সেই কবে জল পড়ে পাতা নড়েছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির আঙিনায়। আজও কোনো বর্ষণমুখর দিনে বা সন্ধ্যায় কারো অলক্ষ্যে হয়তো জল পড়ে পাতাও নড়ে। হয়তোবা প্রতিটি ভ্রমণপিয়াসী মানুষের মনের মাঝে দোলা দিয়ে যায় গুরুদেবের স্মৃতিময় দিনগুলো।
এই বাড়িতেই ১৮৬১ সালের ৭ মে, বাংলা ১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম হয়েছিল। এখানে তাঁর শৈশব কেটেছে। এখানেই তিনি সংসার পেতেছিলেন। ১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলা ২৪ অগ্রহায়ণ ১২৯০ ঠাকুরবাড়ির অধস্তন কর্মচারী বেণীমাধব রায়চৌধুরীর কন্যা ভবতারিণীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে ভবতারিণী হলেন মৃণালিনী দেবী। আর এখানেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পদ চিহ্ন রেখে গিয়েছেন। বন্ধুরা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি বলছি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির কথা।
ঢাকা থেকে বন্ধুরা বলে দিয়েছিল, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি বললেই যে কোনো ট্যাক্সিওয়ালা চোখ বুজে নিয়ে যাবে রবীন্দ্রনাথের বাড়ি। কলকাতায় এসে বুঝলাম এখানকার ট্যাক্সিওয়ালাদের এখন চোখ ফুটেছে। চোখ বুজে ঠাকুরবাড়ি যাবার দিন শেষ। প্রথম যে ট্যাক্সি ধরলাম তার চালক বলল, ‘দাদা, ঠাকুরবাড়ি তো বুঝলাম, ঠিকানাটা বলুন’। দুই-তিনজন ক্যাব চালকের কাছে একই রকম জবাব পেয়ে, শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে গুগল ম্যাপ চালু করেই যেতে হলো ঠাকুরবাড়ি। কলকাতার ট্যাক্সি চালকরা জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি খুব একটা চেনেন না কিংবা বেশির ভাগই না চেনার ভান করেন। তবে হনুমান মন্দির বললে না চেনার ভানটাও করতে পারেন না।
শেষ পর্যন্ত একজনকে পেলাম যিনি আমাদের নিয়ে গেলেন গুরুদেবের বাড়ির পথে। ও বলাই তো হলো না- আমার ভ্রমণসঙ্গী আমার সবসময়ের বন্ধু আমার মা। প্রথম বারের মতো যাচ্ছি গুরুদেবের জন্মস্থানে, তাই মনের ভেতর কে যেন তারা দিচ্ছে কতক্ষণে পৌঁছাবো? কখন স্পর্শ করত পারবো গুরুদেবের জন্মস্থানের মাটি? জাকারিয়া স্ট্রিটের নাখুদা মসজিদ, চিতপুর রোড দিয়ে এগিয়ে চলছি। শেষ পর্যন্ত দেখা মিললো বিশাল বড় পাকা তোরণে লেখা ‘জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি’। এর পরই বেশ খানিকটা ঘিঞ্জি গলির ভিতরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ। সেখান থেকে খানিকটা ভিতরেই মিউজিয়াম।
ঠাকুরবাড়িতে যাবার রাস্তা যেমনই হোক, বাড়িটা দেখার মতো। অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে দ্বারকানাথ ঠাকুর বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন বড় বাজারের শেঠদের জমিতে। ধীরে ধীরে এই পাড়াটি হয়ে ওঠে বাংলাসাহিত্যের বহু বিখ্যাত ঘটনার সাক্ষী। এ পাড়াতেই থাকতেন ‘হুতোম প্যাঁচার নকশার’ কালী প্রসন্ন সিংহ, ভারতবর্ষে জুলিয়াস সিজার নাটক প্রথম অভিনীত হয়েছিল যার বাসায় সেই পিয়ারি মোহন বোস, মাইকেল মধুসূদনের ‘কৃষ্ণকুমারী’ প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিল যাঁর উদ্যোগে সেই জ্ঞানেন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ আরও বেশ কয়েকজন বিখ্যাত মানুষ।
