ঢাকা     শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২ ১৪৩১

একাকী এক কথাসাহিত্যিক

অঞ্জন আচার্য || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৪, ২১ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
একাকী এক কথাসাহিত্যিক

অঞ্জন আচার্য: মোবাইলে কল দিতেই অপর পাশ থেকে ভেসে এলো এক নারীকণ্ঠ। ভাবলাম, ভুল নম্বরে ফোন দিয়ে ফেললাম কি না। জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কি লেখক বশীর আল-হেলাল স্যারের নম্বর? উত্তর এলো, হ্যাঁ।

তাঁর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছে প্রকাশ করতেই অপর প্রান্ত থেকে জানাল, কী প্রয়োজন?

বললাম,আমি তাঁর একটি সাক্ষাৎকার নিতে চাই রাইজিংবিডি’র জন্য। নারীকণ্ঠ বললেন, তিনি তো খুব অসুস্থ, কথা বলতে পারেন না। অগত্যা বলতে বাধ্য হলাম, তাহলে দেখা করতে পারি কি? ইতিবাচক উত্তর এলো- হ্যাঁ, আসতে পারেন, তবে আবারও বলছি, বশীর সাহেব কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।

অবশেষে সময় নির্ধারণ হলো, কোনো এক শুক্রবার সকালে তাঁর মোহাম্মদপুরের বাসায় যাওয়ার। যথাসময়ে বাড়িতে উপস্থিত হওয়ার পর আন্তরিকতার সঙ্গেই অভ্যর্থনা জানালেন বশীর স্যারের স্ত্রী ফিরোজা বেগম। পৌঢ়া এই নারী জানালেন, সেদিন আমার সঙ্গেই আপনার কথা হয়েছিল।

কিছু সময় অপেক্ষা। অতঃপর এলেন শুভ্রকেশের শীর্ণ মানুষটি। দেখে বিশ্বাস হওয়ার জো নেই, এই মানুষটির হাত দিয়েই রচিত হয়েছে বাংলা সাহিত্যের অনন্য সব সৃষ্টি। কথা বলার সুতীব্র বাসনা তাঁর। কিন্তু মুখ দিয়ে গোঁ গোঁ শব্দ ছাড়া আর কিছুই উচ্চারিত হলো না। ওই অবোধ্য শব্দ উদ্ধার করার সাধ্য আমার কেন, কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। লেখকের স্ত্রীর কাছেই জানলাম তাঁর বর্তমান অবস্থার কথা। ভালো নেই তিনি। মোটেও ভালো নেই আমাদের বশীর আল-হেলাল। এমনকি তাঁর খবরটুকু নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না কেউ। লেখকের অতীতের অনেক কিছু জেনে নিলাম ফিরোজা বেগমের মুখ থেকে। কিছু পেলাম লেখকের বইপত্র ঘেঁটে। বাকি সব সংগ্রহ করলাম তাঁর ওপর লেখা বিভিন্ন নিবন্ধ পড়ে।

ভারত উপমহাদেশ তখন থেকেই ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ। পূর্ব-পুরুষেরা বারো প্রজন্ম আগে ধর্ম প্রচারের জন্য ইরাকের বাগদাদ থেকে এসেছিলেন সেই ভারতে। সেখানে এসে তাঁরা বসবাস শুরু করেন মুর্শিদাবাদ এলাকায়। বাবা সৈয়দ মুহাম্মদ আলী আসমার। তিনি শিক্ষালাভ করেন উত্তর ভারতের দেওবন্দ, বেনারস, রামপুর ইত্যাদি জায়গায়। ওইসব অঞ্চলে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত হন। আরবি-ফারসি-উর্দু ভাষায় তিনি ছিলেন পণ্ডিত। ভাষার ওপর অসাধারণ পাণ্ডিত্যের জন্য তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র ভারতে। এছাড়া তিনি ছিলেন মৌলবী ও ইউনানী পশুচিকিৎসক।

শক্তিমান এই কথাসাহিত্যিকের জন্ম ১৯৩৬ সালের ৬ জানুয়ারি সেই মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামের মীর পাড়ায়। কান্দি মহকুমার ভবপুর থানার অন্তর্গত ও সালার রেলস্টেশনের কাছেই অবস্থিত তালিবপুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি গ্রাম। ওই গ্রামে জন্মেছিলেন প্রখ্যাত পল্লীগীতিশিল্পী আব্দুল আলীম ও ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদ আবুল বরকতসহ শত কবি-সাহিত্যিক, সংগ্রামী ও বিপ্লবী।

