পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ। কোচরা একদিকে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন। নিগার সুলতানা জ্যোতিরা স্বদলবলে ড্রেসিংরুমে ডুকে যান। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড থেকে জনা কয়েক দর্শক ডাক দিলেও কেউই উপরে তাকাতে পারেননি। পারবেনই বা কীভাবে। পারফরম্যান্স যে নিচুতে। একেবারে প্রত্যাশার বাইরে।
অধিনায়ক জ্যোতিও নিজেদের পারফরম্যান্স যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না। কেন এমন হলো। নিজেই বিস্মিত হয়েছেন। সহজ-সরল স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, সামর্থ্যের ১০ শতাংশও দিতে পারেননি তারা।
জ্যোতির ভাষ্য, ‘১০ শতাংশও না। কারণ আমি নিজেও টোটালি সারপ্রাইজড। কারণ গত ৬ মাসে যেভাবে ক্রিকেট খেলেছি, এটা একেবারেই এমন না। পুরো দল ব্যর্থ। দু একটা দিকে ভুল হলে তবুও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু পুরো দল ভিন্ন ধরনের ক্রিকেট খেলছে। মনে হচ্ছে যে ব্যাকফুটে রাখছে, মনে হয় যে সামর্থ্যের ১০ ভাগও খেলতে পারিনি।’
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার (২৭ মার্চ) তৃতীয় ওয়ানডে শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জ্যোতি। সংবাদকর্মীদের প্রশ্নবাণে হয়েছেন জর্জরিত। ভারত-পাকিস্তানের মতো দলকে হারিয়ে জ্যোতিরা যখন আলোর মাশার জ্বালাচ্ছিলেন, তখন অজিদের বিপক্ষে চূর্ণ হয়েছেন।
তিন ম্যাচে ব্যাট হাতে কোনোবারই বাংলাদেশ একশর গণ্ডি পার হতে পারেনি। ৯৫, ৯৭ ও ৮৯; তিন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের রান! দলীয় স্কোরই বলে দিচ্ছে কতটা খারাপ ব্যাটিং হতে পারে যেন সেই প্রতিযোগিতা চলছে। জ্যোতি জানান তাদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল না।
‘প্রস্তুতি অনেক ভালো নিয়েছি। অনুশীলন করেছেন এক ধরনের মানসিকতা নিয়ে, মাঠে এসে অ্যাপ্লাই করছেন আরেকভাবে , তখন কঠিন হয়ে যায়। কোচ বলেন বা অধিনায়ক হিসেবে বলেন, যখন দেখি খেলোয়াড় আত্মবিশ্বাসী, প্রস্তুতি ম্যাচে রান করছে, অনুশীলনে নিখুঁত ব্যাটিং করছে, এরপর যখন ভিন্নভাবে খেলছে—তখন আর কিছু করার থাকে না আমাদেরও। প্রস্তুতিতে সমস্যা ছিল বলে মনে হয় না। সামর্থ্যের এতটুকু দিয়েও খেলতে পারিনি আমরা।’
আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশীপের অন্তর্ভুক্ত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম সিরিজে স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি জ্যোতিরা, উল্টো দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে। ৩১ মার্চ থেকে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ, শেষ হবে ৪ এপ্রিল। মাঝে দ্বিতীয় ম্যাচটি হবে ২ এপ্রিল।