ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

রংপুরের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রংপুরের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনে ভোট গ্রহণের দিন বাকি রয়েছে সপ্তাহখানেক। ভোট গ্রহণের দিন ঘনিয়ে এলেও বিএনপি জোট কিংবা মহাজোটের হাইকমান্ডের নেতাদের নির্বাচনকে ঘিরে কোন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা।

সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করার ঘোষণা দিলেও মাঠে দেখা যায়নি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের।

স্বতন্ত্রপ্রার্থী এরশাদের ভাতিজা আসিফ সাবেক হয়ে যাওয়া কিছু  জাপা নেতাকে নিয়ে মাঠে রয়েছেন।

লাঙ্গল প্রতীকে জাপার সাদ এরশাদকে স্থানীয় কিছু নেতাকর্মী নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াতে দেখা গেছে।

তবে সাদ এরশাদ এখনো জাপার হাইকমান্ডের গুরুত্বপূর্ণ কোন নেতাকে প্রচারণার সময় পাশে পাননি। অপরদিকে বিএনপি’র রিটা রহমানের পক্ষেও নেই হাইকমান্ডের নেতারা।

তবে বিএনপি’র সূত্র বলছে দু একদিনের মধ্যে দলের মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসতে পারেন রংপুরে।

৫ অক্টোবর রংপুর সদরের উপ-নির্বাচনের ভোটে লড়ছেন জাতীয় পার্টি, বিএনপি, স্বতন্ত্রসহ ছয় প্রার্থী। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সাধারণ ভোটারদের মাঝে নানান প্রশ্ন উদয় হচ্ছে। একাধিক ভোটার বলেন, জাতীয় পার্টির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন। কিন্তু এখানে নির্বাচনী প্রচারণায় মহাজোটের কেন্দ্রীয় নেতাকে দেখা যায়নি।

জাতীয় পার্টির অন্যতম শরীক আওয়ামী লীগের কোন কেন্দ্রীয় নেতা তো দূরের কথা খোদ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কোন নেতাকে সাদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা যায়নি।

ফলে অনেকে বলাবলি করছে এই নির্বাচন নিয়ে  জাপা কিংবা আওয়ামী লীগ অথবা মহাজোটের অন্যান্য শরীক হাইকমান্ডের কোন আগ্রহ নেই। তাই ঢাকা থেকে কষ্ট করে প্রচারণায় কোন কেন্দ্রীয় নেতা রংপুরে আসছেন না।

একই অবস্থা বিএনপি’র রিটা রহমানের। তিনিও তার প্রচারণায় কেন্দ্রীয় কোন নেতাকে পাচ্ছেন না। রিটা রহমানকে মনোনয়ন দেয়ায় খুশি হতে পারেনি তৃণমূল বিএনপি’র নেতা কর্মীরা। ফলে হাতে গোনা কয়েকজনকে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন রিটা রহমান। এসময় কেন্দ্রীয় কোন নেতাকে পাশে পেলে প্রচারণায় গতি পেত বলে অনেকে মনে করছেন। কিন্তু বাস্তবে এর কোন প্রতিফলন দেখতে পায়নি ধানের শীষ প্রতীকের এই প্রার্থী।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রিটা রহমানের পক্ষে নির্বাচনে প্রধান সমন্বয়নকারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি ১০ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। বর্তমানে নির্বাচন সমন্বয় টিমের সদস্য রংপুর বিভাগ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুদু  নির্বাচনের বিষয়টি দেখছেন।

এ প্রসঙ্গে আসাদুল হাবিব দুদু রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নির্বাচনে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে। তার অনুপস্থিতিতে আমি সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আমি বর্তমানে রংপুরে অবস্থান করে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কাজ করছি।’

এ প্রসঙ্গে জেলা গণফোরামের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমরা বিএনপি জোটের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছি। এবার এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে  নির্বাচনের বিষয়ে কোন নির্দেশনা আসেনি। তাই আমরা ধরে নিয়েছি হাইকমান্ডের রংপুরের নির্বাচন নিয়ে কোন আগ্রহ নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জোটের শরীক অন্যান্যদের সাথে কথা বলে জেনেছি তারাও কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের বিষয়ে কোন নির্দেশনা এখনো পাননি।’

এদিকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করে নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকে লাঙ্গলের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়নি।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুর রহমান  টুটুল রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বিষয়টি তা নয়। আমরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে জাপা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছি। এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত।’

অপরদিকে জাপা মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘খুব দ্রুত আমরা নির্বাচনী এলাকার বাইরে একটি সভা করব। সেখানে দলের কো- চেয়ারম্যান রওশন এরশাদও থাকার কথা। কিন্তু তার কোন লক্ষণ দেখা না দেয়ায় দলের নেতাকর্মীদের উৎসাহে অনেকটা ভাঁটা পড়েছে বলে জাপা নেতাকর্মীরা মনে করছেন।’

জাপা নেতাকর্মীরাও মনে করছেন এটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। তাই হাইকমান্ডের তেমন একটা আগ্রহ নেই।

এদিকে শনিবার নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নির্বাচনী প্রচারণা চালান এরশাদ পুত্র রাহগীর আল-মাহি সাদ।

প্রচারণায় তিনি বলেন বলেন, ‘ভোটে জিতলে রংপুরে থেকেই রংপুরের সমস্যাগুলো সমাধান করব। সংসদে এখানকার সমস্যা গুরুত্বসহকারে তুলে ধরব।’

অন্যদিকে, রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সভা করতে সোমবার রংপুরে যাবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা।

রির্টানিং অফিসার জিএম সাহতাব উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘রংপুর সদর আসনের উপ- নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সভা করতে সোমবার রংপুর আসবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জিএম সাহতাব উদ্দিন। সকাল ১১টায় তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা করবেন।’



রংপুর/নজরুল মৃধা/জেনিস

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়