খেলাধুলা

সাকিব কেন ১১ ওভারে বোলিংয়ে আসলেন, যা বললেন সোহান-মুশফিক

বিপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলার সাকিব আল হাসান। উইকেট সংখ্যায় তার ধারে কাছেও কেউ নেই। ১১৩ ম্যাচে ১৪৯ উইকেট। দুইয়ে থাকা রুবেল হোসেনের থেকে ৩৯ উইকেট এগিয়ে। বাঁহাতি স্পিনারের ২২ গজে আগমণ মানেই বাড়তি কিছু হওয়া। সেটা হয় উইকেট নিয়ে সাফল্য নয়তো কিপটে বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখা।

বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সাকিবের থেকে এমন কিছুরই প্রত্যাশা করছিল রংপুর রাইডার্স। কিন্তু সাকিব আক্রমণে আসার আগেই যেন ম্যাচ শেষ! ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে স্কোরবোর্ডে রংপুর রাইডার্সের পুঁজি ১৪৯ রান। ১০ ওভারে ৬৯ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় বরিশাল। শেষ ১০ ওভারে তাদের লক্ষ্য ছিল ৮১। হাতে ৭ উইকেট থাকায় নির্ভার ছিল তারা। সাকিব বোলিংয়ে আসেন ১১তম ওভারে। নিজের প্রথম ওভারে খরচ করেন ৯ রান। এরপর তার খোঁজ নেই। আবার যখন বল হাতে নিলেন তখন বরিশালের ১২ বলে দরকার ছিল কেবল ৬ রান। প্রথম দুই বলে মিলার ও মুশফিকের ২ রান। তৃতীয় বল মিড উইকেট দিয়ে মিলারের ছক্কা উড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায় বরিশালের ফাইনাল।

এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সাকিব নিজের কোটার ওভার শেষ না করায় অবাক হয়েছেন অনেকেই। সঙ্গে শুরুর দিকে আক্রমণে না আসায় হিসেব মিলছিল না কিছুতেই। ম্যাচ শেষে রংপুরের অধিনায়ক কাজী নুরুল হাসান সোহান সাকিবকে বোলিংয়ে না আনার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।  

সোহান বলেছেন, ‘আজকের উইকেটে সিমিং অনেক বেশি হচ্ছিল। সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার এটা নিয়ে কথা হচ্ছিল। বলছিল, আমাদের পাওয়ার প্লেতে উইকেট দরকার ছিল। স্পিনারদের জন্য উইকেটে খুব একটা সাহায্য হচ্ছিল না। এ কারণে আমাদের যে মূল পেসার যারা আছে তাদের দিয়ে চেষ্টা করেছি।’

সাত নম্বর বোলার হিসেবে সাকিব আক্রমণে এসেছিলেন। অথচ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার করেছিলেন অফস্পিনার শেখ মাহেদি। এরপর মোহাম্মদ নবী বোলিং করেন দশম ওভারে। বাকি আট ওভারই পেসাররা করেন। উইকেট পেসারদের সাহায্য করেছে তা প্রথম ইনিংসেও বোঝা গেছে। জেমস ফুলার ২৫ রান নিয়ে বরিশালের সেরা বোলার। এছাড়া কাইল মায়ার্স ও সাইফ উদ্দিন ছিলেন দুর্দান্ত। তবে বরিশালের দুই স্পিনার মিরাজ ও তাইজুল ২ ওভার করে হাত ঘুরিয়ে ৯ রানের বেশি দেননি। মিরাজ উইকেট পেলেও তাইজুল উইকেট পাননি।

অন্যদিকে রংপুরের স্পিনাররা মোটেও ভালো করেননি। স্পিনারদের খুব সহজেই খেলেছেন ম্যাচসেরা নির্বাচিত হওয়া মুশফিক, কাইল মায়ার্স ও ডেভিড মিলার।

সাকিব ইনিংসের ১১তম ওভারে বোলিংয়ে আসায় মোটেও অবাক হননি মুশফিক। দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে মুশফিক যা জানালেন তাতে দাঁড়ায়, সাকিবকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা করে তারা সফল। ওই পরিকল্পনার কারণেই সাকিবকে পরে বোলিংয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে রংপুর। মুশফিক বলেছেন, ‘নট রিয়েলি (অবাক হইনি)। আমি মনে করি এটা আমাদের যে গেম প্ল্যান ছিল সেটার জন্য তারা ফোর্স করেছে সাকিবকে পরে আনার। আপনি যদি খেয়াল করে দেখেন আমরা আগের ম্যাচে সৌম্যকে দিয়ে ওপেনিং করিয়েছিলাম তামিমের সঙ্গে। আজকে কিন্তু আমরা বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন তৈরি করেছিলাম। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি, যেহেতু এক সাইড ছোট… মেক শিউর করেছি যেন লেফট-রাইট কম্বিনেশন সব সময় থাকে।’

‘এই গেম প্ল্যানের কাছে ওরা কিন্তু …আপনারা জানেন সাকিব কিন্তু যে কোনো সময় যে কোনো দলের বিপক্ষে বিশেষ করে এরকম মোমেন্টে ভ্যালুয়েবল বোলার। আমরা যে পরিকল্পনা করেছি সেটাতে সাকসেসফুল হয়েছি। কারণ, তাদের কুইকার বোলার যারা আছে তারা আগে বোলিং করেছে। পরে আমাদের জন্য রান করা সহজ হয়ে গেছে।’ –যোগ করেন মুশফিক।