বশীর আল-হেলালের বাবা ছিলেন প্রতিষ্ঠিত লেখক। আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষায় লেখালেখি করতেন। ফারসি ভাষার তিনি শক্তিমান সাহিত্যিক ছিলেন। বাংলা সাহিত্য তাঁর জানাশোনা ছিল কম। বাংলা ভালো বলতে পারলেও লিখতে পারতেন না। বশীর আল-হেলালের মায়ের নাম আ-মাতার রোকেয়া (রোকেয়া খাতুন)। বাংলা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাননি তিনি। কেবল প্রথাগত ভাষাজ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, বশীর আল-হেলালের পিতামহ ছিলেন আবুল মুজফফর। দীর্ঘদিন তিনি দার্জিলিঙের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনিও ছিলেন বিশিষ্ট ফারসি কবি। তাঁর মুদ্রিত কবিতার বইও আছে।

সৈয়দ মুহাম্মদ আলী আসমার ও রোকেয়া খাতুনের পরিবারে জন্ম হয় বারোটি সন্তানের। কিন্তু দুঃখের কথা, অধিকাংশই কৈশোর অতিক্রম করার আগেই মারা যায় অকালে। মেয়ে সন্তানের মধ্যে কেবল ওয়াকেফাতুল আহাদ মারা যায় বিয়ে হওয়ার পর। শেষ পর্যন্ত তাঁদের পরিবারে বেঁচেছিলেন তিন ছেলে সন্তান। নেয়ামাল ওয়াকিল (জন্ম ১৯২৬), নেয়ামাল বাসির (জন্ম ১৯৩২) ও নেয়ামাল বশীর (জন্ম ১৯৩৬)। নেয়ামাল ওয়াকিল ছিলেন কথাশিল্পী ও নাট্যকার। ১৯৬৫ সালে তিনি কলকাতায় স্কলারশিপ পেয়েছিলেন। নেয়ামাল বাসির ছিলেন পাকিস্তান সরকারের পার্লামেন্টের সেক্রেটারি। স্বাধীনতার পরে তিনি বাংলাদেশ পার্লামেন্টের সেক্রেটারি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট অনুবাদক, ভাষাবিদ ও সাহিত্যিক। নেয়ামাল বাসির ও নেয়ামাল বশীর- দু'ভাইয়ের নাম প্রায় একই রকম। দুজনই লেখালেখি করতেন। ফলে তাঁদের লেখা যখন বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো তখন পাঠক দ্বিধায় পড়ে যেতেন। এ সমস্যা সমাধানের জন্য নেয়ামাল বশীর পরবর্তী সময়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন বশীর আল-হেলাল। তিনি আমাদের আজকের আলোচ্য ব্যক্তিত্ব।

বাবার কাছেই বশীর আল-হেলালের লেখাপড়ার হাতেখড়ি। ভর্তি হন তালিবপুর পাঠশালায়। এরপর ভর্তি হন তালিবপুর গ্রামের এইচ.ই. হাই স্কুলের প্রাইমারি সেকশনে। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় বশীর আল-হেলালের দুই ভাই চলে আসেন তৎকালীন পূর্ববাংলায়। কিছু দিন পর তিনিও চলে আসেন রাজশাহীতে মেজো ভাইয়ের কাছে। সেখানে এসে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে। রাজশাহীতে এক বছর পড়াশোনা করার পর সেতাবগঞ্জ হাই স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেই স্কুল থেকেই ১৯৫২ সালে মেট্রিক পাস করেন তিনি। তারপর আবার ফিরে যান তিনি জন্মভূমি পশ্চিমবঙ্গে। ওই সময় পাকিস্তানে যাওয়া আসার জন্য ভিসা লাগতো না। তখন তাঁর মামাদের ব্যবসা ছিল কলকাতায়। তিনি কলকাতার সরকারি কলেজে ভর্তি হলেন। শুরু করলেন মামাদের বাড়িতে থাকা। ১৯৫৪ সালে এই কলেজ থেকে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে আই.এ. পাস করেন। এরপর বাংলায় অনার্সে ভর্তি হন জলপাইগুড়ির এ.সি. কলেজে। ওই কলেজ থেকে ১৯৫৭ সালে দ্বিতীয় বিভাগে অনার্স পাস করার পর তিনি চলে যান কলকাতা। সেখানে গিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় এম.এ. ভর্তি হন। একই সময় তিনি যুক্ত হন বামপন্থী রাজনীতিতে। এই আদর্শিক ছাত্র রাজনীতিতে তিনি যুক্ত ছিলেন অনেকদিন। এক পর্যায়ে তিনি কলকাতা কমিউনিস্ট পার্টির লালকার্ডধারী সদস্যপদ লাভ করেন। তখনকার সময় লালকার্ড পাওয়া কোনো সহজ বিষয় ছিল না।