সবুজ ছোট-বড় বৃক্ষাদির শাখা-প্রশাখা আর পত্রপল্লবে ঘেরা চারদিক। তারই ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে লাল রঙের বিশাল আকৃতির একাধিক দালান। মাঝে বিশাল সবুজ চত্বর দেখেই মনে হয় বসে পরি ঘাসের কোমল ছোঁয়া পেতে। কিন্তু মিউজিয়ামে তারাতারি ঢোকার লোভ সমলাতে পারছি না। ২০ রুপি দিয়ে টিকিট কাটলাম। খুব শখ করে ক্যামেরা বের করলাম। কিন্তু ভাগ্য খারাপ ক্যামেরা নিয়ে মিউজিয়ামে ঢোকা যায় না। প্রবেশ পথে রয়েছে সর্বাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আবার জুতা পায়ে প্রবেশ করা যায় না। প্রথমে মন খারাপ লাগলেও পরে তাদের কবিগুরুর প্রতি সম্মান দেখে আমরা খুব মুগ্ধ হই।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারাকানাথ ঠাকুর তার দাদা নীলমনি ঠাকুর এই বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত করেন। বর্তমানে পুরো এলাকাটি ‘জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি’ নামে বিখ্যাত। তবে এখন ‘জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি’ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপ্রাঙ্গণ। প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢোকার ঠিক বাঁ দিকের দালানটি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রবেশপথের ডান দিকের একটু ভেতরে একচালা গ্যারেজে রাখা আছে কবির ব্যবহৃত গাড়ি। খোলা থাকলে এই জায়গা প্রতিদিন অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতিতে মুখর হয় ওঠে। তার সঙ্গে এখানে আসে বহু রবীন্দ্র ভক্তের দল। সবাই শান্ত। কোনো শোরগোল নেই।
কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলাম কোথা থেকে এসেছেন? জানা গেল কেউ বিহার থেকে, কেউবা পাটনা, যেমন আমি গিয়েছি বাংলাদেশ থেকে। প্রতিদিনই বহু জায়গা থেকে বহু মানুষের দল এখানে আসে। এমনকি বন্ধের দিনও মানুষের উপচেপড়া ভিড় থাকে। তার সঙ্গে এই শহরের অনেকেই প্রতিদিন আসেন। রবীন্দ্র ভাবনা নিয়ে বসে থাকেন জোড়াসাঁকোর বাড়ির এদিক-সেদিক। এখানে কেউবা ব্যস্ত কি যেন লেখার মধ্যে, কেউ অকারণে বসে আছেন সবুজ চত্বরে, কেউবা ঘুরে ঘুরে দেখছেন চারপাশ। আবার অনেকে একসঙ্গে গোল করে বসে আলোচনায় মশগুল। তবে সবার চোখে-মুখে কী এক অপার শান্তি। তবে মনে রাখতে হবে, ছুটির দিনে সব খোলা থাকে না। নিচতলায় টিকেট কেটে, সিঁড়ি ঘরের নিচের লকারে ক্যামেরা, মোবাইল, ব্যাগ এসব রেখে, জুতো খুলে যেতে হয়।
আমরা বাড়ির ওপর তলায় গেলাম। ‘আমি কান পেতে রই, ও আমার আপন হৃদয় গহন দ্বারে...’