খেলাধুলা

শান্তদের অপেক্ষা বাড়িয়ে জিতলো শ্রীলঙ্কা

সাগরিকার উইকেটের বিবেচনায় বাংলাদেশ ২০-২৫ রান কম জমা করে স্কোরবোর্ডে। তবুও দ্রুত শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেট নিয়ে এই রান যথেষ্ট এমন আভাস দেন পেসাররা। কিন্তু না, পাথুম নিশাঙ্কার সেঞ্চুরি, চারিথ আসালাঙ্কার ফিফটির সঙ্গে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে সিরিজে সমতা আনে সফরকারীরা।  

শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান করে বাংলাদেশ। তাড়া করতে নেমে ১৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় শ্রীলংকা। তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় আসায় শেষ ম্যাচটি দাঁড়ালো অলিখিত ফাইনালে।  

শরিফুল ইসলাম-তাসকিন আহমেদদের তোপে মাত্র ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, পাথুম নিশাঙ্কা-চারিথ আসালাঙ্কা পাল্টা প্রতিরোধ গড়েন। বাংলাদেশের বোলিংকে নির্বিষ বানিয়ে খেলতে থাকেন সাবলীলভাবে। ৩০ ওভার ধরে দুজনে কোনো উইকেট দেননি। উল্টো জয়ের ভিত গড়ে দেন। ১১৪ রানে নিশাঙ্কা আউট হলে ভাঙে জুটি। দুজনের জুটি থেকে আসে ১৮৫ রান। 

নিশাঙ্কার আউটের পরেই আসালাঙ্কাকে ফেরান তাসকিন। বল খোঁচা লেগে উইকেটের পেছনে গেলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নিলে পক্ষে আসে, ৯১ রানে বিদায় নিতে হয় আসালাঙ্কা। দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে কিছুটা স্বস্তি আসে বাংলাদেশ শিবিরে। কিন্তু বল-রানের ব্যবধান কম হওয়ায় শ্রীলঙ্কার দিকেই হেলে ছিল ম্যাচ। এর মধ্যে জানিথ লিয়ানাগেকে (৯) ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন।

এরপর শুরু হয় ভেলালাগে-হাসারাঙ্গার লড়াই। দুজনে খেলতে থাকেন সাবধানী। বুঝে-শুনে সিঙ্গেলস-ডাবলস নিয়ে ঝুঁকির পথে না হেঁটে এগোতে থাকেন দুজনে। ৪৬তম ওভারের শেষ বলে তানজীম হাসান সাকিবকে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের চাপমুক্ত করে দেন হাসারাঙ্গা। পরের ওভারে তাইজুলকে ছক্কা-চার হাঁকিয়ে ম্যাচ বের করে সাজঘরে ফেরেন। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১৬ বলে ২৫ রান। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন-শরিফুল।

এর আগে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল বাজেভাবে লিটন দাসের শূন্যরানে আউটে। ধাক্কা সামলে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ৭৫ রানের জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই জীবন পেয়ে ৪০ রানে শান্ত আউট হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর ক্রিজে সৌম্যর সঙ্গী হন তাওহীদ। দুজনে ফিফটির জুটি গড়ে এগোতে থাকেন। সৌম্য দেখা পান ফিফটির। সঙ্গে দ্রুততম ২ হাজার রানের কীর্তি গড়েন। 

৬৮ রানে হাসারাঙ্গার বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে কাটা পড়েন। দুই বল ব্যবধানে নতুন ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ হাসারাঙ্গার শিকার হয়ে ফিরলে বিপদ বাড়ে।  তাওহীদের সঙ্গী হন এবার মুশফিকুর রহিম। সাবলীল খেলতে থাকা মুশফিক রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন সাজঘরে। তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। মুশফিক আউট হলে তাওহীদের সঙ্গী হন মেহেদি হাসান মিরাজ। 

মিরাজও (১২) দ্রুত আউটের পর চ্যালেঞ্জিং স্কোর নিয়ে সংশয় জাগে। ক্রিজে একমাত্র ব্যাটার ছিলেন তাওহীদ, সঙ্গী হিসেবে ছিল না কোনো স্বীকৃত ব্যাটার। তবে এখানেই চমকে দেন তানজীম হাসান ও তাসকিন আহমেদরা। প্রথমে তানজীম জুটি গড়েন তাওহীদের সঙ্গে। ৪৭ রানের এই জুটি এক প্রকার বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরায়। তানজীম ১৮ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। 

এরপর তাসকিন এসে প্রথম বল থেকেই মারকুটে ব্যাটিং করতে থাকেন। অন্যপ্রান্তে তাওহীদ হাত খুলে খেলতে থাকেন। দুজনের ঝড়ে বাংলাদেশ পেয়ে যায় লড়াকু স্কোর। ইনিংসের শেষ দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে চলে যান সেঞ্চুরির কাছে। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন দুই টেলএন্ডার তানজীম হসান সাকিব-তাসকিন আহমেদ।  তাওহীদ ৯৬ ও তাসকিন ১৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। দুজনে ৮ম উইকেটের জুটিতে মাত্র ২৩ বলে যোগ করেন ৫০ রান!