যা হোক, ১৯৫৬ সালে বশীর আল-হেলাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে বাংলায় এম.এ. পাস করেন। ততদিনে লেখক হিসেবেও তিনি সুনাম অর্জন করেছেন। ছাত্র রাজনীতি ও কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির পাশাপাশি প্রচুর পড়াশোনা করতেন বিভিন্ন বিষয়ে। একই সঙ্গে দু’হাতে লেখালেখি করতেন। সেসব লেখা প্রকাশিত হতো বিভিন্ন পত্রিকায়। সেসময়ই কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গল্পের বই ‘স্বপ্নের কুশীলব’।

এম.এ. পাস করার পর বশীর আল-হেলাল কলকাতায় হজ কমিটিতে চাকরি নেন। তখন মাওলানা আযাদের ছেলে আকরাম খান কলকাতা থেকে একটি পত্রিকা বের করতেন। পত্রিকাটি সপ্তাহে ৩ দিন বের হতো। এটা ছিল মূলত মুসলমানদের পত্রিকা। হজ কমিটিতে চাকরির পাশাপাশি তিনি এই পত্রিকায়ও কাজ করতেন। সাংবাদিকতা ও চাকরির পাশাপাশি লেখালেখি অব্যাহত রাখেন তিনি। বাবা ফারসি, উর্দু ও আরবি ভাষায় লেখালেখি করলেও বশীর আল-হেলাল ছোটবেলা থেকেই মাতৃভাষা বাংলায় লিখতেন।

১৯৬৮ সালের শুরুর দিকে মাকে নিয়ে তিনি চলে আসেন ঢাকা। পরিস্থিতি তখন ভালো ছিল না বলে ভারত থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল তাঁদের। তাঁর মেজো ভাই তখন ঢাকায় পাকিস্তান সরকারের চাকরি করতেন। ঢাকায় আসার পর তাঁর চোখের সামনে একে একে ঘটে গেল ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। আর এসব আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন তিনিও।

১৯৬৯ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রী ফিরোজা বেগম ছিলেন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। দেশবিভাগের পর তাঁদের পরিবারও ভারত ছেড়ে চলে আসেন এই বঙ্গে। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে।

ঢাকায় মাকে নিয়ে আসার পর বশীর আল-হেলাল লেখা শুরু করেন বিভিন্ন বইয়ের সমালোচনা, যা ওই সময় খুব কমই লেখা হতো। আর শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী মহল ছাড়া এসব বিষয় তেমন কেউ পড়তেন না। অতএব বছরখানেকের মধ্যে শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী মহলে বেশ পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। ১৯৬৯ সালের শুরুতে সহ-অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হলেন বাংলা একাডেমিতে। বাংলা একাডেমির পরিচালক পদে দায়িত্ব শেষে ১৯৯৩ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছর তিনি বাংলা একাডেমিতেই নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।

গ্রামীণ ও শহুরে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনকে আরো অর্থবহ করতে জীবনধর্মী ও সমাজসচেতনতামূলক ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখেছেন তিনি। তাঁর সকল সৃষ্টিতে ফুটে উঠেছে প্রধানত গ্রামীণ ও শহুরে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন ধারণের চিত্র। অসংখ্য গল্প লিখেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর ৬টি গল্পের বই প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো হলো- ‘স্বপ্নের কুশীলব’, ‘প্রথম কৃষ্ণচূড়া’, ‘আনারসের হাসি’, ‘বিপরীত মানুষ’, ‘ক্ষুধার দেশের রাজা’, ‘গল্পসমগ্র-প্রথম খণ্ড’। তিনি বেশ কয়েকটি উপন্যাসও লিখেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর ৬টি উপন্যাস বেরিয়েছে। সেগুলো হলো- ‘কালো ইলিশ’, ‘ঘৃতকুমারী’, ‘শেষ পানপাত্র’, ‘নূরজাহানদের মধুমাস’, ‘শিশিরের দেশে অভিযান’ ও ‘যে পথে বুলবুলিরা যায়’।

