শরীর ক্লান্ত ছিল, তাই এক ঘুমেই রাত পেরিয়ে গেছে। সারারাত কোনো কিছুর টের পাইনি। একদম ভোরে ঘুম ভেঙেছে। তাবুর জিপার খুলে দেখি চারপাশ সাদা হয়ে আছে। রাতে যে কুয়াশা পড়েছে ঘাসের উপর সেগুলো জমে বরফ হয়ে আছে। তাবুর উপরেও বরফ জমে আছে। সবাই দ্রুত উঠে রুকস্যাক গুছিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। ক্যাম্পের পাশের বাড়ির টয়লেট ব্যবহার করে এলাম। এর মধ্যে তাবু ঝেড়ে বরফ ফেলে গুটিয়ে ফেলেছে শেরপারা। আমরা কিচেন তাবুতে এসে গরম গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করছি। ভক্তপুন ও তার ছেলেরা খচ্চরের পিঠে মালপত্র তুলে নিচ্ছে। আজ সকালের নাস্তায় নডুলস স্যুপ, রুটি আর ডিম ভাজি। এগুলো খেয়েই রোদ ওঠার আগেই আমরা রওনা হয়ে গেলাম।
ডোলে থেকেই উপরের দিকে ওঠা শুরু। প্রথমে দুই তিনশ মিটার পাথর বিছিয়ে সিঁড়ি করে দেওয়া আছে। তারপর থেকেই জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ট্রেইল। ঘণ্টাখানেক সময় লেগে গেল এই জঙ্গল পেরিয়ে আসতে। যে উচ্চতা থেকে গাছপালা শেষ হয়ে যায় আমরা এখন সেই উচ্চতায় উঠে এসেছি। এখন শুধু ঘাসের চাদরে মোড়ানো পাহাড়। পাহাড়ের বুক বরাবর রাস্তা চলে গেছে। অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আমাদের বেশ কয়েকজন পোর্টার অনেক দূরে চলে গেছে; তাদেরও দেখা যাচ্ছে। এই পথটা ধীরে ধীরে উপরে উঠে গেছে। যেহেতু এখানে গাছপালা নেই তাই রোদের মধ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। কোনো ছায়া নেই পথে। একটা পাহাড়ের উপরে উঠে এসে দেখি টিনের চালার একটা শেল্টার বানানো। বসে বিশ্রাম করার জন্য বেঞ্চও আছে। আমরা এখানে কিছু সময় বিশ্রাম করলাম। এটা যেহেতেু ঢোরপাটান হান্টিং রিজার্ভ সেহেতু এখানে বিভিন্ন দেশ থেকে শিকারীরা পশু শিকারের জন্য আসেন। তাই তাদের জন্য এ রকম শেল্টার বানানো আছে বিভিন্ন স্থানে।
পথেই এক ঝিরির পাশে দুপুরের খাবারের বিরতি দেওয়া হলো। বরফ গলা স্বচ্ছ পানি কলকল শব্দে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। পায়ের বুট আর মোজা খুলে ফেললাম। আমরা পাথরের উপরে বসে হাত-পা-মুখ এই স্বচ্ছ শীতল পানিতে ধুয়ে নিলাম। এই ঝিরির পানি রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি বিপ্লব ভাইকে বললাম, ভাই চলেন এই সুযোগে আমার আশপাশটা ঘুরে দেখি। বলার সাথে সাথে তিনিও রাজি হয়ে গেলেন। ক্যামেরা হাতে নিয়ে দুজন হাঁটতে শুরু করলাম। ছোট-বড় অসংখ্য পাথরের বোল্ডার। এগুলোর উপরে উঠে বসে দাঁড়িয়ে দুজনে ছবি তুললাম। হঠাৎ চোখে পড়লো ঘাসের উপরে একটি পশুর কঙ্কাল। দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেশি দিন হয়নি। এখনো হাড়ে মাংস লেগে আছে। আমি বিপ্লব ভাইকে বললাম, ভাই এটা ব্লু-শীপের কঙ্কাল। আশাকরি আজকেই আমরা ব্লু-শীপের দল দেখতে পারবো। কোনো কারণে হয়তো মরে গেছে আর চিল শকুনের খাবার হয়েছে। বিপ্লব ভাই মজা করে বললেন, চিল শকুনেরা আমাদের জন্য একটু মাংস রেখে দিলেই পারতো। ব্লু-শীপের মাংস খেয়ে দেখতাম কেমন স্বাদ।
দুপুরের খাবার রান্না শেষ হয়েছে। প্লেটে খাবার দেওয়া হলো। আমরা খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে একেকজন একেক জায়গায় পাথরের উপর বসে খাচ্ছি। খাবারের মাঝে মাঝে ঝিরি থেকে মগ দিয়ে পানি তুলে পান করছি। এই মুহূর্তের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। খাবার শেষ করে সবাই নিজ দায়িত্বে নিজেদের প্লেট ঝিরির পানিতে ধুয়ে রাখলাম। খাবার শেষ করে আবার ট্রেকিং শুরু। এখন নদীর পাড় ধরে হাঁটছি। হাতের ডান পাশে গভীর খাদ। বরফ গলা খরস্রোতা নদীর পানি আপন গতিতে কলকল শব্দে বয়ে চলেছে। পাথুরে পথ ভীষণ সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। হঠাৎ চিৎকার করে ভক্তপুনের ছোট ছেলে বলতে লাগল, ব্লু-শীপ! ব্লু-শীপ! উপরের দিকে পাহাড়ের ঢালে এক দল ব্লু-শীপ ঘাস খাচ্ছে। দেখে মনে হলো কম করে হলেও প্রায় পনেরো-বিশটা হবে। বেশ কয়েকটি বাচ্চাও দেখতে পেলাম দৌড়াচ্ছে।
বিকেল সোয়া তিনটা বেজে গেল আমাদের ফেদিতে পৌঁছাতে। আজকের দিনের মতো ট্রেকিং শেষ। এখানেই আজ আমরা ক্যাম্পিং করবো। নদীর পাড়ে ক্যাম্প করা হলো। এখনো রোদ আছে এখানে। ঘামে ভেজা জামাকাপড় পরিবর্তন করে রোদে এসে দাঁড়ালাম। পোর্টাররা রোদে বসে তাস খেলছে। মুহিত ভাই ম্যাপ নিয়ে বাইরে এলেন। ম্যাপ ঘাসের উপরে বিছিয়ে সবাই একসাথে অভিযানের পথ নিয়ে পরিকল্পনা করলাম। ভক্তপুন তার ফোনে তোলা দোগারির ছবি দেখালেন। তিনি পশু শিকারীদের গাইড করতে এসে ছবিগুলো তুলে ছিলেন। সন্ধ্যা নেমে এলো খুব দ্রুত। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই তাপমাত্র মাইনাসে নেমে এলো। আর এই উচ্চতায় বাতাসও অনেক বেশি। সন্ধ্যার মধ্যেই আমাদের রাতের খাবার খেতে হলো। খাবার শেষে বোতলে গরম পানি নিয়ে তাবুতে চলে এলাম। বাইরে প্রচণ্ড ঠান্ডা। তাই তাবুর ভিতরে বসেই দাঁত ব্রাশ করে নিলাম।
রাত যত গভীর হচ্ছে নদীরে পানির কলকল শব্দ তত বেশি তীব্র হচ্ছে। বাতাসের গতিও বেড়ে গেছে। বাতাসের শো শো শব্দ আর তাবুতে বাতাসের আঘাতের শব্দও অনেক! ভয়ে ছিলাম আবহাওয়া খারাপ হয় কিনা। তবে মাঝ রাতে তাবুর জিপার খুলে দেখি আকাশে বিশাল বড় এক চাঁদ। আকাশ পরিষ্কার। কোনো মেঘ নেই। বাতাসও কিছুটা কমেছে। আজ বারবার ঘুম ভাঙছে। সানভি ভাই গভীর ঘুমে আছে। কোনো নাড়াচাড়া নেই। পাশের তাবুগুলো থেকে একাধিক জনের নাক ডাকার বিকট শব্দ নদীর পানির শব্দের সাথে পাল্লা দিচ্ছে। এইসব শব্দের তালে তালে কখন যেন আবার ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারিনি।
ঘুম ভেঙেছে চারটে নাগাদ। তারপর আর ঘুম আসেনি। স্লিপিং ব্যাগের ভিতরেই এপাশ ওপাশ করে ভোর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। দিনের আলোর সাথে সাথেই তাবু থেকে বেরিয়ে এলাম। কিচেন স্টাফরা সকালের নাস্তা বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি নদীতে নেমে এসে পানির কাছে চলে এলাম। দেখার চেষ্টা করলাম পানি জমে বরফ হয়ে আছে কিনা। পাথরের ফাঁকে ফাঁকে যেখানে অল্প পানি সেই পানি জমে বরফ হয়ে আছে। স্বচ্ছ বরফ। এর মধ্যে বিপ্লব ভাইও তাবু থেকে বেরিয়েছেন। শেরপারা বেরিয়ে তাদের তাবু গোটাচ্ছে। সবাই রুকস্যাক গুছিয়ে তাবুর বাইরে রাখলাম। সবগুলো তাবু গুটিয়ে ফেলা হলো শুধুমাত্র কিচেন তাবু বাদে। খাবার শেষে এই তাবু গোটানো হবে। আজ সকালের নাস্তায় রুটি আর ডিম ভাজি।
আমাদের আগেই ভক্তপুন ও তার দুই ছেলে খচ্চরে মালপত্র নিয়ে রওনা হয়ে গেছে। তাদের পিছনে পিছনে আমরাও রওনা হয়েছি। নদীর পাড় ধরেই হেঁটে চলছি। আমাদের মালাপত্র বহন করা পোর্টাররাও আমদের আগে চলে গেল। আমরা যেহেতু চলার পথে ছবি তুলছি এবং ভিডিও করছি সেই জন্য আমাদের কিছুটা সময় লাগছে। আজ সকাল সকাল ব্লু-শীপ দেখার সুযোগ হয়ে গেল। সেটাও আবার খুব কাছ থেকেই। আমরা নদীর পাড় ছেড়ে এখন পাহাড়ের শরীর বেয়ে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছি। ঘাসের চাদরে মোড়ানো এই বিরাণ ভূমি।
কোথায় থেকে যেন এসে সামনে দাঁড়ালো শেয়াল। এতো উচ্চতায় এবারই প্রথম শেয়াল দেখার অভিজ্ঞতা হলো। আমাদের দেখে সেও থমকে দাঁড়িয়ে কিছু সময় আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো। সে হয়তো ভাবছে এরা আবার কই থেকে আমাদের এলাকায় চলে এলো? কিছু সময় আমাদের দিকে তাকিয়ে থেকে সে দূরে দৌড়ে চলে গেল। কিছুটা সমতল পথ পেরিয়ে এসে ছোট একটি ঝিরির সামনে এসে দাঁড়ালাম। এই ঝিরি লাফিয়ে পেরুতে হবে। তবে আগে কিছুটা পথ নিচে নামতে হবে। নিচে নামার মতো সুবিধাজনক জায়গা দেখে ঝিরির কাছে নেমে এলাম। ঝিরি পেরিয়ে আবার উপরে উঠতে হলো। পাহাড়ের রিজ ধরে এগিয়ে যাচ্ছি। তিন পাশেই বরফে ঢাকা পর্বত। এখন পর্যন্ত বরফে মধ্যে আসিনি। তবে আশাকরি দুপুরের মধ্যে বরফের দেখা পাবো।
দূর থেকেই দেখতে পেলাম আমাদের টিমের যারা আগে চলে গেছে, তার একটা সমতল জায়গায় বসেছে। ভেবেছি তারা হয়তো বিশ্রাম করছে। কিন্তু না। কাছে এসে দেখি এখানেই দুপুরের খাবারের বিরতি দিয়েছে। এখন সময় সকাল সাড়ে দশটা। এই উচ্চতায় প্রচণ্ড বাতাস। তাই একটা বড় পাথরের বোল্ডারের আড়ালে রান্নার স্টোভ বসিয়েছে। চারপাশে বড় বড় পাথরের বোল্ডার। উপর থেকে দেখি ভক্তপুনের ছেলেরা খচ্চর নিয়ে নেমে আসছে। উপরে কোথাও মালপত্র রেখে এসেছে। কিলু আর ভক্তপুন খচ্চরের পিছনে পিছনে নেমে এলো। তারা উপরে মালপত্র গুছিয়ে রেখে এসছে। উপরের দিকে আর খচ্চর যাওয়ার রাস্তা নেই। তাই খচ্চর এই পর্যন্তই। এখান থেকে খচ্চর নিয়ে ভক্তপুনের ছেলেরা ফিরে যাবে। আর সে আমাদের সাথে থেকে যাবে। আমরা সবাই ঘাসের উপরে শুয়ে শুয়ে রোদ গায়ে মাখছি। কিচেন স্টাফরা রান্না করছে। রান্না শেষে সবাই একসাথে বসে খেলাম। খাবার শেষে ভক্তপুনের ছেলেরা খচ্চর নিয়ে ফিরে গেল। তার দুই ছেলের নাম এখন জানতে পারলাম। বড় ছেলের নাম লেলিন আর ছোট ছেলের নাম স্ট্যালিন। মুহিত ভাই ভক্তপুনকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ছেলেদের নাম লেলিন আর স্ট্যালিন কেন? তখন সে মুচকি হাসি উত্তর দিলো, আমি কমিউনিস্ট করি। এই দুজন নেতা আমার আদর্শ। তাই তাদের নামেই আমার দুই সন্তানের নাম রেখেছি।
