খেলাধুলা

শান্তর সেঞ্চুরিতে দাপুটে জয়ে সিরিজ শুরু

লং অফে দারুণ চারে বাংলাদেশের জয়সূচক রান এনে দেন শান্ত। চাপের মুহুর্তে দাঁড়িয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত ত্থেকে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার সঙ্গে ৭৩ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। দুজনের অবিচ্ছেদ্য ১৬৫ রানের জুটিতে বাংলাদেশ ৩২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এ ছাড়া মাহমুদউল্লাহ ৩৭ রান করেন। তিন ওয়ানডের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলো ১-০ ব্যবধানে।

চাপ সামলে শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরি লাহিরুর শর্ট বল। কাভারে দারুণ শটে শান্ত পাঠালেন বাউন্ডারির বাইরে। ১০৮ বলে দেখা পান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের। ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় সেঞ্চুরিটি সাজিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।  প্রথম বলে লিটনের আউটে শান্তকে ক্রিজে আসতে হয় ইনিংসের দ্বিতীয় বলে। দ্রুত ফেরেন সৌম্য-তাওহীদ। বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। শুরুর সেই ধাক্কা সামলে শান্ত হাঁকালেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক।

মুশফিকের ফিফটি, বাংলাদেশের ২০০  প্রমোদকে ডিপ স্কয়ার লেগে চার মেরে ৫৯ বলে ফিফটির দেখা পান মুশফিকুর রহিম। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এই ব্যাটারের এটি ৪৯তম ফিফটি। মাহমুদউল্লাহর আউটের পর শান্তর সঙ্গী হন মুশফিক। দুজনের জুটি ইতিমধ্যে শতরান পেরিয়েছে। বাংলাদেশ স্পর্শ করেছে দুইশর ঘর। ৩৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২০৪। জয়ের জন্য ৮৪ বলে প্রয়োজন ৫২ রান। হাতে আছে ৬ উইকেট।

শান্ত-মুশফিকের ব্যাটে চড়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ রান তাড়ায় দ্রুত উইকেট হারানোর পর প্রয়োজন ছিল লম্বা জুটির। মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন শান্ত। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর এবার মুশফিককে নিয়ে এগোচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দুজনে খেলছেন দেখেশুনে। ফিফটির পর শান্ত এগোচ্ছেন সেঞ্চুরির দিকে, মুশফিক আছেন ফিফটির পথে, দুজনের জুটি থেকে আসে এখন পর্যন্ত ৮৭ বলে ৭৫ রান। ৩০ অভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৬৭।

নাজমুলের ফিফটি, বাংলাদেশের লড়াই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে গড়েছিলেন দারুণ এক জুটি। তবে মাহমুদউল্লাহ আউট হলেও নিজের কাজটা ঠিকই করে যাচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দলকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তুলে নিয়েছেন ফিফটি। ৪৯ রানে দাঁড়িয়ে তিকশানার শর্ট বলে ঘুরিয়ে খেলেছিলেন। তাতে চার হলে ওয়ানডেতে নবম ফিফটির দেখা পান নাজমুল।

২৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৪০ রান। শান্ত ৫৯ বলে ৫৫ ও মুশফিকুর রহিম ২৩ রানে খেলছেন।

 

বিদায় নিলেন মাহমুদউল্লাহ দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর শান্ত-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছিল বাংলাদেশ। ৪৭ বলে ফিফটির জুটি পূর্ণ করেন দুজনে। তবে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে ৬৯ রানের বেশি আসেনি জুটি থেকে। লাহিরুকে পুল করতে গিয়ে মাদুশংকার হাতে ক্যাচ দেন এই ব্যাটার। ৪টি চারের মারে ৩৭ বলে ৩৭ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী মুশফিক। ১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৯৪ রান।

