ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) রাজস্ব বন্টন এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর প্রতি নজর বাড়াতে লম্বা সময় ধরে আলোচনা হচ্ছিল। বিশেষ করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, বিসিসিআই এবং ইসিবির দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল দেশগুলো। কিন্তু আইসিসির কিংবা বিগ থ্রি কান্ট্রির তেমন ভ্রুক্ষেপ পাওয়া যায়নি। বরং আর্থিকভাবে তারা কেবল লাভবানই হয়ে যাচ্ছিল। সেই জায়গা থেকে কিছুটা হলেও সরে আসার পথ খুঁজে নিচ্ছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।
২০২৫ সালে ইংল্যান্ডে দুই টেস্ট খেলতে যাবে জিম্বাবুয়ে। তাদেরকে সফর ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসিবি। ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গুল্ড এ খবর নিশ্চিত করেছেন। ইএসপিএন ক্রিকইনফো বলছে, আধুনিক যুগে প্রথম নজির গড়ে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটকে এই অর্থ দেবে ইসিবি।
একটা সময়ে সফরের ভাতা আয়োজক দেশ সফরকারী দেশকে দিয়ে আসতো। এই ধারা চালু ছিল লম্বা সময়। কিন্তু বিংশ শতাব্দীতে এই ধারা পাল্টে যায়। তাতে সফরকারী দেশগুলোর ওপর অর্থ খরচের চাপ বাড়তে থাকে। ইসিবি শুধুমাত্র জিম্বাবুয়ে দলকেই নয়, আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলির মধ্যে আয়ের অসমতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
স্কাই স্পোর্টসে মাইক আথারটনের সঙ্গে আলোচনায় গুল্ড বলেছেন, ‘এখানে প্রচুর দায়িত্ব রয়েছে। আপনি যদি আইসিসির রাজস্ব এবং দ্বিপক্ষীয় সিরিজে আয়োজক দেশগুলোর আয়ের দিকটি দেখেন দেখবেন পুরোনো রীতিতেই সব কিছু চলছে। উদাহরণ হিসেবেই দেখুন, আগামী বছর জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল ইংল্যান্ডে সফর করবে। স্বাভাবিকভাবেই তারা এখানে যখন আসবে আমরা কেবল তাদের থাকার বিষয়টিই দেখবো। বাকিটা তাদের। সফরকারী দলকে কোনো ভাতা দেওয়া হবে না। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জিম্বাবুয়ে যখন আমাদের এখানে খেলতে আসবে আমরা তাদেরকে সফর ভাতা দেবো।’
স্বাগতিক বোর্ড হওয়ার সুবাদে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে আয়ের অনেক পথ থাকে। স্পন্সর, টিকিট বিক্রি থেকে আয়, বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য। সব কিছুই পেয়ে থাকে বোর্ড। অন্যদিকে সফরকারী বোর্ডের কেবল খরচ। খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বাদে তাদের আসা-যাওয়ার ব্যবস্থাও করতে হয়। সফরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে কেবল আয়োজক হলেই লাভ। সফরে গেলে খরচ। এই রীতি কমিয়ে আনার পক্ষে ইসিবি। এজন্য নিজেদের আয় থেকে জিম্বাবুয়েকে সফর ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করছে তারা।
তবে এটা যে কেবল আর্থিক দিক থেকেই ভারসাম্য করা হবে তেমনটা নয়। জাতীয় দল বাদে অনান্য দলগুলোর সফর আয়োজন করাও অন্যতম একটি উপায় হতে পারে। গুল্ড বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষ থেকে অনুরোধ এসেছিল, তারা তাদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ইংল্যান্ডে পাঠাতে চায়। যেন তাদের তরুণ ক্রিকেটাররা ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে লাল বলের ক্রিকেটে অভ্যস্ত হয়। আমরা তাদেরকে হোস্ট করলে সব কিছু আমাদের পক্ষে থাকে। কাজেই সবসময় আর্থিক সহায়তাই জরুরি নয়। অন্য অনেক পথই আছে।’