লক্ষ্য খুব একটা বেশি ছিল না। মাত্র ২৩৬। তাড়া করতে নেমে শুরুতে এক ওপেনারকে হারালেও দ্রুত ম্যাচের নাটাই নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু মাঝপথে হঠাৎ ছন্দপতন। মাত্র ২৩ রানের ব্যবধানে ৮ উইকেট হারিয়ে লাল-সবুজের দল হেরে বসে বড় ব্যবধানে। এমন হারের পর অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ দুষছেন শারজাহর উইকেটকে।
শুক্রবার (০৮ নভেম্বর) দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন মিরাজ। এ সময় তিনি জানান হঠাৎ উইকেটের আচরণ ভিন্ন হতে থাকে, ‘হঠাৎ করে উইকেটটা এত স্লো টার্নিং হচ্ছিল তারপর সোজা আসতেছিল। আপনি প্রেডিক্ট করতে পারবেন না কোন বল টার্ন করবে, কোনটা সোজা আসতেছে। এটা হঠাৎ করে হয়ে গেছে।’
সৌম্য সরকারের সঙ্গে ফিফটির জুটির পর মিরাজকে নিয়ে এগোতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের জুটি থেকে সর্বোচ্চ আসে ৫৫ রান। শান্ত (৪৭) আউট হতেই শুরু পতনের। মিরাজ (২৭) আউট হওয়ার পর বাকি ৬ ব্যাটার মিলে করতে পেরেছে মাত্র ১১ রান। ১৪৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। হার ৯২ রানে! শান্ত-মিরাজ দুজনে আউট হয়েছেন সুইপ করতে গিয়ে।
‘একটা জিনিস দেখেন, যখন আমি আর শান্ত ব্যাটিং করছিলাম তখন আমাদের দুজনের কাছে উইকেট সহজই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ২০ ওভার পর বল যখন একটু নরম এবং পুরনো হয়েছে তখন হঠাৎ করে টার্নিংটা শুরু হয়েছে, একটু বেশি। আপনি দেখেন মাঝে আমি আর শান্ত ধুঁকছিলাম ব্যাটিংয়ে, আমরা সেট ব্যাটার থাকাকালিন।’
‘ওই সময়টায় আমিও ভুল করেছি, শান্তও ভুল করেছে। আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই উইকেটে আমার কাছে মনে হয় সেট ব্যাটারদের শেষ করা দরকার ছিল। অবশ্যই, আমি এবং শান্ত দুজনই ভুল করেছি’ -নিজেদের দ্ভুল স্বীকার করে বলছিলেন মিরাজ।
অথচ একই উইকেটে বিপর্যয় সামলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পেরেছে আফগানিস্তান। একটা সময় তাদের রান ছিল ৫ উইকেটে ৭১। অলআউট যখন সময়ের ব্যাপার তখন ঘুরে দাঁড়িয়ে জুটি গড়ে ২৩৬ রানের লক্ষ্য দেয়। সেই কাজটিই করতে পারেনি বাংলাদেশ।
মিরাজ বলেন, ‘আমি মনে করি বোলিংয়ে আমাদের পেস বোলাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। দারুণ শুরু করেছে ফিজ, শরিফুল, তাসকিন তিনজনই। কিন্তু আমার কাছ থেকে যতটা প্রত্যাশা ছিল অতোটা আমি পূরণ করতে পারিনি আমি মনে করি। মিডল ওভারে আমি আর রিশাদ যদি দুইটা উইকেট বের করতে পারতাম তাহলে আমাদের জন্য সহজ হয়ে যেতো।’
আগামীকাল বাংলাদেশের বাঁচা-মরার লড়াই। হারলে সিরিজ শেষ। জিতলে আসবে সমতা। তবে মিরাজ মনে করেন না এক ম্যাচে হারেই সব শেষ হয়ে গেছে, ‘আপনি দেখেন, আফগানিস্তানের সাথে এর আগে তো আমরা অনেক জিতেছি। ওয়ানডেতেও তো জিতেছি। প্রথম ম্যাচে, বিশ্বকাপে। তারপর দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি জিতেছি, এর আগে আমরা সিরিজ জিতেছি বাংলাদেশের মাটিতে। ব্যাপারটা এমন না যে আমরা ওদের সাথে একটা ম্যাচ হেরেছি আর আমাদের সব চলে গেছে। এরকম কোন কিছু না।’
‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিটি দলই ভালো মানের। আপনি কখনই কোন দলকে ছোট বলতে পারবেন না। সুতরাং আমরা যেটা চেষ্টা করছি একটা ম্যাচ আমাদের খারাপ হয়েছে, আমরা হয়তো যেভাবে আশা করেছিলাম উইকেটটা আমাদের সঙ্গে আচরণ করেনি। আমরা যারা ব্যাটার ছিলাম, সেট ব্যাটার ছিলাম তাদের দায়িত্বটা নেয়া উচিত ছিল। আমি আর শান্ত, সেটা সবসময় আমি বলেছি’ -আরও যোগ করেন মিরাজ।