খেলাধুলা

চিপকের বুকে দাঁড়িয়ে যে আভিজাত্য, চাইলেই যেতে পারেন না কোহলিরাও

দিনের আলো নিভতেই বন্ধ হয়ে যায় চিপকের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের সব আলো। চিপকের সবকিছু যখন বন্ধের পথে তখন জেগে ওঠে তারই আঙিনায় থাকা একটি বিশেষ বিল্ডিং! যার নাম মাদরাজ ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। 

চিপকের আঙিনা বললে একপ্রকার ভুল হবে। এই এমসিসি থেকেই তো সৃষ্টি চেন্নাইয়ের দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়ামটির। প্রেসবক্সের ঠিক উল্টোপাশে, ড্রেসিংরুম লাগোয়া ভবনে এমসিসির অবস্থান। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ভারতের স্বাধীন হওয়ার এক বছর আগে, ১৮৪৬ সালে। বয়স ১৭৮ বছর!

ক্লাবটির রয়েছে বর্ণিল ইতিহাস। ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির কোনো নিজস্ব মাঠ ছিল না। এখন যে চিপক স্টেডিয়ামকে ধারণ করে সেটিও ছিল না প্রথম পছন্দ। প্রথম প্যাভিলিয়ন তৈরি হয় ১৮৯২ সালে। ১৯২৭ সালে তৈরি করা হয় ক্লাবের অফিস, যেটি এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। 

ক্লাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত অবকাঠামোগত নানা পরিবর্তন হয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। ক্রিকেট ক্লাব নাম হলেও এখানে সদস্যদের জন্য স্কোয়াশ থেকে সুইমিং, হকি থেকে টেনিস সবকিছুর ব্যবস্থা আছে।

তামিলনাডু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (টিএনসিএ) পরিচালিত চিপকে থাকা এমসিসি সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত। একই জায়গায় দুটোর অবস্থান হলেও দুটোর রয়েছে নানা অমিল। এমসিসির সদস্যরা যেমন চিপকের সব সুবিধাভোগ করতে পারেন, তেমনভাবে এমসিসিতে প্রবেশও করতে পারেন না টিএনসিএ-র সদস্য কিংবা কোনো কর্তা। 

টিএনসিএর এক কর্তা এমসিসির কথা বলতে গিয়ে জানান, এটি সম্পূর্ণ অভিজাতদের জন্য। সকলের প্রবেশ মানা। এমনকি কোনো ক্রিকেটারও চাইলে হুট করে প্রবেশ করতে পারেন না। তার কথায় যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল তা স্পষ্ট।

বর্তমানে এমসিসির এক ছাদের নিচে রয়েছে আধুনিক সব সুবিধা। আছে নানা ধরণের খেলার সুবিধা। থাকার জন্য রয়েছে চেম্বার! শারীরিক কসরতের জন্য জিমনেশিয়াম, পানাহারের জন্য আধুনিক বার, বই পড়ে সময় কাটানোর জন্য আছে লাইব্রেরিও! কিন্তু এসব শুধু সদস্যদের জন্য।

অনেক ধনী হলেও এই ক্লাবের সদস্য হতে পারেন না। প্রধান শর্ত এই ক্লাবের হয়ে খেলা। এ ছাড়া কিছু অবৈতনিক সদস্যপদও রয়েছে। ভারতীয় দলে একমাত্র রবীচন্দ্রন অশ্বিনের সদস্যপদ রয়েছে। বর্তমান দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের প্রবেশ করতে হলেও নিতে হবে অনুমতি!

চারতলা বিশিষ্ট ক্লাবের উপরের অংশে গ্যালারি। সবমিলিয়ে চিপক স্টেডিয়ামের আঙিনায় এমসিসি যেন আলাদা এক বসতি। ব্রিটিশ আমলে স্যার আলেকজেন্ডার আরবুটনট ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজয়কুমার।