শান্ত-মাহমুদউল্লাহর প্রতিরোধে এগোচ্ছে বাংলাদেশ ২৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর শান্তর সঙ্গী হন মাহমুদউল্লাহ। দুজনে চাপ সামলে পাল্টা প্রতিরোধ গড়েন। রানের চাকা সচল রেখে উল্টো চাপ তৈরি করেন লঙ্কান বোলারদের উপর। পাওয়ার প্লেতে আসে ৫৫ রান। দুজনের জুটি ইতিমধ্যে ফিফটি পেরিয়েছে। করেছেন ৫৩ বলে ৫৮ রান। শান্ত ৩৩ ও মাহমুদউল্লাহ ৩৬ রানে ব্যাট করছেন।

বোল্ড হয়ে বিপদ বাড়ালেন তাওহীদ প্রমোদ মাদুশানের লেন্থ বল ডিফেন্স করতে গিয়েও পারলেন না তাওহীদ। বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে ভেঙে দেয় উইকেট। ৮ বলে রান আসে এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে। ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে লাল সবুজের দল। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।

লিটনের পর সৌম্য! এবার চাপে বাংলাদেশ। মাদুশংকার শর্ট বলে মারতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। ৯ বলে ৩ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ১৪ রানে বাংলাদেশ হারায় ২ উইকেট। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী নতুন ব্যাটার তাওহীদ। ৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৫ রান।

দারুণ শুরুর পরও পেস ত্রয়ীর আক্রমণে ২৫৫ রানে থামলো শ্রীলঙ্কা  প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৭১ রান তুলে বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তানজীম টানা তিন ওভারে তিন উইকেট নিয়ে লাগাম টেনে ধরেন। এরপর শেষ দিকে তাসকিন-শরিফুলের তোপে বড় সংগ্রহের পথে হাঁটতে পারেনি লঙ্কানরা। ৪৮.৫ ওভারে ২৫৫ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। ৩টি করে উইকেট নেন তানজীম-তাসকিন-শরিফুল। মাঝে ১ উইকেট নেন মিরাজ। লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন লিয়নাগে। ৫৯ রান আসে কুশলের ব্যাট থেকে।

লিয়ানাগেকে ফিরিয়ে শরিফুলের প্রথম উইকেট দুই পেসার তাসকিন-তানজীম শুরুতে এবং শেষে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু উইকেটের দেখা পাচ্ছিলেন না শরিফুল। অবশেষে তিনিও উইকেটের খাতা খুললেন। ফিফটি হাঁকানো লিয়ানাগেকে ফেরান এই পেসার। লিয়ানাগের ব্যাট থেকে আসে ৬৯ বলে ৬৭ রান। ক্রিজে মাদুশানে সঙ্গী লাহিরু। ৪৭ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৪৯।

লিয়ানাগের ফিফটির পর তাসকিনের আঘাত তানজীম হাসান সাকিবের তোপে শ্রীলঙ্কা যখন চাপে, ঠিক সে সময় হাল ধরেছিলেন জেনিথ লিয়ানাগে।নামার পর থেকেই দারুণ ইতিবাচক খেলা উপহার দেন লিয়ানাগে। ৫০ বলে তুলে নিয়েছেন ফিফটি। ৭ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় ফিফটি। তার ফিফটির পরই লঙ্কান শিবিরে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের পেসার। শর্ট। র‍্যাম্প শট খেলতে গিয়ে ডিপ থার্ডে মিরাজের হাতে ধরা পড়েছেন হাসারাঙ্গা।

৪৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২২৫ রান। জানিথ লিয়ানাগে ৬১ বলে ৬০ রানে খেলছেন। তার সঙ্গী প্রমোদ মাদুশান। 

কুশল-আসালাংকার প্রতিরোধ ভাঙলেন মিরাজ তানজীমের আঘাতে পরপর তিন উইকেট হারানোর পর কুশল-আসালংকা প্রতিরোধ গড়েন। দুজনে দেখে শুনে খেলছিলেন, গড়েন ৭৩ বলে ৪৪ রানের জুটি। এই জুটিকে আর বেশি এগোতে দেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন আসালাংকা। তার ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান। ক্রিজে কুশলের সঙ্গী লিয়ানাগে। ২৯ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৪৬।

টানা তিন ওভারে তানজীমের তিন উইকেট  দশম ওভারে আভিষ্কাকে ফিরিরে শুরু, এর পর দুই ওভারে তানজীম ফেরান নিশাঙ্কা ও সামারাবিক্রমাকে। দারুণ শুরুর পর শ্রীলঙ্কা তানজীমের আঘাতে খেই হারিয়ে ফেলে। ১৩ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে ৩ উইকেট। ক্রিজে কুশল মেন্ডিসের সঙ্গী আসালাংকা। ১৪ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ ৮৮ রানে ৩ উইকেট।

শ্রীলঙ্কার উড়ন্ত শুরুর পর তানজীমের আঘাত টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভার পর্যন্ত দলটির দুই ওপেনার দারুণ খেলতে থাকেন। দশম ওভারের পঞ্চম বলে আভিস্কাকে ফেরান তানজীম হাসান সাকিব। বল ব্যাটের কানায় লেগে যায় উইকেটের পেছনে। ৩৩ বলে ৩৩ রান করেন এই ব্যাটার। তার আউটে ভাঙে ৭১ রানের ওপেনিং জুটি। ক্রিজে নিসাঙ্কার সঙ্গী কুশল। পাওয়ার প্লে’তে দলটির সংগ্রহ ১ উইকেটে ৭১।

শ্রীলঙ্কার আক্রমণাত্মক সূচনা: প্রথম ওভারে শরিফুল ইসলাম মাত্র ২ রান দেন। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদের ওভারে দুই লঙ্কান ওপেনার নেন ১২ রান! ভালো শুরু পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এরপর দেখে-শুনে খেলতে থাকেন আভিস্কা ফার্নান্দো-পাথুম নিসাঙ্কা। তাসকিন চতুর্থ ওভারে এসে মেডেন দেন। পাঁচ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান বিনা উইকেটে ৩২।

ষষ্ঠ ওভারে তাসকিন ২ চারে দেন ৯ রান। আর সপ্তম ওভারে শরীফুল ১ চার ও ১ ছক্কায় দেন ১১ রান। তাতে সপ্তম ওভারে শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৫২।

টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ: তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। সাগরিকার পাড়ে এই ম্যাচে টস হেরে ফিল্ডিং করবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খেলাটি শুরু হবে বুধবার দুপুর আড়াইটায়। 

বাংলাদেশের একাদশ: তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ।  একাদশে আছেন- নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব।

শ্রীলঙ্কার একাদশ: পথুম নিসাঙ্কা, আভিষ্কা ফার্নান্দো, কুসল মেন্ডিস (ক্যাপ্টেন), সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, জানিথ লিয়ানাগে, ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা, মহেশ থিকশানা, প্রমোদ মদুশান, দিলশান মাদুশঙ্ক ও লাহিরু কুমারা।

দল হয়ে খেলতে চায় বাংলাদেশ: সিলেটে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে হারিয়ে বেশ চাঙা হয়েই চট্টগ্রামে পা রেখেছে লঙ্কানরা। অন্যদিকে, টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফলাফল পেছনে ফেলে বাংলাদেশের চোখ দলীয় খেলায় সাফল্যের দিকে। এমনটাই জানালেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দল হিসেবে ভালো খেলা। নিউজিল্যান্ড সিরিজে সেটা পেরেছি, সেখানে আমরা সব ম্যাচ জিততে চেয়েছি। বিশ্বকাপেও এটা দেখতে হবে দল হিসেবে আমরা কতটা ভালো ক্রিকেট খেলছি, খারাপ সময়ে একজন আরেকজনকে কতটা সমর্থন করছি।

লড়াই উপভোগ করছেন সিলভারউড: দুই দলের লড়াইটা বেশ উপভোগ করছেন লঙ্কান হেড কোচ ক্রিস সিলভারউড। টি-টোয়েন্টির মতো ওয়ানডেতেও সেটা দেখতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, এই দ্বৈরথ অবশ্যই খুব ভালো। আমাদের ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রয়োজন এবং টি-টোয়েন্টিতে আমরা দুটি ভালো দলের লড়াই-ই দেখেছি। এই সিরিজেও (ওয়ানডে) আমি ঠিক সেটাই চাইব। আমরা চাই কিছু ভালো ক্রিকেট খেলা হোক এবং আমার মনে হয় দুই দলই তা চায়।