এবারের বিজয় দিবসের ট্যুর ছিল আমার সারপ্রাইজ ট্যুর। বিজয় দিবসে ভোর ৬টায় লাল-সবুজে নিজেদের সজ্জিত করে শহিদ স্মরণে বেদীতে ফুল দিয়ে সকাল আটটায় আউটিং এ যাচ্ছি- এই বলে আমাদের এক মাসের জন্য হযরতের ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরলাম, উদ্দেশ্যহীন (যদিও আমি জানতাম উদ্দেশ্যটুকু)। তাহসীন (আমার ছোট ভাই), কামাল খানা (আমার জীবন বন্ধু) ও হযরত (ড্রাইভার) যাত্রা শুরু করলাম। পূর্বেই ড্রাইভারকে রুট বলা ছিল। সে আমার সব বিষয় জানতো। এ কারণে সারপ্রাইজ দিতে আমার সুবিধাই হয়েছিল।
পরিবারের সদস্যদের বিজয়ে আনন্দ দিতে, ইতিহাস খুঁজতে, ঐতিহ্যের কাছে নিতে চলে গেলাম সোনার গাঁয়ে। কি আছে এখানে? কেনোই বা এলাম! যদিও আগেও অনেকবার এসেছি, কিন্তু কখনও এভাবে চেনাতে, জানাতে বা বিজয় দিবসে কেনো? চলুন তবে জানা যাক এ প্রশ্নের উত্তর। তবে এবারের অভিজ্ঞতা অন্যরকম।
১৫ শতকে বাংলার প্রথম রাজধানী সোনারগাঁ স্থাপন করেন ঈশা খাঁ। আর আমাদের সাথে আছেন কামাল খাঁ। যদিও বিবর্তনে এখন তিনি খান। তো তিনি সোনার গাঁ রাস্তার মুখে ঢোকার আগেই বলে উঠলেন- হিপ হিপ হুর রে! আমরা চলে এসেছি সোনার গাঁয়। একটু ধাক্ক্কা খেলাম। টুরিস্ট ক্লাবের সিইও বলে, সব জায়গায় ভ্রমণ করেন বলেই কি তিনি তরুণদের যারা আগে আসেননি তাদের বিস্মিত হতে দেবেন না?
সোনার গাঁয়ে ঈশা খাঁ প্রায় ১৫ শতকের দিকে বাংলার প্রথম রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। পানাম বাংলার প্রাচীনতম শহর। ওয়ার্ল্ড মনুমেন্ট ফান্ড এর তালিকায় পৃথিবীর ১০০টি ধ্বংসপ্রায় ঐতিহাসিক শহরের একটি পানাম নগর বা এই পানাম সিটি। এই তথ্য নিয়ে দৌড়ে এলেন অরুণিত ভোর- মা এটা তুমি কোথায় এনেছো? পৃথিবীর প্রায় ১০০টি দেশের মধ্য একটি ধ্বংসপ্রায় ঐতিহাসিক শহর এই পানাম সিটি কে বললেন? ওই যে দুলাল কাকু। যিনি আসলে পানাম সিটির বাগান ও পুকুর রক্ষাণাবেক্ষণ করেন এখন।
পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদীপথে বিলেত থেকে আসতো বিলাতি থানকাপড়, দেশ থেকে যেতো মসলিন। শীতলক্ষ্যা আর মেঘনার ঘাটে প্রতিদিনই ভিড়তো পালতোলা নৌকা। প্রায় ১৫ শতক থেকেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে ইউরোপীয় অনুপ্রেরণায় নতুন ঔপনিবেশিক স্থাপত্যরীতিতে গড়ে উঠে পানাম নগরী। পরবর্তিতে এই পোশাক বাণিজ্যের স্থান দখল করে নেয় নীল বাণিজ্য। ইংরেজরা এখানে বসিয়েছিল নীলের বাণিজ্যকেন্দ্র। এখানে এক সময় ধনী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেদের বসবাস ছিল। ছিল মসলিনের জমজমাট ব্যবসা। ব্যবসার জন্য এই স্থানটি খুবই প্রসিদ্ধ ছিল। মূলত পানাম ছিল বাংলার সে সময়ের ধনী ব্যবসায়ীদের বসতক্ষেত্র। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ছিলো ঢাকা-কলকাতাজুড়ে। তারাই গড়ে তোলেন এই নগর।
