খেলাধুলা

জোড়া সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের রান পাহাড়, আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং বাংলাদেশেরও

পাকিস্তানের রান ছুট চললো সারাদিন। রাওয়ালপিন্ডিতে বল হাতে নিষ্প্রাণ দিন কাটালো বাংলাদেশ। উইকেট এমনই, ভুল না করলে আউট হওয়া কঠিন। বল নতুন থাকতেই পেসাররা কার্যকরী। পুরোনো হলে কমে যায় তেজ। ওই সুযোগটিই নিলেন পাকিস্তানের দুই ব্যাটসম্যান সৌদ শাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।

আগের দিনের ৪৪ রানের অপরাজিত জুটির সঙ্গে আজ যোগ করলেন আরও ১৯৬ রান। সব মিলিয়ে ২৪০ রানের জুটিতে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের রান পাহাড় সমান। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে পাকিস্তান ইনিংস ঘোষণা করে তখন রিজওয়ান ১৭১ রানে অপরাজিত। আরেক সেঞ্চুরিয়ান সৌদ ১৪১ রানে ফেরেন সাজঘরে।

জবাব দিতে নেমে রাওয়ালপিন্ডিতে শেষ বিকেল ১২ ওভার খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম ২৭ রান করে বুক ভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে দিন শেষ করেছেন। প্রথম দিনটি বাংলাদেশের নামে লিখা থাকলেও দ্বিতীয় দিনটা পাকিস্তান নিজেদের করে নিয়েছে। 

পাকিস্তানকে দুইশ’র আশেপাশে আটকে রাখার ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশের। আগের দিন ২ উইকেট নেওয়া পেসার হাসান মাহমুদ জানিয়েছিলেন দলের পরিকল্পনা। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের সকালে ওই পরিকল্পনার ছিঁটেফোটাও দেখা মেলেনি। বিবর্ণ বোলিংয়ে সহজেই রান তুলেছেন ব্যাটসম্যানরা। শরিফুল ও হাসান আগের দিনের মতো লেন্থ খুঁজে পাননি। আরেক পেসার নাহিদ রানা ছিলেন খরুচে। পুরোনো বলে কার্যকারীতা হারিয়ে একেবারেই নির্বিষ ছিল বোলিং আক্রমণ। সোয়া দুই ঘণ্টার প্রথম সেশনে তাই উইকেটের স্বাদ পাওয়া হয়নি।

দুই ব্যাটসম্যান রিজওয়ান ও সৌদ অনায়েসে ব্যাটিং করে তিন অঙ্কের কাছাকাছি চলে যান। দ্বিতীয় সেশনেই ল্যান্ডমার্কে পৌঁছে যান তারা। সাকিবকে এক ওভারে ছক্কা ও চার উড়িয়ে ১৭ ইনিংস পর সেঞ্চুরি তুলে নেন রিজওয়ান। যা তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। অপরপ্রান্তে ধীরস্থির হয়ে আগানো সৌদও পেয়েছেন তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা। এ বছর যা তার প্রথম সেঞ্চুরি।

নতুন বল নেওয়ার আগে এ জুটি ভাঙবে না বোঝাই যাচ্ছিল। তা-ই হয়েছে। তবে পেসার নয় এই জুটি ভাঙেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বল ফরোয়ার্ড ড্রাইভ করতে গিয়ে স্টাম্পড হন ১৪১ রান করা সৌদ। ২৬১ বল খেলে ৯ বাউন্ডারিতে ইনিংসটি সাজান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। নতুন ব্যাটসম্যান আগা সালমানেরও উইকেট নেন আরেক স্পিনার সাকিব। টার্নের বিপক্ষে বড় শট খেলতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন সালমান।

রিজওয়ান তখন আফ্রিদিকে নিয়ে উইকেটে। ফ্রি লাইসেন্সে খেলার অনুমতি পেয়ে দুজনই চড়াও হয়ে খেলেন। চোখের পলকে দুজন তুলে নেন জুটির পঞ্চাশ রান। পায়ে ক্র্যাম্প হওয়ায় ছটফট করছিলেন রিজওয়ান। মাঠ থেকে উঠে যেতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ইনিংস ঘোষণা করায় নতুন ব্যাটসম্যান নামার প্রয়োজন হয়নি। রিজওয়ান ২৩৯ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় সাজান ১৭১ রানের ইনিংস। আফ্রিদি ২৪ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন। 

বাংলাদেশের বোলারদের হয়ে হাসান ও শরিফুল ২টি করে উইকেট নেন। মিরাজ ও সাকিবের পকেটে গেছে ১টি করে উইকেট। নাহিদ ১৯ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১০৫ রান খরচ করলেও উইকেটের দেখা পায়নি।

জবাব দিতে নেমে জাকির ও সাদমান আত্মবিশ্বাসী শুরু পেয়েছেন। রক্ষণাত্মক ক্রিকেটে এগিয়েছেন তারা। পাকিস্তানের বোলাররা নতুন বলে তেমন কিছু করতে পারেননি। দেখার বিষয় পিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিন কেমন যায়। দ্বিতীয় দিনে রান হয়েছে বেশ। প্রথম সেশনে ২৯ ওভারে ৯৮। দ্বিতীয় সেশনে ২৮ ওভারে ১১১ ও শেষ সেশনে ২৭ সেশনে ১০৮। তৃতীয় দিনে উইকেট আরও সতেজ থাকবে। শুরুর ঘণ্টা ভালোভাবে কাটিয়ে দিতে পারলে পরে ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ হওয়ার কথা।