। কোথায় যেন মৃদু শব্দে সঙ্গীত বেজে চলেছে অসাধারণ পরিবেশ। সেই মূর্ছনায় আমি কান পেতে এগিয়ে যাই। ধীরে ধীরে ভেতরে ঢুকি, একসময় সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাই, দেখতে পাই রবিঠাকুরের ব্যবহৃত জিনিসপত্রগুলো উপরতলায় বিভিন্ন ঘরে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। শুরুতেই কবিগুরুর খাবার ঘর। এরপর শয়নকক্ষ। ভেবেছিলাম খুব একটা বড় হবে না। কিন্তু ধীরে ধীরে এই ঠাকুর কুটিরেই আবিষ্কার করা গেল বিশ্ব সাহিত্যে কবিগুরুর মতই বিশাল এই বাড়ি। প্রতিটি ঘরেই রয়েছে রবিঠাকুরের স্মৃতিচিহ্ন। কোনো কোনো ঘরে তাঁর ব্যবহৃত পোশাক, আরাম কেদারা, বইপত্র, বিলেত থেকে আনা নানা জিনিসপত্র। রয়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ছবি। একটি ঘরে রয়েছে রবিঠাকুরকে নিজ হাতে লেখা মৃণালিনী দেবীর চিঠি, তার ওপর মৃণালিনী দেবীর একটি বড় ছবি টানানো। এই ঘরেই মৃণালিনী দেবীর শেষ শয্যা পাতা হয়েছিল। গোটা ঠাকুর বাড়িতে প্রতি মুহূর্তে বাজছে তার সংগীতের অসাধারণ সব সুর।
খাবার কক্ষটিও দেখে মনে হলো কবি এখানেও খেতে খেতে গাইতেন। কারণ খাবার টেবিলের ধরনটাও সংগীত কক্ষের মতো করে সাজানো। পরের ঘরটিতে কবি শুয়ে কাটাতেন জীবনের শেষ সময়। সেখান থেকে বের হয়েই দেখা গেল কলকাতার বিখ্যাত বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারে প্রকাশিত কবির জীবনের শেষ দিনটির কথা। ১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট প্রকাশিত আনন্দবাজার দেখে একটু অবাকই হতে হলো। সেখানে লেখা আজ প্রকাশিত পত্রিকার সংখ্যা ৬৫ হাজার। পত্রিকার পাতাজুড়েই কবির শেষ যাত্রার সংবাদ আর কবিতা। তখনকার পত্রিকার প্রকাশ সংখ্যা দেখে বুঝা যায় কতটা জোরালো ছিল শিক্ষার মান। ঠিক সেখানেই একটি কক্ষে কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। কালো ফ্লোর মাঝে জল চৌকিতে জ্বলছিল তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের সময় থাকা ধুপবাটি।
সেখান থেকে বের হয়ে কিছু দূর যেতেই দুই দরজার ছোট্ট একটি ঘর। সেখানে আলো খুব একটা নেই। দরজার বাইরে লেখা, ‘এখানেই জন্ম নিয়েছিল কবি ঠাকুরের সকল বংশধর।’ মানে কবি গুরু আঁতুর ঘর। এই আলোহীন ঘর থেকেই বিশ্বকে আলোকিত করেছেন গল্প, কবিতা, উপন্যাস, সংগীতে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলার প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি। গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্তাবোধিনী পত্রিকায় তাঁর অভিলাষ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতের বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে বৃটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়।
রবীন্দ্রনাথ যে বোটে করে ঘুরে বেড়াতেন পদ্মায় সেই বোটের একটি চমৎকার প্রতিকৃতি আছে এখানে, বাংলাদেশ সরকারের উপহার হিসেবে। তিন তলায় মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ আর সারদা দেবীর ঘরসংসার। সারদা দেবী ছিলেন আমাদের যশোরের মেয়ে। ৮ বছর বয়সে তিনি ঠাকুরবাড়ি এসেছিলেন বউ হয়ে। আমার মনে হয় ঠাকুরবাড়ির দুজন দুঃখী মানুষের একজন সারদা আর অন্য জন মৃণালিনী। সারদা তো তবু নিজের নামটা নিয়ে বেঁচেছিলেন, মৃণালিনীর নামটিও বদলে দিয়েছিল ঠাকুর বাড়ি। খুলনার ফুলতলার বেনীমাধব রায় চৌধুরীর মেয়ে ভবতারিনী দেবী দশ বছর বয়সে যেদিন এ বাড়িতে বউ হয়ে এসেছিলেন তখন রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ২২। আটপৌরে ভবতারিনী নাম ঠাকুর বাড়িতে মানাবে কেন? রবীন্দ্রনাথের বড় দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথের পছন্দে তাঁর নতুন নাম হলো মৃণালিনী। এরপর যে ১৯ বছর তিনি বেঁচে ছিলেন, সেখানে তাঁর নিজস্ব ভূমিকার কথা খুব একটা জানা যায় না। সারদা দেবীর জীবন তাও মৃণালিনীর চেয়ে একটু ভালো ছিল, কর্তার দেখা খুব একটা না পেলেও সংসারের কর্তৃত্ব ছিল তাঁর।