খাবার শেষে আবার সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে রওনা হলাম। খচ্চরে বহন করা মালপত্র কিছু সব পোর্টাররা ভাগ করে নিলো। কিছু মালাপত্র একটি বড় পাথরের নিচে পলিথিন দিয়ে ডেকে রেখে যাওয়া হলো। প্রয়োজন হলে তখন এসে নিয়ে যাওয়া হবে। দুপুরে যেখানে খেয়েছি সেই জায়গা থেকে পনেরো-বিশ মিনিট পথ আসার পরেই পায়ের নিচে বরফ দেখতে পেলাম। পাঁচ ছয়দিন আগেই হয়তো এখানে তুষারপাত হয়েছে। যতো সামনে এগিয়ে যাচ্ছি বরফের পরিমাণ বাড়ছে। ঘাসের ভিতরে কোথাও কোথাও আবার স্যাঁতস্যাঁতে কাঁদা। আমরা একটা পাহাড়ের উপরে এসে বরফের উপরেই বিশ্রামের জন্য দাঁড়িয়েছি। কাঁধ থেকে রুকস্যাক বরফের উপরে রেখে তার উপর বসে পানি পান করলাম। পাঁচ-দশ মিনিট বিশ্রাম করে আবার চলতে শুরু করলাম। আংডু, তামটিং, কিচেন স্টাফ আমাদের আগে চলে গেছে। চারপাশে এখন শুধু বরফের বিরাণ ভূমি। যে দিকেই তাকাই শুধু বরফ আর বরফ। খালি চোখে তাকানো যাচ্ছে না। তাই সবাই সানগ্লাস পরে নিয়েছি। বরফের মধ্যে সানগ্লাস চোখে না পরলে অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করেছে। পর্বতের চরিত্রই এমন। দুপুরের পর থেকে আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যেই মেঘে চারপাশ ঢেকে দিলো। আর সাথে সাথে তাপমাত্র একদম নেমে গেল। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেই বরফের উপর দিয়ে কচ্কচ্ শব্দে এগিয়ে চলছি। দুই পাশেই উঁচু বরফের পাহাড় আর আমরা মাঝখান দিয়ে হাঁটছি। সামনে যত এগুচ্ছি বরফের পরিমাণ বেড়েই চলছে। এখন প্রায় হাঁটু অব্দি বরফ। হাঁটতেও কষ্ট হচ্ছে। উপরের গ্লেসিয়ার থেকে যে নদীটি বয়ে গেছে নিচের দিকে সেই নদীর পানিও জমে বরফ হয়ে আছে। নদীর মাঝখান দিয়ে সরু নালার মতো কলকল শব্দে পানি বয়ে চলেছে। আমার এই নদীর পাশ দিয়ে হাঁটছি।
বিকেল পৌনে তিনটার দিকে নিমকুন ফুলগাড়ি নামক জায়গায় এসে আজকের মতো ট্রেকিং শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো; যেহেতু আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেছে। চারপাশ হোয়াইট আউট হয়ে যাওয়ার কারণে কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না। বরফের পরিমাণ এতোই বেশি যে এখন সামনে এগিয়ে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দলনেতা মুহিত ভাই এবং শেরপারা পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলেন আজ এখানেই ক্যাম্প করার। জিপিএস ডিভাইসে এই স্থানের উচ্চতা দেখাচ্ছে ৪ হাজার ৬০০ মিটার। পোর্টাররা সবাই এখনো এসে পৌঁছায়নি তাই তাদের জন্য অপেক্ষা করতে হলো, কারণ তাদের কাছে তাবু। তারা এলেই তাবু লাগানো হবে। কিছুক্ষণের মধ্যে তারাও চলে এলো। নিরাপদ স্থান দেখে তাবু খাটানো হলো। আমাদের আটজনের ছোট চারটি তাবু করা হলো একসঙ্গে, আর কিচেন তাবু আর ডাইনিং তাবু করা হলো একসঙ্গে।
তাপমাত্রা এখন হিমাংকের অনেক নিচে। হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। তাবুর ভিতরে ঢুকে থারমাল পরে তার উপরে ডাউন জ্যাকেট এবং ডাউন জ্যাকেটের উপরে উইন্ড জ্যাকেট পড়লাম। তবু যেন ঠাণ্ডা কমছে না। স্লিপিং ব্যাগ বের করে পা থেকে কোমর অব্দি ভিতরে ঢুকিয়ে বসেই রইলাম। আমি আর সানভি ভাই এক তাবুতে। সেও একইভাবে বসে আছে। তাবুর জিপার খোলা। আমরা বাইরে তাকিয়ে আছি। আবহাওয়া ভালো হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখছি না। কিচেন স্টাফদের একজন চায়ের কেটলি আর মগ নিয়ে এলো। সবার তাবুতে গিয়ে সবাইকে চা দিয়ে গেল। তাবুর ভিতরে বসেই আমরা চা পান করতে লাগলাম। (চলবে)
পড়ুন ১১তম পর্ব : দোগারি পর্বতে বাংলাদেশের প্রথম অভিযান