বারো ভুইঁয়ার একজন বাংলার স্বাধীন রাজা ঈশা খাঁর পদচারণা ছিল এই নগরীতে। সুলতানী আমল থেকে এখানে বিকশিত ছিল বাংলার সংস্কৃতি। ১৩৩৮ সালে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ এর আমলে বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন এই সুবর্ণ গ্রামকে, যা পরে সোনারগাঁ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এখানে কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বারো ভুইয়াঁদের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। সোনারগাঁর ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই নগরী গড়ে ওঠে। রাস্তার দুপাশ জুড়ে ভবন। পানামের টিকে থাকা বাড়িগুলোর মধ্যে ৫২টি বাড়ি উল্লেখযোগ্য। বাড়িগুলোর অধিকাংশই আয়তাকার, উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত, উচ্চতা একতলা থেকে তিনতলা। বাড়িগুলোর স্থাপত্যে ঔপনিবেশিকতা ছাড়াও মোঘল, গ্রিক এবং গান্ধারা স্থাপত্যশৈলীর সাথে স্থানীয় কারিগরদের শিল্পকুশলতার অপূর্ব সংমিশ্রণ দেখা যায়। প্রতিটি বাড়িই ব্যবহারোপযোগিতা, কারুকাজ, রঙের ব্যবহার, এবং নির্মাণকৌশলের দিক দিয়ে উদ্ভাবনী কুশলতায় ভরপুর।। ইটের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে ঢালাই-লোহার তৈরি ব্র্যাকেট, ভেন্টিলেটর আর জানালার গ্রিল। মেঝেতে রয়েছে লাল, সাদা, কালো মোজাইকের কারুকাজ। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই খিলান ও ছাদের মধ্যবর্তী স্থানে নীল ও সাদা ছাপ দেখা যায়। এ ছাড়া বাড়িগুলোতে নকশা ও কাস্ট আয়রনের কাজ নিখুঁত। বেশিরভাগ বাড়ির চারদিকের ঘেরাটোপের ভিতর আছে উন্মুক্ত উঠান।
পানাম নগরীর পরিকল্পনা নিখুঁত। নগরীর পানি সরবাহের জন্য দুপাশে ২টি খাল ও ৫টি পুকুর আছে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আছে কুয়া বা কূপ। নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে করা হয়েছে খালের দিকে ঢালু। প্রতিটি বাড়ি পরস্পর থেকে সম্মানজনক দূরত্বে রয়েছে। নগরীর যাতায়াতের জন্য রয়েছে এর একমাত্র রাস্তা, যা এই নগরীর মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে এপাশ-ওপাশ। নগরীর ভিতরে আবাসিক ভবন ছাড়াও আছে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, মঠ, গোসলখানা, নাচঘর, পান্থশালা, চিত্রশালা, খাজাঞ্চিখানা, দরবার কক্ষ, গুপ্ত পথ, বিচারালয়, পুরনো জাদুঘর। এছাড়া আছে ৪০০ বছরের পুরোনো টাকশাল বাড়ি। সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘর থেকে পশ্চিম দিকে রয়েছে গোয়ালদী হোসেন শাহী মসজিদ। এ মসজিদটি সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহীর শাসনামলে নির্মিত হয়। মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা দিয়ে একটু দক্ষিণ দিকে গেলে রয়েছে আরো কিছু ইমারত, বারো আউলিয়ার মাজার, হযরত শাহ ইব্রাহিম দানিশ মন্দা ও তার বংশধরদের মাজার, দমদম গ্রামে অবস্থিত দমদমদুর্গ ইত্যাদি। এছাড়াও নগরীর আশেপাশে ছড়িয়ে আছে ঈশা খাঁ ও তার ছেলে মুসা খাঁর প্রমোদ ভবন, ফতেহ শাহের মসজিদ, সোনাকান্দা দুর্গ, পঞ্চপীরের মাজার, কদম রসুল, চিলেকোঠাসহ বহু পুরাতাত্ত্বিক গুরুত্ববহ স্থাপনা।
সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর থেকে উত্তর দিকে হাঁটাপথেই পৌঁছানো যায় অর্ধচন্দ্রাকৃতি পানাম পুলে। (যদিও পুলটি ধ্বংস হয়ে গেছে)। ঘুরতে ঘুরতে পুলটি আবিষ্কার করে ফেললো তাহসীন আবদুল্লাহ। তখন আমি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত প্রাণ এক। একটু জলখাবারে ব্যবস্থা করছিলাম। হঠাৎ ডাক বিস্মিত বালকের! সেই বুঝিয়ে দিলো স্থানীয় আমজাদ চাচাকে সে পেয়ে গিয়েছিল। চাচা বৃদ্ধ হলেও ভীষণ চটপটে। তিনি জানালেন পুলটির দৈর্ঘ্য ছিলো ৭২ ফুট আর প্রস্থ ছিলো ১৫.৫ ফুট। মাঝখানটা ছিলো উঁচু। এই পুল পেরিয়েই পানাম নগর এবং নগরী চিরে চলে যাওয়া পানাম সড়ক।
আমরা সরেজমিনে যা দেখলাম অযত্ন আর অবহেলায় পানাম নগরের বাড়িঘরগুলোতে শ্যাওলা ধরেছে, ভেতরের পরিবেশ স্যাঁতস্যাঁতে, গুমোট। বাড়িগুলোর দেয়ালে গজাচ্ছে গাছপালা, অনেক বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেছে গাছের শিকড়। অনেক ঘরের চৌকাঠ ও রেলিং খুলে পড়েছে। চুরি হচ্ছে কড়িকাঠ ও তক্তা। ফলে বিভিন্ন সময় বাড়িগুলোর ছাদ ধ্বসে পড়ছে, ভেঙ্গে পড়ছে সিঁড়ি ও দেয়াল। পরিত্যক্ত এসব বাড়িগুলোর অনেকগুলোতে মানুষ কিংবা পশু-পাখি মলমূত্র ত্যাগ করে। দেশ স্বাধীন হবার আগে ও পরে বাড়িগুলো ১০-১৫ বছরের ইজারা দেয়া হয় এবং পরে নবায়নও করা হয়। মূল বাসিন্দাদের অবর্তমানে বাড়িগুলো অযত্নে ক্ষয়ে যেতে থাকে। ফলে ২০০৪ সালের পর আর ইজারা নবায়ন করা হয়নি। এমনকি ২০০৫ সালে নাকি দুটো বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বসে পড়েছে। ২০০৯ সালে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে পানাম নগরীকে সম্পূর্ণভাবে দখলমুক্ত করা হয়। নীলকুঠির মূল রূপ ঢাকা পড়ে গেছে নতুন করে করা পলেস্তারার নিচে।
পানাম সিটি ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পানামের উলটো পাশে একটি সালাদিয়া হোটেলেই আমরা খেতে বসে পড়লাম। দুপুরের খাবারে বেগুনি ভর্তা, ডাল আর মুরগির মাংস দিয়ে খেলাম। সবাই প্রস্তাব দিলো চলো সোনারগাঁ যাদুঘরে যাই। অনেক তো পুরো দালান দেখিয়ে খুব বিজয় করে ফেলেছো। কিন্তু আমার জানার আগ্রহ ছিল বর্তমান পরিস্থিতি।
সোনারগাঁ জাদুঘরে এলে প্রথম নজর কাড়বে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ১০০ বছরের প্রাচীন এক অট্টালিকা ভবন। এই ভবনটি পুরনো বড় সর্দার বাড়ি খ্যাত। ভবনের বাহিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্য ভাস্কর্য দুটি ঘোড়া; যা সোনারগাঁ জাদুঘরের কথা বললেই এই দুই ঘোড়া দেখলেই সবাই অনায়াসে চিনতে পারে। জাদুঘরে প্রবেশ করেই দেখতে পেলাম শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের তৈরি গরুর গাড়ির ভার্স্কয, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভার্স্কয ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আবক্ষ ভার্স্কয; শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন স্মৃতি জাদুঘর ও বড় সর্দার বাড়ি ভবনের গ্যালারি। গ্যালারিগুলোতে কাঠ খোদাই, কারুশিল্প, পটচিত্র ও মুখোশ, আদিবাসী জীবনভিত্তিক নিদর্শন, গ্রামীণ লোক জীবনের পরিবেশ, তামা কাসা পিতলের নিদর্শনে লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির নিদর্শন, লোকজ অলঙ্কারসহ অনেক কিছুই রয়েছে।
