বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পরবর্তী আসরের কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, বিপিএলের এবারের আসরের ড্রাফট হবে আগামী ১৪ অক্টোবর এবং পূর্ব নির্ধারিত ২৭ ডিসেম্বর থেকে টুর্নামেন্ট শুরু হবে। সঙ্গে সাত দল নিয়ে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে সেটাও জানিয়েছিলেন। এরপর কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
সেই রোডম্যাপ নির্ধারণে বিসিবি অংশগ্রহণকারী সাত ফ্রাঞ্চাইজিদের প্রতিনিধি নিয়ে আলোচনায় বসেছিল। যেখানে পুরনো চার দল- রংপুর, খুলনা, সিলেট ও বরিশালের সঙ্গে নতুন তিন দল ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার নতুন মালিকানা পেয়েছে রিমার্ক হারল্যান। প্রথম দুই আসরে চট্টগ্রামের দল চালিয়েছিল এসকিউ স্পোর্টস। তারা আবার ফিরেছে। এছাড়া রাজশাহীর মালিকানা কিনে রূপা গ্রুপ।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে এই আলোচনায় বসার মূল কারণ, সাত ফ্রাঞ্চাইজিদের একসঙ্গে বসিয়ে তাদের দাবি দেওয়া জানতে পারা। ১৪ অক্টোবর প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে। ড্রাফটের আগেই প্লেয়ার্স রিটেনশন, অ্যাভেইলেভিলিটি, ডিরেক্ট সাইনিং, গ্রেডিং পলিসি চূড়ান্ত করাই ছিল আলোচনার মূল লক্ষ্য। এর মধ্যে গ্রেডিং পলিসি ঠিক করার কাজ করছেন জাতীয় নির্বাচক কমিটি। এছাড়া বাকি কাজ বিপিএলের আয়োজক বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল করছে।
আজকের বৈঠকে খেলোয়াড়দের রিটেনশন পলিসি ও ডিরেক্টর সাইনিং নিয়ে আলোচনা হয়েছে বেশি। এক্ষেত্রে তুলনামূলক এগিয়ে থাকা দল নিজেদের খেলোয়াড় ধরে রাখতে সর্বোচ্চ তিনজন রিটেনশন চেয়েছে। কেউ কেউ আবার এই রিটেনশন পলিসি একজন করার প্রস্তাব দিয়েছে।
এছাড়া স্থানীয় ক্রিকেটারদের ডিরেক্ট সাইনিংয়ে দুজন নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। বিদেশিদের থেকে কোনো বাধা না দেওয়ার সুপারিশ এসেছে। মোদ্দাকথা, ফ্রাঞ্চাইজিরা নিজেদের মতো করে দাবি গুলো তুলে ধরেছেন। বিসিবিও নিজেদের ইনপুট দিয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যেই এসব গাইডলাইন এবং রোডম্যাপ চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
আলোচনা শেষে বেরিয়ে রিমার্ক হ্যারলানের প্রতিনিধি ও ঢাকা দলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আতিক ফাহাদ বলেছেন, ‘বিসিবি ইনিশিয়ালি চিন্তা করেছিল যারা পুরোনো দল আছে দুজন খেলোয়াড় রিটেইন করতে পারবে। একজন ডিরেক্ট সাইনিং করতে পারবে। আমাদের যাদের নতুন দল তারা তিনজন ডিরেক্ট সাইনিংয়ের কথা বলেছে। এখন অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজিরা এতে কিছুটা অবজেকশন দিয়েছে। সে কারণে এখনও কোনো গাইডলাইন চূড়ান্ত হয়নি।’
এদিকে রংপুর রাইডার্সের টিম ডিরেক্টর শাহনিয়ান তানিম বলেছেন, ‘অবশ্যই পুরোনো ফ্রাঞ্চাইজি আর নতুন ফ্রাঞ্চাইজিদের মধ্যে কিছু চাওয়া পাওয়া থাকবে। সেই চাওয়া পাওয়াগুলো আমরা তাদের জানিয়েছি। তারা খুব ভালোভাবে এটা গ্রহণ করেছে এবং এক-দুই দিনের মধ্যে যে ফাইনাল নিয়ম কি হওয়া উচিত, ডিরেক্টর সাইনিং কতটা সেটাও চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’
রংপুরের দাবি, ‘যদি নতুন দলগুলোকে আমাদের সমান ডিরেক্ট সাইনিং দেওয়া হয় তাহলে আমাদেরকেও ডিরেক্ট সাইনিং দেওয়া উচিত। বড় আকারের কথা বলছি, ডিরেক্টর সাইনিং তাহলে সবাইকেই দেওয়া হোক। আবার রিটেইন সরিয়েও দেয়া যায়। কারণ যারা নতুন আসছে তাদের তো রিটেইন করার কিছু নেই। যেটাই হোক সবার জন্য যেন সুবিধা হয়, একই নিয়মে হয় সেটাই আমরা চাচ্ছি।’
এছাড়া বিদেশি খেলোয়াড়ের ডিরেক্ট সাইনিং নিয়ে রিমার্ক হ্যারল্যানের প্রতিনিধি ইমরান হাসান বলেছেন,‘বিদেশি খেলোয়াড়দের ডিরেক্ট সাইনিংয়ে যেটা হয়েছে, আমরা আমাদের মতো করে পছন্দ করতে পারব। এখন পর্যন্ত যে আলোচনা চারজন করে নিতে পারব। এছাড়া ড্রাফট থেকে অ্যাভেইলেভেটির ওপর নির্ভর করবে আমাদের কতজন বিদেশি প্রয়োজন।’
বিপিএলের কাছাকাছি সময়ে একাধিক ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজনের সূচি রয়েছে। সেজন্য ভালোমানের বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়া নিয়ে সব সময়ই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এজন্য ডিরেক্টর সাইনিংয়ে কোনো ব্যারিয়ার চায় না ফ্রাঞ্চাইজিরা। তাতে সুবিধা হলো, কাউকে এক-দুই ম্যাচের জন্য পাওয়া গেলেও ভালো।
প্লেয়ার্স ড্রাফট ৮ দিন পর। অথচ এখনও চূড়ান্ত হয়নি রোডহ্যাপ। এবারও কী তাহলে হ-য-ব-র-ল টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে বিসিবি? প্রশ্নটা আজই তোলা হয়ে গেছে মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে।