খেলাধুলা

১৩৩ রানের হারে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ

::সংক্ষিপ্ত স্কোর:: ভারত: ২৯৭/৬ (২০ ওভারে) বাংলাদেশ: ১৬৪/৭ (২০ ওভারে) ফল: ভারত ১৩৩ রানে জয়ী সিরিজ: ভারত ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।

ভারতের করা রেকর্ড ২৯৭ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে থামলো ১৬৪ রানে। ১৩৩ রানের বিশাল হারে তিন ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। যা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার।

বাংলাদেশের হয়ে তাওহীদ হৃদয় ৪২ বলে ৫টি চার ও ৩ ছক্কায় ৬৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। যা তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। লিটন দাস ২৫ বলে ৮ চারে করেন ৪২ রান। এছাড়া তানজিদ হাসান তামিম ১৫ ও নাজমুল হোসেন শান্ত করেন ১৪ রান। বাকিদের কেউ দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেনি।

বল হাতে ভারতের রবি বিষ্ণোই ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ৩০ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। মায়াঙ্ক যাদব ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট।

তার আগে সঞ্জু স্যামসনের ১১১, সূর্যকুমার যাদবের ৭৫, হার্দিক পান্ডিয়ার ৪৭ ও রিয়ান পরাগের ৩৪ রানের ইনিংসে ভর করে ভারত ৬ উইকেট হারিয়ে রেকর্ড ২৯৭ রান তোলে। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

বল হাতে বাংলাদেশের তানজিম হাসান সাকিব ৪ ওভারে ৬৬ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

হৃদয়ের ফিফটিতে বাংলাদেশ ১৫০: তাওহীদ হৃদয় তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নিলেন। ৩৫ বলে ৩টি চার ও ৩ ছক্কায় ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। তার ফিফটিতে ভর করে ১৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ বেড়ে হয় ৭ উইকেটে ১৫০।

সপ্তম উইকেটের পতন: দলীয় ১৩৯ রানের সময় আরও একটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার ফিরে যান রিশাদ হোসেন। ৪ বল খেলে কোনো রান না করেই রবি বিষ্ণোইর তৃতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি।

ষষ্ঠ উইকেটের পতন: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফেরার ৮ রানের মাথায় অর্থাৎ ১৩৮ রানের সময় আউট হন মাহেদী হাসানও। ৯ বল খেলে ৩ রান করে নিতিশ কুমার রেড্ডির শিকারে পরিণত হন তিনি।

বিদায়ী ম্যাচে ৮ রান করে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ: ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ বল খেলে ১ চারে ৮ রান করে আউট হলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মায়াঙ্ক যাদবের বলে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে রিয়ান পরাগের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। বাংলাদেশের দলীয় রান ছিল তখন ১৪.২ ওভারে ১৩০।

বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটের পতন: দলীয় ১১২ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এ সময় লিটন দাস রবি বিষ্ণোইকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের সামনে বদলি ফিল্ডার তিলক ভার্মার হাতে ধরা পড়েন। ২৫ বল খেলে ৮টি চারে ৪২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

বাংলাদেশের তৃতীয় উইকেটের পতন: দলীয় ৫৯ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারালো বাংলাদেশ। রবি বিষ্ণোইর বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন শান্ত। ১১ বলে ১টি চার ও ১ ছক্কায় ১৪ রান করেন তিনি। লিটনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নতুন ব্যাটসম্যান তাওহীদ হৃদয়।

দ্বিতীয় উইকেট হারালো বাংলাদেশ: দলীয় ৩৫ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে শর্ট থার্ডম্যানে বরুণ চক্রবর্তীর তালুবন্দি হয়ে ফিরেন তানজিদ হাসান তামিম। ১২ বলে ৩ চারে ১৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। অধিনায়ক শান্তর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন লিটন দাস।

শূন্যরানেই উইকেট হারালো বাংলাদেশ: ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারালো বাংলাদেশ। মায়াঙ্ক যাদবের করা প্রথম বলেই প্রথম স্লিপে রিয়ান পরাগের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন পারভেজ হোসেন ইমন। গোল্ডেন ডাক মেরে ফিরেন তিনি।

