ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

রাইজিংবিডিতে খবর প্রকাশের পর শিকল মুক্ত হলো ৩ কিশোর

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৭ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাইজিংবিডিতে খবর প্রকাশের পর শিকল মুক্ত হলো ৩ কিশোর

গাজীপুরের কালীগঞ্জের তুমলিয়া ইউনিয়নের ভাইয়াসূতি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার তিন শিকলে বন্দী ছাত্রকে শিকল মুক্ত করা হয়েছে।

বুধবার সকালে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে খবর প্রকাশের পর বিকেলেই ওই  তিন কিশোরকে শিকল মুক্ত করেন কালীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মো. শিবলী সাদিক।

গাজীপুরের কালীগঞ্জের তুমলিয়া ইউনিয়নের ভাইয়াসূতি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্র ইফাদ, ইয়াসিন ও আজিজুল। এদের তিনজনের বয়সই তেরো বছর। তাদের প্রতিদিনের জীবন রুটিন মাফিক পরিচালিত হতো না। দিনের ২৪ ঘণ্টাই কাটতো লোহার শিকলে তালাবদ্ধ অবস্থায়। আর এভাবেই প্রতিদিনের খাওয়া-দাওয়া, টয়লেট-গোসল, লেখাপড়া, ঘুম সবই চলছিল।

বিষয়টি শুরুতে নজরে আসে স্থানীয় উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের। পরে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি খবর প্রকাশ করে। পরে সেই সংবাদই নজরে আসে ইউএনও মো. শিবলী সাদিকের।

ইউএনও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ভাইয়াসূতি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় যান। সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান এবং ওই মাদ্রাসার হেফজেখানায় অধ্যয়নরত কিশোর ইফাদ, ইয়াসিন ও আজিজুলের পায়ের তালাবদ্ধ লোহার শিকল মুক্ত করেন। পাশাপাশি এই ধরণের ঘটনার পূনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটিকে সতর্ক করেন।   

স্থানীয়রা বলেন, লোহার শিকলে তালায় অবরুদ্ধ শৈশব নয়। হাসি, খেলা আর আনন্দের ছলে হোক শিশুদের শিক্ষা জীবন। কোন শিক্ষকের নির্যাতনের শিক্ষা নিয়ে তারাও যেন ওই শিক্ষকদের মত না হয়ে যায়। পাশাপাশি মানুষরুপী ওই অমানুষদের যথাযথ আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান স্থানীয়রা।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ইউএনও মো. শিবলী সাদিক বলেন, আপনাদের এই ধরণের অনুসন্ধানী এবং সাহসী প্রতিবেদনের জন্য আমাদের কাজ করা সহজ হয়। বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। প্রাথমিকভাবে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।

ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক ও মাদ্রাসা পরিচালনা পর্যদের সাথে কথা বলেছি। সেই প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির বাকী দু’জন হলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর-ই-জান্নাত ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন। সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা প্রয়োজনীয় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিব।




কালীগঞ্জ, গাজীপুর/রফিক সরকার/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