খেলাধুলা

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু শনিবার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১৩ ম্যাচ পেরিয়ে গেছে। এখনো মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশের। শুধু বাংলাদেশ নয়, নিউ জিল্যান্ডও এখনও মাঠে নামেনি। দুই দলের অপেক্ষা ফুরাচ্ছে শনিবার। ভোর সাড়ে পাঁচটায় নিউ জিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। সাড়ে ছয়টায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।

গ্রুপ ডি’র ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। গ্র্যান্ড পেইরি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপে এরই মধ্যে একটি ম্যাচ খেলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই নাস্তানাবুদ হয়েছে তারা। মাত্র ৭৭ রানে অলআউট হয়ে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে অলআউটের লজ্জা পায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো মূল্যেই তাই শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে।

বাংলাদেশও চাইবে ম্যাচটা জিতে বিশ্বকাপের মিশন দারুণভাবে শুরু করতে। কিন্তু সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য কাজটা কঠিন। অতীত পরিসংখ্যান বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছে না। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ কখনোই জিততে পারেনি। ২০২১ সালে সবশেষ দেখায় শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে জয় পেয়েছিল। এর আগে টি-টোয়েন্টি মহাযজ্ঞে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৭ সালে, প্রথম আসরে। সেবার ৬৪ রানে জয় পায় সিংহের দল।

বিশ্বকাপ বাদে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার রেকর্ড বেশ ভালো। ষোলোবারের দেখায় পাঁচ ম্যাচে তারা হেরেছে। বাকিগুলোতে এসেছে জয়। বাংলাদেশ বিশ্বকাপে পা রাখার আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে। শুরুর দুই ম্যাচ হারের পর তৃতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায়। পেয়ে যায় ১০ উইকেটের জয়। যা টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় জয় বাংলাদেশের।

কিন্তু এই জয়ও প্রবল আত্মবিশ্বাসী করতে পারছে না দলকে। কেননা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের কাছে স্রেফ আত্মসমর্পণ করেছে দল। ভারতের করা ১৮২ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১২২ রানে। যেখানে ৪১ রান তুলতেই হারায় ৫ উইকেট। টপ অর্ডার সেদিন ছিল পুরো টপলেস। মিডল অর্ডার দুমড়েমুচড়ে যায় অল্পতে। বিশ্বকাপে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস নাড়িয়ে দেয় ভারত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ কেমন করে সেটা বলা কঠিনই বটে। 

অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্যের দিক থেকে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা পিঠাপিঠি অবস্থান করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় বাংলাদেশকে নিয়ে বাজি ধরার লোকের অভাব হবে। সাকিবের জন্য এই বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে বিশেষ কিছু। বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার বাংলাদেশের হয়ে সবকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন। ২০০৭ থেকে যে সফর শুরু হয়েছিল তা এখনও বহমান। বিশ্বের মাত্র দুজনই এই কীর্তি করতে পেরেছেন। সাকিব বাদে আছেন কেবল রোহিত শর্মা। এই বিশ্বকাপে সাকিবের জন্য বড় কিছু হাতছানি দিচ্ছে। ৩৬ ম্যাচে সাকিব ৪৭ উইকেট পেয়েছেন। তিনটি উইকেট নিতে পারলে সাকিব প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৫০ উইকেটের মাইলকফলক ছুঁতে পারবেন। এছাড়া ১৪৬ উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন তিনি। চার উইকেট পেলে সাকিব টিম সাউদির পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ১৫০ উইকেটের মাইলফলক পেরোবেন। ১৫৭ উইকেট নিয়ে সাউদি রয়েছেন শীর্ষে।

দুই দলের শেষ বৈশ্বিক আসরের মুখোমুখিতে যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউসকে টাইমড আউট করে উত্তাপ ছড়ায়। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল দারুণভাবে। কিন্তু টাইমড আউটের রিঅ্যাকশন এখনও চলমান। এ বছরই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর দুই দলই টাইমড আউট সেলিব্রেশন করেন। দিল্লিতে যে লড়াই শুরু হয়েছিল, তা সিলেট, চট্টগ্রাম ঘুরে ডালাসেও ছড়িয়ে যাবে। দুই দলের মাঠের ভেতরের রসায়ন এখন এমনই, কেউ কাউকে ছাড় দেয় না। দেখার বিষয় বিশ্বকাপের এই ম্যাচে কার মুখে ফোঁটে শেষ হাসি।