এখানে রয়েছে লাইব্রেরি, ডকুমেন্টেশন সেন্টার, ক্যান্টিন, সেমিনার হল, সোনারতরী মঞ্চ, গ্রামীণ উদ্যান, হরেক রকম বৃক্ষ, মনোরম লেক, লেকের মাঝে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌবিহার, মৎস্য শিকারের ব্যবস্থা, স্থায়ী মনোরম প্রকৃতি অপরূপা সেতু, পঙ্খীরাজ নৌকা। জাদুঘরের পশ্চিমে বিশাল এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে কারুশিল্প গ্রাম। এখানে বৈচিত্র্যময় লোকজ স্থাপত্য গঠনে তৈরি হয়েছে মানোরম ঘর। ঘরগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অজানা অচেনা অথচ দক্ষ কারুশিল্পীরা বাঁশ বেত, কাঠ খোদাই, মাটি, জামদানি, নকশিকাঁথা, পাট শিল্প, ঝিনুক, কামার, শঙ্খ শিল্প, রেশম শিল্প, একতারা ইত্যাদি উৎপাদন করছেন। এখানে কারূপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। অরুণিত ভোর কাঠের চুরি, কামাল বাঁশি, তাহসীন কিনলো মুড়ি বাতাসা, খই।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা হয়ে উত্তরদিকে পর্যটন নগরী সোনারগাঁওয়ের অবস্থান। ঢাকা থেকে বাসে কিংবা প্রাইভেটকারে সোনারগাঁও যাওয়া যাবে। সময় লাগবে বাসে এক থেকে দেড় ঘণ্টা এবং প্রাইভেটকারে এক ঘণ্টা। ঢাকায় গুলিস্তান এসে হকি স্টেডিয়ামের পাশে বাস কাউন্টার রয়েছে। এখান থেকে ঢাকা-মেঘনা সড়কের দোয়েল সার্ভিস, স্বদেশ পরিবহন, বোরাক বাসে চড়ে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় নামতে হবে। বাস ভাড়া ৪০-৪৫ টাকা। চৌরাস্তা বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশাযোগে উত্তর দিকে পর্যটক নগরী সোনারগাঁও লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন। ভাড়া ২০-৩০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে সোনারগাঁয়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণত থাকার পরিকল্পনা থাকে না। ঢাকার খুব কাছাকাছি বলে একদিনে আপনি ঘোরাঘুরি শেষে আবার বাসায় ফিরে যেতে পারবেন। দূর থেকে যারা এখানে বেড়াতে আসেন তারা অনেক সময় থেকে যেতে চান। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য হলো- এখানে একটি থ্রি স্টার মানের ‘সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্ট’ নামে রিসোর্ট রয়েছে। এটি লোকশিল্প জাদুঘরের পাশেই খাসনগর দিঘীরপাড় এলাকায় অবস্থিত। আগে বুকিং দিতে হবে। এ ছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে একটি রেস্ট হাউস রয়েছে এখানে। সেটি এমএ সাত্তার কেন্দ্রীয় গণবিদ্যালয় (বেইস)। এখানে অনেকগুলো মনোরম কক্ষ রয়েছে।
লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে বুধবার ও বৃহস্পতিবার। অন্যান্য দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। জাদুঘরে প্রবেশ ফি দুটি ভবনের গ্যালারিসহ ৩০ টাকা।