বাংলাদেশকে লজ্জায় ডুবিয়ে ভারত করলো রেকর্ড ২৯৭ রান: বাংলাদেশকে লজ্জায় ডুবিয়ে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ভারত রেকর্ড ২৯৭ রান করেছে ৬ উইকেটে। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তান করেছিল ২৭৮ রান। সেটাকে পেছনে ফেলে ভারত আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে করলো ২৯৫ রান। অল্পের জন্য ২০২৩ এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের করা ৩১৪ রানের রেকর্ড ভাঙতে পারেনি ভারত।

রেকর্ড রানের সামনে দাঁড়িয়ে চতুর্থ উইকেট হারালো ভারত: দলীয় ২৭৬ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারালো ভারত। তাসকিন আহমেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে ফিরে গেছেন রিয়ান পরাগ। যাওয়ার আগে মাত্র ১৩ বলে ১টি চার ও ৪ ছক্কায় ৩৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে যান। ২৬১.৫৩ ছিল তার স্ট্রাইক রেট। টি-টোয়েন্টিতে টেস্ট খেলুড়ে দলের করা সর্বোচ্চ দলীয় রান ২৭৮। সেটা ছাড়িয়ে যেতে মাত্র ৩ রান প্রয়োজন ভারতের।

১৬.৪ ওভারে ভারত ২৫১: ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৬.৪ ওভারেই ২৫১ রান পেরিয়ে যায় ভারত। স্যামসন ১১১, সূর্যকুমার ৭৫ রান করে আউট হওয়ার পর ব্যাট হাতে ঝড় তুলছেন হার্দিক পান্ডিয়া ও রিয়ান পরাগ। মাত্র ১৯ বলে তারা দুজন দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৫২ রান।

সূর্যকুমারকে ফিরিয়ে স্বস্তি দিলেন মাহমুদউল্লাহ: দলীয় ২৩ রানের মাথায় অভিষেক শর্মার উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের ওপর জেকে বসেছিলেন সঞ্জু স্যামসন ও সূর্যকুমার যাদব। দ্বিতীয় উইকেটে তারা দুজন মাত্র ৭০ বলে দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ১৭৩ রান। এ যাত্রায় স্যামসন তুলে নেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ১৯৬ রানের মাথায় মোস্তাফিজের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি ১১১ রান করে যান।

এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এসে ফেরান সূর্যকুমারকে। দলীয় ২০৬ রানের মাথায় ৩৫ বলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় ৭৫ রান করে যান তিনি।

ঝড়ের গতিতে সেঞ্চুরি করা স্যামসনকে ফেরালেন মোস্তাফিজ: সঞ্জু স্যামসন যেন আজ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন। মাত্র ২২ বলে করেন ফিফটি। এরপর ৪০ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ৪৬ বলে ১১টি চার ও ৮ ছক্কায় করেছিলেন ১১১ রান। তাতে তাদের দলীয় রান হয়ে গিয়েছিল ১ উইকেটে ১৯৬, তাও আবার মাত্র ১৩.৩ ওভারে। এ সময় মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে মাহেদী হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।

সূর্যকুমারের সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছেন রিয়ান পরাগ।

দ্রুততম ফিফটির পর ৪০ বলে স্যামসনের সেঞ্চুরি: মাত্র ২২ বলে ৮টি চার ও ২ ছক্কায় ৫০ করেছিলেন সঞ্জু স্যামসন। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম ফিফটি। এরপর ৪০ বলে ৯টি চার ও ৮ ছক্কায় ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন। তার ও সূর্যকুমারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভারতের রান ফুলে-ফেপে উঠছে। ১৩ ওভারেই তাদের রান ছাড়িয়ে গেছে ১৯০।

সূর্য ৩১ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৬৬ ও স্যামসন ৪৪ বলে ১০টি চার ও ৮ ছক্কায় ১০৫ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।

