হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানার মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছিল। ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফারের হাতছানি ছিল দুই ডানহাতি পেসারের। ৪ উইকেট দুজনের পকেটেই। পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামানো এই দুই পেসারেরকে পাবেন প্রথম পাঁচের স্বাদ।
চেষ্টা করলেন দুজনই। সালমান আগা ও মীর হামজাকে ফেরানোর চেষ্টায় নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সঙ্গে ভ্যারিয়েশন আনলেন। শেষ পর্যন্ত হাসান মাহমুদের পকেটেই গেল পাকিস্তানের দশম উইকেট। তাতে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেন। ১৭২ রানে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট করে রাওয়ালপিন্ডিতে ১৮৫ রানের লক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ।
হাসানের ৫, নাহিদের ৪। তাসকিন আহমেদ পেয়েছেন অপর উইকেট। পেস ত্রয়ী পেলেন ১০ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে এবারই প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট পেলেন পেসাররা।
২২ গজে হাত ঘুরিয়েছেন সাকিব ও মিরাজ। দুই স্পিনার উইকেট না পেলেও আঁটসাঁট বোলিংয়ে চেপে রেখেছিলেন ব্যাটসম্যানদের। তাতে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের রানের ফুলঝুরি ছোটেনি।
এদিকে পাঁচ উইকেট নিয়ে এক কীর্তি গড়েছেন হাসান। বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে পাকিস্তানের মাটিতে পাঁচ উইকেট পেলেন হাসান। এর আগে কেবল মোহাম্মদ রফিকই পেয়েছেন পাঁচ উইকেট। এই টেস্টেই প্রথম ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজ তার পাশে বসেছিলেন। হাসান ফাইফারের স্বাদ নিয়ে রেকর্ডের পাতায় নতুন অধ্যায় যুক্ত করলেন।
গতকাল তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে দুই উইকেট নিয়ে এগিয়ে ছিলেন হাসান। আজ তার পকেটে যায় আরও দুই উইকেট। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে সাজঘরে ফেরত পাঠান। অফস্টাম্পের বাইরে দারুণ এক আউট সুইংয়ে রিজওয়ানকে খেলতে বাধ্য করান। তার ব্যাটে চুমু খেয়ে বল যায় উইকেটের পেছনে। নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আলীকে পরের বলে কোনো সুযোগই দেননি। চতুর্থ স্টাম্প বরাবর বোলিং করে উইকেটের পেছনে প্রথম স্লিপে তালুবন্দি করান। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেও সালমান আগা হতে দেননি। তাতে প্রথম ফাইফারের অপেক্ষা দীর্ঘ হতে থাকে।
ওদিকে নাহিদ রানা দিনের শুরুতে আগুনে বোলিং করে এক স্পেলে ফেরান শান মাসুদ, বাবর আহমদ ও সৌদ শাকিলকে। পরপর তিন ওভারে তিন উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ভেঙে দেন। এরপর শেষ দিকে আবরার আহমেদের উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং উপহার দেন। ফাইফারের লড়াইয়ে থাকা এই পেসার শেষ পর্যন্ত ৪৪ রানে পেয়েছেন ৪ উইকেট। মাঝে সকালের সেশনে তাসকিনের পকেটে যায় সায়েম আইয়ুবের উইকেট।
পেস ত্রয়ীর দারুণ বোলিংয়ে দ্বিতীয় টেস্টও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ সিরিজ জিততে পারে কিনা দেখার।