৪০ মিনিট, ৫৪ বল, ৯ ওভার। তাতে নেই বাংলাদেশের ৪ উইকেট! স্কোরবোর্ডে জমা মাত্র ৩৮ রান। তার মধ্যে অতিরিক্ত রান ১৩টি!
১৪৪.২ ওভার ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশের এমন বেহাল দশা। দুই দিন জুড়ে থাকা ব্যাটিং স্বর্গ মাত্র ৪০ মিনিটে রূপ নিলো নরকে! অথচ একই উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরি হয়েছে ৩টি, হাফ সেঞ্চুরি হয়েছে ২টি।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৮। নাজমুল হোসেন শান্ত (৪) ও মুমিনুল হক (৬) রানে অপরাজিত আছেন। আলোকস্বল্পতার কারণে দিনের খেলা শেষ হয় আগেই।
ইনিংসের পঞ্চম বলে অহেতুক খোঁচা দিয়ে বিপদের শুরু করেন সাদমান ইসলাম। শূন্যরানে ফেরেন তিনি। এরপর শুরু উইকেটের মিছিল। মাহমুদুল হাসান জয় (১০) ও জাকির হাসান (২) ফেরার পর হাসান মাহমুদকে পাঠানো হয় নাইটওয়াচম্যান হিসেবে।
কেশব মহারাজের ঘূর্ণিতে হাসানও ফেরেন সাজঘরে। এরপর ২ ওভার সামাল দেন শান্ত-মুমিনুল। বাংলাদেশের সামনে এখনও বড় ৫৩৭ রানের বিশাল পাহাড়। এটি সামলাতে হলে শান্ত-মুমিনুলকে খেলতে হবে বড় ইনিংস। কাগিসু রাবাদা ২টি ও ড্যান পেটারসন-কেশভ মহারাজ নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে শেষ বিকেলে ৬ উইকেটে ৫৭৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন শতক আর দুই অর্ধ-শতকে ভর করে এই রান করে প্রোটিয়ারা। সেঞ্চুরি করা তিন ব্যাটার টনি ডি জর্জি, ট্রিস্টান স্টাবস ও মাল্ডার পেয়েছেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা। টেস্ট ইতিহাসে একই ইনিংসে তিনটি প্রথম শতক এর আগে হয়েছে ১৯৪৮ সালে।
এশিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো তিন কিংবা তার অধিক প্রোটিয়া ব্যাটার একশ’র বেশি রান করেছেন। মাল্ডার ১৫০ বলে ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। তার সঙ্গী সেনুরান মুত্তুসামি অপরাজিত ছিলেন ৬৮ রানে। সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইকরেট ৯০—তে ব্যাটিং করেন মুত্তুসামি। আর কিছুক্ষণ খেললে তিনিও সেঞ্চুরির দেখা পেতে পারতেন।
১৪১ রানে দিন শুরু করা টনি থামেন ডাবল সেঞ্চুরি থেকে ২৩ রান দূরে থেকে। ২৬৯ বলে ১৭৭ রান করেন এই ব্যাটার। ১৮ রানে দিন শুরু করা বেডিংহাম থামেন ৬৮ রান করে। পরপর টনি ও কাইল ভ্যারাইনে (০) ফিরলেও কোন লাভ হয়নি। এরপর ছড়ি ঘোরান মাল্ডার-মুত্তুসামি। দুজনে ১৮৬ বলে ১৫২ রানের জুটি গড়ে ইনিংসের ইতি টানেন।
এদিক এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড গড়ে আফ্রিকা। সর্বোচ্চ ১৭টি ছয় হাঁকায় তারা। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ছক্কা ছিল ১৫টি। এ ছাড়া এশিয়ার মাটিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের কীর্তি গড়ে সফরকারী দল। ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ৫৮৪ রান করে পাকিস্তানের বিপক্ষে আবুধাবিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার রান ফোয়ারায় বাংলাদেশের একমাত্র সফল বোলার ছিলেন তাইজুল ইসলাম। প্রোটিয়াদের ৬ উইকেটের মাঝে ৫টিই নিয়েছেন তিনি। এটি তার ক্যারিয়ারের ১৪তম ফাইফার।