১০ ওভারে ভারত ১৫২: ১০ ওভার শেষে ভারতের রান গিয়ে দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১৫২। ২৩ রানের মাথায় অভিষেকের উইকেট হারানোর পর স্যামসন ও সূর্যকুমার বাংলাদেশের বোলারদের পিটিয়ে তুলোধুনো করেন। মাত্র ৬০ বলে তোলেন ১৫২ রান। স্যামসন ৩৫ বলে ৮টি চার ও ৮ ছক্কায় ৯৩ রানে ও সূর্যকুমার ২১ বলে ৬টি চার ও ৩ ছক্কায় ৪৮ রানে ব্যাট করছেন।

৭.১ ওভারেই ১০০ পেরিয়ে গেল ভারত: ৭.১ ওভার অর্থাৎ ৪৩ বলেই ভারতের দলীয় রান ১০০ পেরিয়ে যায়। ৮.৩ ওভারে তাদের রান গিয়ে দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১১৯। স্যামসন ২৭ বলে ৮টি চার ও ৩ ছক্কায় ৬০ ও সূর্যকুমার ২০ বলে ৬টি চার ও ৩ ছক্কায় ৪৭ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাদের দুজনের সংগ্রহ ৯৬ রান মাত্র ৩৮ বলে।

পাওয়ার প্লে’তে ৮২ রান তুললো ভারত: টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২৩ রানে উইকেট হারালেও রানের চাকা সচল রয়েছে তাদের। ঝড়ো গতিতে রান তুলছেন স্যামসন ও সূর্যকুমার। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪.২ ওভারেই ৫০ পেরিয়ে যায়। আর পাওয়ার প্লেতে তোলে ৮২ রান। ৩৬ বলের মধ্যে ১৫টিতেই তারা চার-ছক্কা হাঁকিয়েছে। তার মধ্যে ওভার বাউন্ডারি ৪টি, আর বাউন্ডারি ১১টি।

স্যামসন মাত্র ১৯ বলে ৬টি চার ও ১ ছক্কায় ৩৭ ও সূর্যকুমার ১৩ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।

প্রথম বলেই উইকেট নিলেন তানজিম সাকিব: তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই উইকেট নিলেন তানজিম হাসান সাকিব। তার বলে অভিষেক শর্মা পুল শট খেলতে গিয়ে মিডউইকেটে মাহেদী হাসানের হাতে ধরা পড়েন। ৪ বলে ১ চারে ৪ রান করেন তিনি। সঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।

টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ: সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। হায়দরাবাদে ইতোমধ্যে টস হয়েছে। টস জিতেছেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। তিনি অবশ্য ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাংলাদেশ টস হেরে ফিল্ডিং করবে।

টস জিতলে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও অবশ্য ফিল্ডিং নিতেন। সেক্ষেত্রে টস হার তার জন্য কোনো ব্যাপার নয়। তিনি আশা করছেন আজ তার সতীর্থরা দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট হাতে নিজেদের প্রমাণ করতে পারবেন। আশা করছেন আজ পুরো ৪০ ওভারে তার দল বিশেষ কিছু করবে।বাংলাদেশ দলে আজ দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। একাদশে এসেছেন তানজিদ হাসান তামিম ও মাহেদী হাসান।

ভারত দলে আজ একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। আরশদীপ সিংয়ের পরিবর্তে একাদশে এসেছেন রবি বিষ্ণোই।

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটি সিরিজে ইতোমধ্যে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে ভারত। আজ বাংলাদেশ হারলে হোয়াইটওয়াশ হবে। সেটা এড়াতে পারে কিনা দেখার বিষয়।

বাংলাদেশের একাদশ: পারভেজ হোসেন ইমন, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, তৌহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মাহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম হাসান সাকিব।

ভারতের একাদশ: সঞ্জু স্যামসন (উইকেটরক্ষক), অভিষেক শর্মা, সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), নিতিশ কুমার রেড্ডি, হার্দিক পান্ডিয়া, রিয়ান পরাগ, রিংকু সিং, ওয়াশিংটন সুন্দর, বরুণ চক্রবর্তী, রবি বিষ্ণোই ও মায়াঙ্ক যাদব।