প্রথম ধাক্কাটা আসে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী আহসান মঞ্জিলে। দুই অধিনায়কের ফটোসেশনে নেই অধিনায়করা! দুই ফাইনালিস্ট কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশাল দুই প্রতিনিধিকে পাঠিয়ে দায়সারা কাজ সেরেছে। বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল দুঃখ প্রকাশ করলেও উল্টো পথে হেঁটেছেন কুমিল্লার কোচ সালাউদ্দিন! তার কাছে ট্রফির ফটোসেশন থেকে ট্রফি অর্জন করাটাই গুরুত্বপূর্ণ!
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফাইনালের প্রথম আনুষ্ঠানিক কাজ যখন বিতর্ক নিয়ে শুরু তখন মিরপুরে চলছিল টিকিট নিয়ে যুদ্ধ। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে মিলছিল না টিকিট, আয়োজকরা টিকিট ছাড়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে, পুলিশের লাঠিচার্জ কত কী। চারদিকে শুধু টিকিট নিয়ে হাহাকার। বিপিএল নিয়ে এর আগে এত মাতামাতি কবে হয়েছে এটা খুঁজতে গেলে যেতে হবে অনেক পেছনে।
এতোকিছুর পরও এবারের বিপিএল নিয়ে সর্বোচ্চ সক্রিয় ছিল ক্রিকেট বোর্ড। আসরজুড়েই ছিল দর্শকদের মিছিল। প্লে-অফে সব মাত্রা ছড়িয়ে যায়। দেশ যখন বিপিএল নিয়ে মাতোয়ারা তখন বেইলি রোডের অনাহুত আগুনে মারা যান ৪৩ জন মানুষ! আহত অনেকে। এই আনন্দ যেন এখন শোকে পরিণত হয়েছে।
সব কিছু পিছু ঠেলে শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে কুমিল্লা-বরিশাল। এই নিয়ে পঞ্চমবার ফাইনালে চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা, আর বরিশালের এটা দ্বিতীয় ফাইনাল। কুমিল্লার পাঁচে পাঁচ নাকি দ্বিতীয় ফাইনালে বরিশালের প্রথম ট্রফি?
ফটোসেশনে আসা বরিশাল প্রতিনিধি মিরাজের উত্তর, ‘ক্রিকেট এমন এক খেলা, যেদিন যে ভালো করবে সে-ই জিতবে। এর আগেও বরিশাল-কুমিল্লা ফাইনাল হয়েছে, বরিশাল ১ রানে হেরেছে। আশা করি এবার আরও একটা ভালো ম্যাচ উপহার দিতে পারব, সবাই উপভোগ করবে।’
মিরাজের বুনছেন ব্যক্তিগত অর্জনের স্বপ্নও, ‘আমি কখনও বিপিএলে ট্রফি জিতিনি। এবার জিতলে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হবো। এর আগে দুইবার ফাইনাল খেলেছি, এ নিয়ে তিনবার ফাইনাল খেলব। সবাই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে। কুমিল্লাও চায়, আমরাও চাই। মাঠে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে।’
কুমিল্লার প্রতিনিধি হয়ে আসা জাকের বলেন কুমিল্লা বড় ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত, ‘যদি আমাদের চ্যাম্পিয়ন হতে হয়, একটা জিনিস হচ্ছে কুমিল্লা এসব বড় ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত। কুমিল্লা ফাইনাল খেলে অভ্যস্ত। দল হিসেবে আমরা জানি কীভাবে বড় পারফরম্যান্স করতে হয়। ওইদিকেই ফোকাস থাকবে। ওই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব।’
কুমিল্লা বরাবরই দেশি-বিদেশি তারকা নির্ভর দল গড়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। লিটন দাস-তাওহীদ হৃদয়দের সঙ্গী হিসেবে আছেন সুনীল নারাইন-আন্দ্রে রাসেল কিংবা মঈন আলীদের মতো গেইম চেঞ্জার। ডাগআউটে আছেন মাস্টারমাইন্ড মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
বরিশালও কম যায় না। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তামিমের সঙ্গে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা জানেন মিরপুরে কিভাবে পারফর্ম করতে হয়। বিদেশিদের মধ্যে কাইল মায়ার্স-ডেবিড মিলাররা যে কোনো মুহুর্তে খেলার চিত্র বদলে দিতে পারেন।
এই ম্যাচে দুই দলই নিজেদের সেরা একাদশ নিয়ে মাঠে নামবে। তবে কুমিল্লার জন্য সুসংবাদ হলো, ফাইনালে তারা মোস্তাফিজুর রহমানকে পাচ্ছে। মাথার ইনজুরি থেকে সেরে উঠেছেন মোস্তাফিজ। ফাইনালের আগে দলের সঙ্গে অনুশীলনও করেছেন। সব ঠিক থাকলে আজ মাঠেও দেখা যাবে বাঁহাতি পেসারকে।