ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কালবৈশাখীতে ঝরল ৪ শতাংশ আম

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৭, ১ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কালবৈশাখীতে ঝরল ৪ শতাংশ আম

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহীতে কালবৈশাখীতে গাছের চার শতাংশ আম ঝরে গেছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। তবে চাষিরা বলছেন, ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বলছেন, গতকাল রোববার সন্ধ্যার ঝড়ের পর তারা বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে নিশ্চিত হয়েছেন গাছের ৪ শতাংশ আম ঝরে গেছে। অনেক গাছের ডাল, এমনকি গাছ পর্যন্ত ভেঙে গেছে। এ কারণে আমের উৎপাদনও চার শতাংশ কমবে। তবে এতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে নাকি ঘাটতি থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

রাজশাহীর ১৬ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমিতে এবার আম বাগান রয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে কৃষি বিভাগ। ঝড়ের আগ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ব্যাপারে দারুণ আশাবাদি ছিলেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা। কিন্তু হঠাৎ কালবৈশাখী কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।

সোমবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর শালবাগান মোড়ে কাঁচা আম বিক্রি করছিলেন জুলফিকার আলী (৪৫) নামে এক আম চাষি। জেলার মোহনপুর উপজেলা থেকে আসা এই আমচাষি জানিয়েছেন, ৪০টি গাছ নিয়ে তার একটি আমের বাগান আছে। রোববার সন্ধ্যায় তার বাগানের গাছ থেকে ৪ মণ আম ঝরে পড়েছে। বাজারে এনে সেগুলো আচারের জন্য ৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটের আমচাষি মহররম (৩৫) আলী বলেন, ‘এতো দীর্ঘ সময় ধরে ঝড় জীবনে দেখিনি। এই ঝড়ে আমার বাগানের অর্ধেক আম ঝরে গেছে। আমার বাগানের মতো সব বাগানেরই একই অবস্থা। ঝড়ে আমের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। এতে চাষিদের মাথায় হাত উঠেছে।’

বাঘা উপজেলার মনিগ্রামের আমচাষি মিজানুর রহমান (৫০) জানান, বাগানে প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। আম বেচে সেই টাকাই উঠবে কী না তা নিয়ে সন্দেহ আছে তার। তাই আমচাষিদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি দাবি করেন, যে পরিমাণ আম ঝরেছে, সেগুলো এমনিতেও ঝরতো। এখন পরিচর্যা ভালো করলে উৎপাদনে তেমন ঘাটতি থাকবে না। তারপরেও ক্ষতিগ্রস্ত আমচাষিদের তালিকা করা হচ্ছে। সে তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে চাষিরা ক্ষতিপূরণ পেতেও পারেন।

রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহীতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায় কালবৈশাখী। ঝড়ের সময় পাঁচ মিনিট বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার। কালবৈশাখী এসেছিল দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ থেকে। ওই পাঁচ মিনিটেই বেশিরভাগ আম ঝরে পড়ে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

এদিকে বছরের প্রথম এই কালবৈশাখীতে গোদাগাড়ী উপজেলায় গাছ মাথায় পড়ে এক কৃষকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রাজশাহী মহানগরীর দরগপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীতে নৌকাডুবিতে দুই শিশুসহ পাঁচজন নিখোঁজ হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।




রাইজিংবিডি/রাজশাহী/১ মে ২০১৭/তানজিমুল হক/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়