খেলাধুলা

অস্ট্রেলিয়া সফর ২০২৭ সালে, পরিকল্পনা ‘এখন থেকে’

নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে মাত্র দুইবার অস্ট্রেলিয়া সফর করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ২০০৩ ও ২০০৮ সালে। এরপর দ্বিপক্ষীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের জন্য দরজা বন্ধই করে রেখেছে। তবে এবারের ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি)- তে সুখবর পেয়েছে বাংলাদেশ।

সবকিছু ঠিক থাকলে ১৯ বছর পর অস্ট্রেলিয়া সফরের দুয়ার খুলতে যাচ্ছে। ২০২৭ সালে বাংলাদেশকে আতিথ্য দেবে অস্ট্রেলিয়া। দুই টেস্ট খেলতে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে বাংলাদেশ দল। তিন বছর পর যে সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে তার প্রস্তুতি বাংলাদেশ একটু আগেভাগেই শুরু করলো। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিট তিন ফরম্যাটে ম্যাচ খেলতে ১৩ জুলাই অস্ট্রেলিয়া যাবে।

বিসিবি এই দলের সঙ্গে জাতীয় টেস্ট দলের একাধিক ক্রিকেটারকে যুক্ত করেছে। ভবিষ্যতের চিন্তায় তাদেরকে যুক্ত করার কথা বললেন বিসিবির নির্বাচক হান্নান সরকার, ‘অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন ফরম্যাটে খেলা অনেক চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। সেই জায়গা থেকে এই খেলোয়াড়রা সেই অভিজ্ঞতা পেতে যাচ্ছে।  লক্ষ্য করলে দেখবেন এই সফরে এইচপির খেলোয়াড়দের পাশাপাশি বাংলাদেশ টাইগার্স এবং জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের যুক্ত করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি, ২০২৭ সালে এফটিপিতে অস্ট্রেলিয়া সফর রয়েছে। সেই জায়গা থেকে এটা বিরাট একটা সুযোগ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলতে যাচ্ছি । তারা অনেক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হবে। মাঠ, ড্রেসিংরুম, কন্ডিশন সব জায়গায়।’

‘অস্ট্রেলিয়া সফর বাংলাদেশ ক্রিকেটের যে কোনো পর্যায়ের জন্যই বড় সফর বলতে হয়। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অনেক দিন ধরে অস্ট্রেলিয়াতে খেলার সুযোগ হচ্ছে না। সাথে অনেক দিন ধরে অন্য স্টেজের দলগুলোও কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে খেলার সুযোগ হচ্ছে না। সেই জায়গা থেকে এটা একটা বিরাট সুযোগ। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি, এ সফরে আমরা তিন ফরম্যাটে খেলার সুযোগ পাচ্ছি। এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হতে পারে না।’ - বলেছেন হান্নান।

সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত হোসেন দিপুকে এই সফরে পাঠাচ্ছে বিসিবি। তারা খেলবেন চারদিনের ম্যাচ। তাদের সঙ্গে আছেন আফিফ হোসেন, পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান তামিম। তারা খেলবেন বাকি দুই ফরম্যাটে।

প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ক্রিকেট খেলে ছেলেরা অভিজ্ঞতা অর্জন করবে বলে বিশ্বাস হান্নান সরকারের, ‘চারদিনের ম্যাচে বেশ কিছু টেস্ট খেলোয়াড় রয়েছে। যেহেতু ২০২৭ সালে টেস্ট রয়েছে এফটিপিতে, সেই জায়গা থেকে কিছু কিছু জায়গায় খেলোয়াড়দের প্রায়োরিটি দেয়ার চেষ্টা করেছি। লংগার ভার্সন মুডে যাদেরকে আমরা এই মুহূর্তে চিন্তা করছি, তারা একটি প্রক্রিয়ায় আছে তাদেরকেই এখানে পাঠানো হচ্ছে।’

‘ঠিক একইভাবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি যে ফমর‌্যাট সাদা বল, সেখানে আমাদের সাদা বলের ক্রিকেটে যাদেরকে প্রায়োরিটি দেই, মূল ফোকাস এবং যাদেরকে ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখতে পারছি তাদেরকেই নিয়েছি। টি-টোয়েন্টিতে খুব ভালো একটি টুর্নামেন্ট দলটি খেলবে। যেখানে বিগ ব্যাশের দলগুলো খেলবে। পাকিস্তান দলও খেলবে। খুব ভালো একটি চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্টের প্রত্যাশা করছি।’

‘এটা গত বছরও হয়েছিল। আমরা প্রথমবার নিমন্ত্রণ পেয়েছি খেলার জন্য। দলটাও সেভাবে সাজানো হয়েছে। বর্তমান জাতীয় দলের খেলোয়াড় এবং ভবিষ্যতে যারা আসতে পারে তাদেরকে নেয়া হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে দারুণ। যেখানে খেলোয়াড়রা নিজেদেরকে ভিন্ন ফরম্যাটে নিজেদেরকে মেলে ধরতে পারবে।’ - যোগ করেন হান্নান।

শুধু অভিজ্ঞতা অর্জন এবং খেলার উন্নতির জন্য এই সফর নয়। হান্নান যোগ দিলেন ম্যাচের ফলাফলেও, ‘রেজাল্ট কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেটার করে। আমি বলবো এইচপি প্রোগ্রাম মানেই আমাদের ডেভেলাপমেন্ট প্রোগ্রাম। আপনি যখন এ ধরণের প্রতিযোগিতায় যাবেন তখন রেজাল্ট যদি ইতিবাচক দিগে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে আপনাকে ইতিবাচক মানসিকতা দেবে। এই দলের বেশ কিছু খেলোয়াড় রয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের। তাদের সেই ইতিবাচক মানসিকতা কিন্তু এই প্রতিযোগিতায় দেখা যাবে। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক আকবর। সে কিন্তু ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন ক্যাপ্টেন। এগুলোও কিন্তু এবার চিন্তা করা হয়েছে। উন্নতির পাশাপাশি যদি ফলটাকেও ইতিবাচক দিকে নিয়ে আসা যায় তাহলে এটা ভালো অভিজ্ঞতা হবে খেলোয়াড়দের জন্য। ডেভেলাপমেন্ট আমাদের মাথায় তো আছেই। পাশাপাশি রেজাল্ট যদি ইতিবাচক হয় তাহলে যেকোনো দল এবং দেশের জন্য ভালো হবে।’