তরুণ পেসার ঢাকার হয়ে বল হাতে প্রতিটি ম্যাচেই আগুণ ঝরিয়েছেন, এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। কিন্তু দলের অবস্থান এমন বেহাল, শরিফুলের ভাবনা কী তাতে?  

ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে শরিফুল নীরবে উঠে যান টিম বাসে। সতীর্থ কারও সঙ্গেও কথা বলতে দেখা যায়নি চটপটে এই তরুণকে। টিম হোটেলে রাত কাটিয়ে সকালে ধরেন ঢাকার বিমান। শরিফুলের ভাবনা জানতে মুঠোফোনই ছিল ভরসা। এই পেসারের মতে টি-টোয়েন্টি হচ্ছে দলগত খেলা, ব্যক্তিগত পারফরমেন্সের কোনও মূল্য নেই। 

‘টি-টোয়েন্টি হচ্ছে, দলগত খেলা। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দিয়ে যে বড় কিছু হয় না, তা তো আপনারা দেখলেনই। ব্যক্তিগতভাবে ভালো করেও কিন্তু আমরা সবার শেষে আছি। এটাই সবচেয়ে বড় উদাহরণ।’ 

বল হাতে শুধু শরিফুল নয়, ব্যাট হাতেও দুর্দান্ত ঢাকার ক্রিকেটার আছেন শীর্ষে। আলেক্সেন্ডার রস ৩৫২ রান নিয়ে সবার ওপরে, ৩১০ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে নাঈম শেখ তৃতীয় স্থানে। শরিফুলের আক্ষেপ, সবাই ছোট-ছোট অবদান রাখলে দলের জন্যই বড় ভালো হতো। 

আমরা কেউ যদি সেরা পাঁচে না থাকতাম, সবাই ছোট ছোট অবদান রাখত, আর আমরা ম্যাচ জিততাম। তাহলে কিন্তু অনেক ভালো কিছু হতো। দলগত খেলার ওপর আসলেই কিছু নেই। একার পারফরম্যান্স থেকে টিমের পারফরম্যান্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ- বলেছেন শরিফুল। 

টুর্নামেন্টে ১২ ম্যাচে শরিফুল নিয়েছেন ২২ উইকেট। ওভার প্রতি ৭.৮১ রান দিয়েছেন এই পেসার। সর্বোচ্চ নিয়েছেন ৪ উইকেট। এবারের বিপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিকের রেকর্ডও শরিফুলের ঝুলিতে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রংপুর রাইডার্সের শেখ মাহাদীর উইকেট ১৫টি। তৃতীয় স্থানে থাকা সাকিব আল হাসানের উইকেট ১৩টি। 

ফাইনাল পর্যন্ত রংপুর খেলতে পারলে সর্বোচ্চ পাঁচ ম্যাচ পাবেন মেহেদী-সাকিবরা। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে শরিফুলকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন তারা। এদিকে শরিফুলের বোলিং দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন নিউ জিল্যান্ডের অলরাউন্ডার জিমি নিশামও।

‘শরিফুলের মত পেসার উঠে এসেছে যে ভালো সুইং করাতে পারে এবং বাউন্সও পায় বেশ ভালো। নিউ জিল্যান্ডে দারুণ একটি সফর কাটিয়েছে তারা, খুশিই হবে হয়ত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের কোনোভাবেই হালকাভাবে নেওয়া যাবে, সহজেই জিতে যাব ভেবে বসে থাকা যাবে না। তারা দারুণ চ্যালেঞ্জিং একটি দল হবে বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশনে।’