অন্যদিকে বাংলাদেশে যে ক’জন প্রাবন্ধিক, গবেষক রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম নাম বশীর আল-হেলাল। বাংলা একাডেমিতে চাকরি করার সময় প্রবন্ধ-গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। ভাষা-সাহিত্য বিষয়ে গবেষণা করে তিনি বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর বইও লিখেছেন। কাজ করেছেন বানান, উচ্চারণ ও পরিভাষা প্রয়োগের বিষয়ে প্রশিক্ষণের উপরেও। তাঁর প্রবন্ধ-গবেষণার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই হলো: ‘আমাদের কবিতা’, ‘বাংলা গদ্য’, ‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস’, ‘বাংলা একাডেমীর ইতিহাস’, ‘আদর্শ বাংলা বানান’, ‘বাংলা ভাষার নানান বিবেচনা’, ‘বাংলা উচ্চারণ’, ‘কিশোর বাংলা উচ্চারণ মঞ্জুরী’, ‘ভাষা আন্দোলনের সেই মোহনায়’ ও ‘আমাদের বিদ্বৎসমাজ’।

প্রশাসনে বাংলা ভাষা প্রচলন ও ভাষা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও তাঁর যথেষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। স্বাধীনতার পরে সরকারি অফিস-আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলনের জন্য বিশেষ করে বাংলা একাডেমির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এসময় তিনি অফিসের কাজের যাবতীয় কাগজপত্র বাংলায় অনুবাদ করে দেন। বাংলা একাডেমির ছোটদের অভিধান সম্পাদনা পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। কাজ করেন বাংলা একাডেমির প্রশাসনিক পরিভাষা’র সংকলন সম্পাদনার।

অনুবাদের কাজেও বশীর আল-হেলাল ছিলেন একনিষ্ঠ। শুধু ইংরেজি নয়, উর্দু, ফারসি ভাষায়ও অনুবাদ করেছেন তিনি। তাঁর প্রকাশিত অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে অন্যতম হলো : ‘এশিয়ার লোককাহিনী’ (প্রথম খণ্ড), ‘যুগোস্লাভিয়ার ছোটগল্প’, ‘দেশে আসা’ এবং ‘হামিদুর রহমান রিপোর্ট’।

কবি হিসেবে তেমন পরিচিত না হলেও বশীর আল-হেলাল বিভিন্ন সময় বেশ কিছু কবিতাও লিখেছেন। কবিতার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন নমনীয়। তাঁর মতে, কবিতার চিরায়তকে কম-বেশি হোক সবসময় প্রবাহিত রাখা চাই। এমনকি কবিতা লেখার জন্য নিজস্ব একটা আঙ্গিক তৈরি করে নিয়েছেন তিনি। এর নাম রাখেন ‘ভণিতা কবিতা’। অর্থাৎ ১০ লাইনের এই কবিতাগুলোর শেষের দুই লাইনের মধ্যে কবির নাম থাকে। কবিতার প্রতিটি লাইনের শেষ শব্দের ছন্দের সঙ্গে পরের লাইনের শেষ শব্দের ছন্দের মিল থাকে।

বাংলা একাডেমি থেকে অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন পত্রিকায় রাজনৈতিক কলাম লেখা শুরু করেন বশীর আল-হেলাল। এক ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকাতেই তাঁর ১৬৫টি নিবন্ধ ছাপা হয়। এছাড়া অন্যান্য পত্রিকাতেও তাঁর বেশ কয়েকটি নিবন্ধ ছাপা হয়, যার সবই ছিল রাজনৈতিক নিবন্ধ। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: আলাওল সাহিত্য পুরস্কার-১৯৯১, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-১৯৯৩, লেখিকা সংঘ পুরস্কার, গৌরী ঘোষাল স্মৃতি সম্মান পুরস্কার-২০০২ কলকাতা এবং অধ্যাপক আবুল কাশেম পুরস্কার-২০০৪।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ আগস্ট ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়