এক ম্যাচে ভালো করলে, পরের ম্যাচে থাকে না সেই ধারাবাহিকতা। ব্যাটিংয়ে হোক বা বোলিংয়ে ২২ গজে লড়াইয়ের তেজটা ঠিকঠাক খুঁজে পাওয়া যায় না। অল্পতে সন্তুষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রবণতা পাওয়া যেত।
সেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার পথে হাঁটা শুরু করলো বাংলাদেশের নারী দল। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছিল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও তাদেরকে দাঁড়াতে দিলো না স্বাগতিকরা। তাতে সিরিজ জয়ের সঙ্গে মিলেছে স্বস্তিও।
৫ উইকেটের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ।
মিরপুর শের-ই-বাংলায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ড ৬ উইকেটে ১৯৩ রান করে। জবাব দিতে নেমে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৩৭ বল আগে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিগার সুলতানারা দল।
এই জয়ে আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে আরও ২ পয়েন্ট নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। ২০ ম্যাচে ৬ জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট ১৭। আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা ছয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। পাকিস্তানকে টপকে বাংলাদেশ এখন সাত নম্বরে।
জয় পেতে বোলারদের ভূমিকা ছিল দারুণ। লক্ষ্য নাগালের বাইরে যেতে দেয়নি তারা। বাংলাদেশের সফল বোলার স্পিনার সুলতানা খাতুন। ৩২ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন নাহিদা আক্তার ও স্বর্ণা আক্তার।
আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের শুরু থেকে চাপে রেখেছিল বাংলাদেশ। ৩৫ রানে ২ উইকেট হারায় তারা। সারাহ ফোবেস ১৩ ও গ্যাবি লুইস ২ রানে ফেরেন সাজঘরে। সেখান থেকে অ্যামি হান্টার ও ওরলা প্রেডাগোনিস্ট ৯১ রানের জুটি গড়েন। তাদের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল অতিথিরা বড় স্কোরের পথে থাকবেন। জবাব দেবেন বোলারদের। কিন্তু এক ওভারে দুই থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে আইরিশ মেয়েদের ছন্দপতন হয়।
প্রেডাগোনিস্ট ৩৭ রানে রান আউট হওয়ার পর স্বর্ণা আক্তারের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউ হয়ে দলের হন সর্বোচ্চ ৬৮ রান করা অ্যামি। তিনে নেমে ৮৮ বলে ৮ চারে ইনিংসটি খেলেন। এছাড়া লওড়া ডেনলির ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। শেষ দিকে উনা রেমোন্ডহেয়র ২১ রানে আয়ারল্যান্ড দুইশর কাছাকাছি স্কোর করে।
উইকেট না নিতে পারলে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখে ডটবল আদায় করেছেন বোলাররা। সব মিলিয়ে ১৭৩ বল ডট করেছেন মেয়েরা। তাতেই রান আটকে রাখতে সুবিধা হয়েছে।
আগের ম্যাচে বাংলাদেশ নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় রান সংগ্রহ করেছিল। ব্যাটসম্যানরা সেই বিশ্বাস দ্বিতীয় ম্যাচেও দেখিয়েছেন। ওপেনার ফারজানা হক ৮৯ বলে ৫০ রান করেন ৬ বাউন্ডারিতে। শারমীন সুপ্তার সুযোগ ছিল আরেকটি ফিফটি তুলে নেওয়ার। কিন্তু ৪৩ রানে কাটা পড়ে তার ইনিংস। মুর্শিদা খাতুন ৬ রানে বিদায় নেওয়ার পর ফারজানা ও শারমিন ৮৫ রানের জুটি গড়েন। তাতে জয়ের কাজ সহজ হয়ে যায়।
এই দুই ব্যাটসম্যান নিজেদের কাজ শেষ করে না আসলেও পরের ব্যাটসম্যানরা হতাশ করেননি। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ৩৯ বলে ৪০ রান করেন ৪ চার ও ১ ছক্কায়। স্বর্ণা আক্তার ১টি করে চার ও ছক্কায় ২৯ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন। সোবহানা মোস্তারির ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান।
আয়ারল্যান্ডের বোলাররা চেষ্টা করেছিলেন। ২ উইকেট নিয়েছেন পেসার লওড়া ডেনলি। কিন্তু তাদের লড়াই পর্যাপ্ত ছিল না। অভিজ্ঞতা, দাপট এবং হোম কন্ডিশনের পুরো সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নিয়েছে অতি সহজে। এই জয়ের নায়ক হয়েছেন অধিনায়ক জ্যোতি।