রবীন্দ্রভারতী মিউজিয়ামের লাইব্রেরিটিও সমৃদ্ধ নানান দুষ্প্রাপ্য বইয়ে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নাল এখানে নিয়মিত আসে। এখানে সন্জীদা খাতুনের বই দেখে ভালো লাগল। মোট ৪টি ভবনের ১৮টি গ্যালারিজুড়ে রবীন্দ্রভারতী মিউজিয়াম। ১৯৪১-এর ৩০ জুলাই মাসে এ ঘরেই কবিগুরু তাঁর শেষ কবিতা, ‘তোমার সৃষ্টির পথ’-এর ডিক্টেশন দিয়েছিলেন। এর মাত্র সাতদিন পর তিনি পাড়ি জমান না-ফেরার দেশে।
পাঁচটায় বন্ধ হয়ে যায় ঠাকুরবাড়ির দরজা। তাই অগত্যা বেরিয়ে আসতে হয়। বের হয়ে আমরা কিছু ছবি তুলি। রবীন্দ্রনাথের বাড়ির সবকিছুই মনে হয় কোনো না কোনোভাবে আমাদের চেনা জানা। এর কারণ খুঁজে পেলাম বেরিয়ে আসার সময় মূল প্রবেশদ্বারের পাশে লেখা পরিচয় কবিতার শেষ ক’টি লাইন দেখে: সেতারেতে বাঁধিলাম তার, গাহিলাম আরবার, মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক, আর কিছু নয়, এই হোক শেষ পরিচয়।
ঢাকা থেকে জোড়াসাঁকো যাওয়ার তথ্যসমূহ
ইন্ডিয়ান হাই কমিশন ঢাকা ওয়েব সাইডে ভিসার ই-টোকেন ফরম পাওয়া যায়। যেখানে কোনপথে আপনি যাবেন তার একটি অপশন রয়েছে। জোড়াসাঁকো যেতে হলে রেলপথ উত্তম। তবে ভারতীয় ভিসায় এখন যে কোনো দুটি পথের অনুমোদন নিতে পারেন। রেলপথ সঙ্গে বাই এয়ার। নতুবা বাই রোড সঙ্গে বাই এয়ার। এখানে আপনি রেলে গেলেন বাই এয়ারে ফিরতে পারেন। অথবা বাই এয়ার গেলেন বাই রোডে ফিরতে পারেন। যারা লেখালেখি করেন তাদের জন্য বাই ট্রেন অধিক উত্তম। এসি, নন এসি কিংবা তিনজনের একটি কেবিন খুব বেশি ভাড়া নয়। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য আপনাকে ভিসা সংযুক্ত পাসপোর্ট নিয়ে কমলাপুর রেল স্টেশন যেতে হবে। সেখানে একটি আলাদা বুথ রয়েছে। নির্দিষ্ট একটি ফরম পূরণ করে পাসপোর্টসহ কাউন্টারে জমা দিতে হবে। আপনার তারিখ মোতাবেক আসন থাকলে সহজেই টিকিট পেয়ে যাবেন। অবশ্য তার জন্য অন্তত সপ্তাহখানেক আগে যাওয়া ভালো।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে কলকাতা চিতপুর স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টার এই যাত্রাকালে সব রকমের গরম খাবার রেল কেন্টিনেই পাওয়া যায়। চিতপুর স্টেশন থেকে জাকারিয়া স্ট্রিট খুব বেশি দূরে নয়। সঙ্গে তেমন কোনো ভারি মালামাল যদি না থাকে তবে বাস কিংবা মেট্রো রেলে যাওয়া যায়। তবে কলকাতায় প্রথম ভ্রমণ হলে ট্যাক্সি নিয়ে নেয়া ভালো। ট্যাক্সিতে মিটারে যেতে পারেন কিংবা কন্ট্রাকে যেতে পারেন। তবে ১৫০ রুপি থেকে ২০০ রুপি নিয়ে নেবে, যেভাবেই যান। যেখানে বাসে বা মেট্রো রেলে মাত্র আট-দশ রুপিতে সম্ভব। এখানে বলে রাখা ভালো বাসে বা মেট্রো রেলে গেলে বেশকিছু পথ হেঁটে যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে।