ইলেকট্রিক স্কোরবোর্ডের পর্দায় লাল রঙের ‘আউট’ ভেসে আসতেই কামিন্দু মেন্ডিসের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল! এতো কাছে এসে এতো দূরে থেকে যাবে সেঞ্চুরি! সিলেটে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির পর কামিন্দু মেন্ডিস আরেকটি সেঞ্চুরির খুব কাছে। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করেছিলেন। কিন্তু লঙ্কানদের এগার নম্বর ব্যাটসম্যান আসিথা ফার্নান্দো ক্রিজ থেকে বেরিয়ে রান আউট হলেন তাইজুলের থ্রোতে। অপরপ্রান্তে কামিন্দু তখন ৯২ নট আউট! মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস।
কামিন্দু সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। টানা তিন ইনিংসে তিন সেঞ্চুরির অনন্য কীর্তি তার নামে লিখা হতো। কিন্তু তার সেঞ্চুরি না পাওয়া ম্যাচে টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়ল শ্রীলঙ্কা। সেটা কিরকম?
১৮৭৭ সালে ১৩ মার্চ শুরু হয়েছে টেস্ট খেলা। এর ১৪৭ বছরের দীর্ঘ পথ চলার ইতিহাসের কোনো দল ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি ছাড়া ৫২৪ রানের বেশি করেনি। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা অলআউট হলো ৫৩১ রানে। কিন্তু তাদের গোটা ইনিংসে নেই কোনো সেঞ্চুরি!
টপ অর্ডারের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান পেয়েছেন ফিফটি। চারে নামা ম্যাথুজ ইনিংস বড় করতে পারেননি। এরপর মিডল অর্ডারে পরের তিন ব্যাটসম্যানের আবার ফিফটি। সব মিলিয়ে সাত ফিফটিতে শ্রীলঙ্কার রান রেকর্ড ছুঁয়েছে। কিন্তু কোনো সেঞ্চুরি নেই। তাতে শ্রীলঙ্কার নামে লিখা হয়েছে নতুন ইতিহাস। সেঞ্চুরি ছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড এখন শ্রীলঙ্কার।
এর আগে ১৯৭৬ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত ৯ উইকেটে ৫২৪ রান করেছিল কোনো সেঞ্চুরি ছাড়া। সবকটি উইকেট হারিয়ে এই রেকর্ডটি অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার দখলে। ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয়েছিল ৫১৭ রানে।
কামিন্দু মেন্ডিস ৯২ রানে অলআউটের আগে কুশল মেন্ডিস ৯৩ রান করেন। আশির ঘরে থামেন দিমুথ করুণারত্নে। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৬ রান। এছাড়া ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ৭০, দিনেশ চান্দিমাল ৫৯ এবং নিশান মাদুশঙ্কা ৫৭ রান করেন।
শ্রীলঙ্কার এমন রেকর্ডের পেছনে বড় অবদান বাংলাদেশের ফিল্ডারদের। দুদিন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ক্যাচ ছেড়েছেন সাতটি। এই ক্যাচ মিস না হলে শ্রীলঙ্কার রান চূড়ায় যেত কিনা সেটাই প্রশ্ন।