খেলাধুলা

বন্ধ দুয়ার খোলার আনন্দ স্থানীয় কোচদের 

জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে দেশি কোচদের নিয়োগ দেওয়ার কথা বেশ কিছু দিন ধরেই বলে আসছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তার হাত ধরেই লম্বা সময় পর খুলে গেল বন্ধ দুয়ার। এক যুগের বেশি সময় পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে যোগ দিলেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। পাঁচ মাসের জন্য সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিলেন তিনি।

বাংলাদেশ দল এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখান থেকে ফেরার পর যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সালাউদ্দিনের অ্যাসাইনমেন্ট শুরু হবে ক্যারিয়ার দ্বীপপুঞ্জ সফর দিয়ে। বিদেশি কোচ ছাড়া কোচিং স্টাফ চলবে না, এমন ধারনা নিয়ে ছিল নাজমুল হাসান পাপনের বোর্ড প্যানেল। তাইতো স্থানীয় কোচরা ছিলেন উপেক্ষিত, বঞ্চিত। সুযোগ, সামর্থ্য সব থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় কোচদের জাতীয় দলের জন্য বিবেচনাতেই আনা হতো না। দুয়েকবার খণ্ডকালিন দায়িত্ব পালন করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। এর বাইরে বাকি সবাই ছিলেন আলোচনার বাইরে।

মিজানুর রহমান বাবুল স্থানীয় কোচদের মধ্যে অন্যতম সেরা কোচ। জাতীয় দলের কোচিং প্যানেল সহকারী কোচ হতে আবেদনও করেছিলেন। বিসিবির গেম ডেভেলাপমন্টে বিভাগের এই কোচের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিয়োগ মেলেনি। বোর্ড বদলে স্থানীয় কোচ সালাউদ্দিন কোচ হলেন। তার নিয়োগে উচ্ছ্বসিত মিজানুর রহমান, ‘এটা তো ভালো খবর জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে একজন স্থানীয় কোচ যুক্ত হলেন। অন্যদেরও সুযোগ বাড়বে ভবিষ্যতে।’

বোর্ডের সাবেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনও ফারুক আহমেদের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, ‘আমাদের স্থানীয় কোচরা ওয়েল ক্যাপাবল। আমাদের হাত ধরেই ওরা শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসে। ওদের বেসিক ক্রিকেটের জ্ঞানটা আমরাই চর্চা করাই। আমাদের কোচদের সেই সামর্থ্য আছে বড় জায়গায় লিড দেওয়ার। সালাউদ্দিন যুক্ত হয়েছে এটা অবশ্যই স্থানীয় কোচদের জন্য ভালো খবর।’

জাতীয় দলে এর আগেও কাজ করেছেন সালাউদ্দিন। ২০০৬ সালে প্রথমে সহকারী কোচ ও পরে ফিল্ডিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১০ পর্যন্ত ছিলেন দায়িত্বে। পরে বিসিবির জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবে আরও এক বছর কাজ করেন। এরপর আর তার কাজ করা হয়নি। এক যুগেরও বেশি সময় পর আবার জাতীয় দলের প্যানেলে ফিরলেন তিনি। লম্বা এ সময়ে দেশে-বিদেশি নানা জায়গায় কোচিং করিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে একাধিক শিরোপা জিতেছেন। তাতে বেড়েছে তার খ্যাতি, অভিজ্ঞতা। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আস্থা রাখেন এই কোচের ওপর। সামনে তার থেকে ভালো কিছুর প্রত্যাশায় বিসিবিও।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের আশা জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে সালাউদ্দিনের অন্তর্ভূক্তি অন্যান্য স্থানীয় কোচদের এগিয়ে আসার পথ সহজ করে দেবে, ‘বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, যোগ্য প্রার্থীদের জাতীয় দলের হয়ে অবদান রাখার সুযোগ করে দেব। সালাউদ্দিন এই ভূমিকায় আদর্শ একজন, নিজের সঙ্গে বয়ে এনেছে অনেক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জাতীয় দলে আরও বাংলাদেশি কোচ যোগ করার সময় এখনই।’