ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলে বিদায় নিতে চান সাকিব আল হাসান। এমন আকুতি জানিয়ে সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন শর্ত। দেশে যাওয়া এবং আসা; দুটোই যেন স্বাভাবিকভাবে করতে পারেন কিংবা আরও স্পষ্ট করে বললে, দেশে থাকাকালীন নিরাপদ অনুভব করা এবং দেশে ফিরলে প্রয়োজনে দেশ ছাড়ার নিশ্চয়তা পেলেই টেস্ট সিরিজ খেলতে সাকিব আসবেন বাংলাদেশে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, সাকিবের দেশে আসা এবং বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকার কথা না। তার নামে হত্যা মামলা থাকলেও, আইন মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি দেখভাল করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাকিবকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানাতে গিয়ে আসিফ মাহমুদ রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে বলেছেন, ‘একজন ক্রিকেটার তিনি খেলবেন এবং বাংলাদেশের নাগরিক বাংলাদেশে আসার ক্ষেত্রে কোনো বাধা আমি দেখি না।’
সম্প্রতি সাকিব নিজের ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরব উপস্থিতি না থাকায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। জুলাই-আগস্টে চলা এই আন্দোলনের সময় সাকিব দেশের বাইরে ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত ছিলেন। এরপর ঘরের বাইরেই টানা সিরিজ খেলেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। দেশে ফিরে ভক্ত ও সমর্থকদের সামনে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তার এই ঘোষণার পর মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের দেয়ালে প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যুক্ত থাকা একটা পক্ষ। তারা কোনোভাবেই সাকিবকে দেশের মাটিতে খেলতে দেখতে চায় না। দেয়াল লিখনে প্রতিবাদও জানিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘যে দেয়াল লিখনের কথা বলছেন, কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি দেখিছি এটা আসলে ইমোনশনের ব্যাপার। তাদের ওই রাইটস আছে। গণতান্ত্রিক দেশ। সাংবিধানিক অধিকার আছে যে কোনো ধরণের মুভমেন্ট করার।’
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি, ‘আমাদের নজর থাকবে কারো নিরাপত্তা যেন আমরা হুমকির মুখে না ফেলি। যদি আইনগত কোনো বিষয় থাকে, আইন তো আইনের পথে চলবে আমি এখানে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। নিরাপত্তার বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। এখানে দক্ষিণ আফ্রিকা আসবে। আমাদের পরিবেশটাও ভালো রাখতে হবে। নয়তো বাইরের দেশগুলো দেশে আসার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ক্রাইসিস অনুভব করবে।’
সঙ্গে যোগ করেন, ‘দল (সাকিবকে নিয়ে বাংলাদেশ দল) দেওয়ার বিষয় বিসিবি দেখবে। রাষ্ট্রের জায়গা থেকে প্রত্যেকটা নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করবো। একটা বড় মুভমেন্ট হয়েছে। সাকিব আল হাসানের আগের ফ্যাসিবাদ সরকারের সঙ্গে ইনভলমেন্ট ছিল। সেটা উনি একটা স্ট্যাটাসে পরিস্কার করেছেন।’
আসিফ আরও বলেন, ‘তারপরও কিছু ইমোশন রয়ে গেছে। লজিক্যাল, ইলজিক্যাল আমি ওদিকে যাবো না। সেটা অন্য বিতর্ক। তবে কোনো আইনি সমস্যা এখন পর্যন্ত নেই সেটাই দেখা যাচ্ছে। দেশে আসা কিংবা বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকার কথা না। আমি যতটুকু জানি। আইনের বিষয় আইন মন্ত্রণালয় দেখবেন। আমি আইনের বিশেষজ্ঞ নই।’