পাকিস্তানের ইতিহাস তো বটেই ক্রিকেটেরই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ধরা হয় বাবর আজমকে। তাকে সময়ের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহলির সঙ্গেও তুলনা করা হয়। অথচ সেই বাবর আজমকেই কী না বসে থাকতে হচ্ছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে। পাকিস্তানের নতুন নির্বাচক কমিটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো।
মুলতান টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ও ৪৭ রানে হারের পরপরই একত্রিত হয়ে আলোচনায় বসে নতুন নির্বাচক কমিটি। এরপর শনিবার (১২ অক্টোবর) তারা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির সঙ্গে আরেকবার আলোচনা বসে। সেখান নব-নিযুক্ত নির্বাচক কমিটির পাঁচ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
মুলতানে হারের পর অবশ্য বাবরকে আড়াল করে দাঁড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ। বাবরকে পাকিস্তানের সেরা ব্যাটার আখ্যা দিয়ে আরও সুযোগ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। একই কথা বলেছিলেন টেস্ট কোচ জেসন গিলেম্পি। কিন্তু তাতে নির্বাচক কমিটির মন গলেনি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত টেস্টে একটা হাফ সেঞ্চুরি পর্যন্ত করতে না পারা বাবরকে তারা আর সুযোগ দিতে নারাজ।
নতুন নির্বাচক কমিটিতে আছেন সাবেক পেসার আকিব জাভেদ, ব্যাটার আসাদ শফিক, আজহার আলী, আম্পায়ার আলিম দার ও বিশ্লেষক হাসান চিমা। এই কমিটিতে আগে টেস্ট কোচ ও অধিনায়ক থাকলেও নতুন কমিটিতে তাদেরকে রাখা হয়নি। পাঁচ নির্বাচক তাও কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেই বাবরকে বাদ দিয়েছেন।
বাবর ব্যাট হাতে সবশেষ দুই বছর ধরেই লড়াই করছেন। তাকে জাতীয় দলে ফিরতে হলে এবার ঘরোয়াতে রান করেই ফিরতে হবে। সামনেই অক্টোবরের ২০ তারিখ থেকে শুরু হবে কায়েদ-এ-আজম ট্রফি। এই আসরে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে বাবরের জন্য আবার খুলে যেতে পারে জাতীয় দলের দরজা। যদিও ২০১৯ সাল থেকে কোনো প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে মাঠে নামেননি বাবর।
মুলতানে যেখানে রানের বন্যা বয়ে গেছে, সেখানে ফ্ল্যাট উইকেট পেয়েও নিজেকে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি করেছেন বাবর। দুই ইনিংস মিলিয়ে করেছেন সর্বসাকুল্যে ৩৫ রান। দুই ইনিংসেই আউট হয়েছেন বাজেভাবে। প্রথম ইনিংসে ইনসাইডে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন, দ্বিতীয় ইনিংসে আউটসাইডে ধরা খেয়েছেন। এ নিয়ে টানা ১৮ ইনিংসে কোনো ফিফটি করতে পারলেন না বাবর।
পাকিস্তানের ইতিহাসে মাত্র চার বিশেষজ্ঞ ব্যাটার এরচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে একটিও ফিফটি করতে পারেননি। ২০২৩ সালের পর ৯ টেস্টে বাবরের গড় রান ২১-এর নিচে। সব মিলিয়ে চরম দুঃসময় যাচ্ছে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা এই ব্যাটারের। কায়েদ-এ-আজম ট্রফি তার জন্য ভাগ্য পরীক্ষার মতো। দেখার বিষয়, তার সঙ্গে তুলনা করা কোহলির মতো স্বরূপে ফিরতে পারেন কী না বাবর।
মুলতানেই ১৫ অক্টোবর শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টে বাবরের বদলি হিসেবে কে খেলবেন তা এখন জানা যায়নি। মুলতানে প্রথম টেস্টে পরাজয়ের পর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে পাকিস্তানের অবস্থান তলানিতে। টানা ছয় টেস্ট হারা পাকিস্তানের সামনে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।