খেলাধুলা

লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম দিনের প্রথম দুই সেশনের ব্যাটিং দেখে বোঝার উপায় ছিল না তাদের পরিকল্পনা। বাংলাদেশের বোলারদের সমীহ করে রান তোলায় কোনো আগ্রহই ছিল না স্বাগতিকদের। অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে গতি থাকবে, সুইং থাকবে সঙ্গে রানও তোলা যাবে তা ভালোভাবেই জানতো তারা। এ কারণে সময় নিয়েছিল। যা কাজে দিয়েছে ভালোভাবে। 

প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৪৫০। প্রথম দিন ২৫০ রান তোলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিনে আরো ২০০ রান জমা করে ইনিংস ঘোষণা করে। লুইস ও আথানেজ প্রথম দিন যে ভুল করেছিলেন, গ্রেভস তা করেননি। দুজনই নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হয়ে প্রথম টেস্ট শতক মিস করেছেন। গ্রেভস তুলে নেন টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরি। ১১৫ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং দেখে এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয়নি উইকেটে ব্যাটিং করা কঠিন কিংবা বোলিংয়ে বিশেষ কিছু রয়েছে। নতুন বলে সময় কাটাতে পারলেই বাকিটা পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব। কিন্তু ওই চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা হজম করতে হয়েছে। দুই ওপেনার এক ঘণ্টার ভেতরেই সাজঘরে। প্রথমে জাকির হাসান, পরে মাহমুদুল হাসান ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। 

উইকেটে টিকে আছেন মুমিনুল হক ও শাহাদাত হোসেন দিপু। এরপর আছেন মিরাজ, লিটন ও জাকের আলী। এই পাঁচ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে উইকেটে কঠিন সময় কাটাতে হবে বাংলাদেশকে। লম্বা পথ দিতে হবে পাড়ি। পারবে কি বাংলাদেশ? সেটাই বিরাট প্রশ্নের। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা রান সংখ্যার দিকে চোখ বুলাানোর আগে তাদের উইকেটে কাটানো সময়ের দিকে নজর দেয়া যাক। সর্বোচ্চ ১১৫ রান করা সেঞ্চুরিয়ান গ্রেভস উইকেটে কাটিয়েছেন ৩৭৪ মিনিট। মাত্র চারটি বাউন্ডারি এসেছে তার ব্যাটে। রান তোলার আগ্রহর থেকে উইকেটে সময় কাটানোতে বেশি মনোযোগ ও পরিকল্পনা ছিল গ্রেভসের। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান কেমার রোচ। ১৪৪ বল মোকাবেলা করেন। উইকেটে কাটান ২৫২ মিনিট। সঙ্গে ৪৭ রান রীতিমতো ‘বোনাস’। 

এর আগে প্রথম দিনের চিত্রটাও প্রায় একই ছিল। ওপেনার মিকাইল লুইস ৩৩০ মিনিট উইকেটে কাটিয়েছেন অনায়াসে। ৯০ রানে একবার জীবন দিয়েছিলেন প্রথম স্লিপে। সেটা মিরাজ লুফে নিতে পারেননি। পরে ৭ রান যোগ করে লুইস নিজেই মিরাজের শিকার হন। আথানেজ মূলত ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের গতি বাড়িয়েছেন। ১০ চার ও ১ ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তিনিও উইকেটে ১৭০ মিনিট কাটিয়েছেন। সব মিলিয়ে উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রায় প্রতি ব্যাটসম্যানরাই যারা রান পেয়েছেন টিকে থাকতে চেয়েছেন। 

বাংলাদেশের জন্যও এমন টোটকা কাজে লাগার কথা। কিন্তু দুই ওপেনার একেবারে পড়ন্ত বিকেলে যেভাবে উইকেট ছুঁড়ে এসেছেন তাতে বাজি ধরার লোক মিলবে না। তবুও আশা তো করাই যায়। বাংলাদেশের একাদশ তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি। মুমিনুল, লিটন, মিরাজ বাদে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার খুব বেশি নেই। মুমিনুল এখনো ক্রিজে আছেন। লিটন ও মিরাজ আসবেন পরে। তাদের ব্যাটে লড়াইটা জমবে সেই প্রত্যাশা করাই যায়।