খেলাধুলা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০ বছর পর সিরিজ হারল বাংলাদেশ

সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ানডে পরিসংখ্যান ছিল বিব্রতকর। সবশেষ ১১ ম্যাচের একটিও জিততে পারেনি ক্যারিবীয়রা। চলমান সিরিজে সব হিসেবনিকেশ বুঝিয়ে দিতেই যেন নেমেছে তারা। প্রথম ম্যাচে দারুণ এক জয়ের পর এবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখল শাই হোপের দল। বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ১০ বছর পর সিরিজও নিজেদের করে নিলো তারা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ ২০১৪ সালে সিরিজ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর আর কোনো সিরিজেই সুবিধা করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। এক দশক পর সেই আক্ষেপে প্রলেপ টানল হোপের দল।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে ব্যাটিংটা মনমতো করতে পারেনি বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের ধারেকাছেও যেতে পারেনি। উইন্ডিজের বোলিং তোপে ২২৭ রানেই গুটিয়ে যায় মেহেদি হাসান মিরাজের দল। জবাব দিতে নেমে দাপুটে ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেট ও ৭৯ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল বাংলাদেশের। তানজিদ হাসান শুরু থেকেই চড়াও হন। তবে অন্য পাশে কেউ তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। শুরুতেই উইকেট বিলিয়ে দেন সৌম্য সরকার। তিনে নেমে বাজে শটে হারান লিটন কুমার দাস। সিলসের বলে উইকেট বিলিয়ে দেন মিরাজ। 

তানজিদ খেলছিলেন নিজের মতো। আগের ম্যাচের মতোই সাবলীল ছিলেন এই ওপেনার। উইকেটও বিলিয়ে দিলেন ঠিক একইভাবে। আউট হন ৩৩ বলে ৪৬ রান করে। এরপরআফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ এরপর জুটি গড়ে তোলার আভাস দেন।

ভালো শুরু করেও নিজেকে চেনাতে পারেননি আফিফ। ২৯ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান। এরপর জাকের আলিকে শুরুতেই থামান গুডাকেশ মোতি। মার্কিনো মিন্ডলির প্রথম শিকারে পরিণত হন রিশাদ। তাতে ১১৫ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে লাল-সবুজের দল। 

সেখান থেকেই পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন তানজিম হাসান সাকিব। মাহমুদউল্লাহও শুরু করেন হাত খোলা। এই দুজনের ব্যাটেই দলের রান দেড়শ পেরিয়ে দুইশ ছাড়িয়ে যায়। দুজনের জুটিতে গড়া হয় রেকর্ড। অষ্টম উইকেট জুটিতে দুজনের ৯২ রান বাংলাদেশের পক্ষে রেকর্ড সর্বোচ্চ। তানজিম ৪৫ রানে বিদায় নিলে ভাঙে জুটি। 

তানজিমের বিদায়ের পরের ওভারেই আউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। ৯২ বলে ৬২ রানের ইনিংসে চারটি ছক্কা মারেন তিনি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ছক্কার রেকর্ডে এখন যৌথভাবে শীর্ষে মাহমুদুল্লাহ ও তামিম ইকবাল (১০৩টি)।

রান তাড়াতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ঝড় শুরু করেন ব্র্যান্ডন কিং ও এভিন লুইস। দলকে শতরানের শুরু এনে দেন দুজন। লুইসের বিদায়ে ১০৯ রানের মাথায় ভাঙে জুটি। দুটি চার ও চার ছক্কায় ৪৯ করে ফেরেন লুইস।

লুইসের বিদায়ের পর কিং আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন কেসি কার্টির সঙ্গে। জুটিতে ৬৬ রান আসে ৪৮ বলে। কিং ফেরেন ফিফটি হাঁকিয়ে ৭৬ বলে ৮২ রান করে নাহিদ রানার বলে ফিরে যান তিনি। কার্টিও ৭ চারে ৪৫ করে আউট হয়ে যান। এরপর বাকি পথ অনায়াসে পাড়ি দেন হোপ ও শেরফান রাদারফোর্ড। 

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সেন্ট কিটসেই হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ (তানজিদ ৪৬, মাহমুদউল্লাহ ৬২, তানজিম ৪৫) ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৬.৫ ওভারে ২৩০/৩ (কিং ৮২, লুইস ৪৯, কার্টি ৪৫) ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী। সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে এগিয়ে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জেডেন সিলস।