খেলাধুলা

মুশফিক-লিটনে বাংলাদেশের সুন্দর বিকেল

টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিং মানেই মন খারাপের গল্প। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে দেখা গেল ভিন্ন দিন। প্রশংসা কুড়িয়ে নেওয়ার মতো ব্যাটিং করলেন সাদমান ইসলাম-মুশফিকুর রহিমরা। প্রতিপক্ষকে ক্লান্ত-শ্রান্ত-বিরক্ত করে পরে পাল্টা আঘাত হানা! এ যেন মৌমাছির মতো ঘুরে ঘুরে হুল ফোঁটানো। 

এমন দিনে চার ফিফটিতে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম ইনিংসে তৃতীয় দিনটি নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ। শুক্রবার দিন শেষ করে তারা ৫ উইকেটে ৩১৬ রান নিয়ে। এখনো পিছিয়ে ১৩২ রানে। তবে ক্রিজে সেট হয়ে গেছেন দুই ব্যাটার মুশফিক ও লিটন দাস। তাদের ব্যাট আশা দেখাচ্ছে দলকে।

দিনের লড়াইটা শুরু করেন সাদমান ইসলাম। প্রায় আড়াই বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে ৯৩ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ১৮৩ বলের ইনিংসে ১২টি চার মারেন তিনি। তার সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন মুমিনুল হক। ফেরেন ঠিক ৫০ রানে। এরপর দিন শেষে মুশফিকের ৫৫ ও লিটনের ৫২ রান তৃপ্তির পরশ বইয়ে দিয়েছে।

দিনের শুরুতে ১২ রানে বিদায় নেন জাকির হাসান। নাসিম শাহর বলে উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এরপর সাদমান ও নাজমুল হোসেন শান্ত লড়াই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শান্ত টিকতে পারেননি। খুররাম শাহজাদের রাউন্ড দা উইকেটে করা দুর্দান্ত ডেলিভারি বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে ছোবল দেয় স্টাম্পে।

মুমিনুল হক ক্রিজে গিয়ে শুরু করেন স্বচ্ছন্দ্যে। তাকে সঙ্গ দেন সাদমান। জমে ওঠে জুটি। তাতে লাঞ্চের আগে আর উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। লাঞ্চের ঠিক আগের বলে নাসিম শাহর শর্ট ডেলিভারিতে পুল করে বাউন্ডারি মেরে সাদমান পা রাখেন ফিফটিতে। এরপর ফিফটি তুলে নেন মুমিনুল।

৭৫ বলে ফিফটি ছুঁয়ে পরক্ষণেই শাহজাদের ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হন মুমিনুল। ভাঙে ৯৪ রানের জুটি। সাদমান এগিয়ে যাচ্ছিলেন শতরানের দিকে। আরেকটি অর্ধশত রানের জুটি গড়েন তিনি মুশফিকের সঙ্গে। তবে চা বিরতির ঠিক আগে সাদমানকে ফিরতে হয় হতাশ হয়ে। তিনিও ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন।

সাকিব আল হাসানের শুরুটা সাবলীল হলেও টিকতে পারেননি। তার আউট ছিল খুবই বাজে। অনিয়মিত বোলার সাইম আইয়ুবের অনেক বাইরের বলে খোঁচা মেরে কাভারে সহজ ক্যাচ তুলে দেন। বাকি গল্পটা মুশফিক ও লিটনের। লিটন শুরুতে একটু অস্বস্তিতে থাকলেও থিতু হওয়ার পর আর পাত্তা দেননি কাউকে।

শেষ বিকেলে ব্যাট হাতে তলোয়ার চালান লিটন। বিশেষ করে নাসিম শাহর এক ওভারেই তার ১৮ রান তুলে নেওয়া দেখার মতো ছিল। প্রথম বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে দৃষ্টিনন্দন লফটেড শটে চার মারেন তিনি। এরপর লং লেগ ও স্কয়ার লেগ দিয়ে আরও দুটি চার। এরপর হুক করে ছক্কায় বল পাঠিয়ে দেন স্টেডিয়ামের বাইরে। 

লিটনের ফিফটি আসে ৫২ বলে। ৮ চার ও ১ ছক্কায়। আরেকপ্রান্তে আফ্রিদির তিন বলের মধ্যে দুটি বাউন্ডারিতে মুশফিক ফিফটি করেন ১০৪ বলে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৫ হাজার রানও ছুঁয়ে ফেলেব মুশফিক। দিনের বাকি সময়টাও নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন দুজন।