বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টেস্ট কেন দেখতে হবে এমন আলোচনা চলছিল সম্প্রচার চ্যানেলে। তিন কারণ বলা হচ্ছিল, তিনটিই ভারতীয় ক্রিকেট কেন্দ্রিক। এ সময় তামিম ইকবাল চতুর্থ কারণ বললেন, ‘এটি হতে পারে সাকিবের শেষ ম্যাচ। দেশে যদি যেতে না পারে তাহলে বিদেশের মাটিতে হবে শেষ টেস্ট।’
নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে দেশে যাওয়ার শর্ত, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্টের বক্তব্য; সব মিলিয়ে কানপুর টেস্ট সম্ভবত সাকিব আল হাসানের শেষ টেস্ট ম্যাচ হতে যাচ্ছে। বিশ্বকাপে টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানিয়েছেন, ঘরের মাঠে টেস্ট থেকে বিদায় নিতে চাইলেও সেটি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের শেষের শুরুটা হয়ে গেলো। গতকাল রাতে বোর্ড মিটিং শেষে কানপুরে সাকিবের শেষ ম্যাচ কী না -এমন প্রশ্নে ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘মনে হয় হ্যাঁ, যদি সে খেলে।’
সাকিবকে নিয়েই ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। সাকিবও গতকাল পরিষ্কার করে দিয়েছেন, ‘দেখুন, এখন পর্যন্ত আমি তো অ্যাভেইলেবল। দেশে যেহেতু অনেক পরিস্থিতি আছে, সবকিছু অবশ্যই আমার ওপরে না। আমি বিসিবির সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে আমার কি পরিকল্পনা। এই সিরিজ আর হোম সিরিজটা আমি অনুভব করেছিলাম আমার শেষ সিরিজ হবে, টেস্ট ক্রিকেটে বিশেষ করে।’
‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোন সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব’-আরও যোগ করেন সাকিব।
তার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নে বিসিবি প্রেসিডেন্ট বলেছেন দায়িত্ব নেবে না বোর্ড, ‘আমি কোনো এজেন্সি না, পুলিশ বা র্যাব না। কিংবা বিসিবিও এখানে কেউ না। সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তার বিষয়টা আসতে হবে। নিরাপত্তাটা দুই রকম। একটা হচ্ছে- ক্লিয়ারিং ফ্রম (দেশ ছাড়ার)। এটা হয়তো আপনাদের বলেছে। আরেকটা হলো, দর্শকদের থেকে নিরাপত্তা। এটা আসলে তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা এখানে পার্ট হতে পারব না। এই মুহূর্তে বোর্ড থেকে এ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব না। বোর্ড ব্যক্তিগতভাবে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না। সেই এবিলিটিও নেই।’
সবকিছু মেলালে কানপুরেই থামছে সাকিবের সাদা পোশাকের জার্নি। সাকিব এখন পর্যন্ত ৭০টি টেস্ট খেলেছেন। ব্যাট হাতে করেছেন ৪ হাজার ৬০০ রান। বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। ব্যাটিং গড় ৩৮.৩৩। সেঞ্চুরি ৫টি ও হাফসেঞ্চুরি ৩১টি। বল হাতে সমান টেস্টে নিয়েছেন ২৪২ উইকেট। বোলিং গড় ৩১.৮৫। ১০ উইকেটে ২ বার, ৫ উইকেট ১৯ বার ও ৪ উইকেট নিয়েছেন ১০ বার।
টি-টোয়েন্টি শেষ, টেস্ট শেষের পথে বাকি রইল ওয়ানডে। ২০২৫ সালের শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হবে সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতি। সবমিলিয়ে তাকে আর ৯ ম্যাচে দেখা যেতে পারে লাল-সবুজের জার্সিতে।