ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

নদী থেকে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে সেতু-মহাসড়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৫০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নদী থেকে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে সেতু-মহাসড়ক

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পৌলী নদীতে ভেকু বসিয়ে চার পয়েন্টে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন ও বিক্রির মহোৎসব চলছে।

আর এতে করে চরম হুমকির মুখে পড়েছে নদীর ওপর নির্মিত রেল সেতু ও ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধ সেতু মহাসড়কে অবস্থিত ব্রিজ।

দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের ফলে সেতুর দুইপাশ থেকে মাটি ধসে গিয়ে বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, অবৈধ মাটি কাটায় আশপাশের এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক ভাঙন হয়। ইতোপূর্বে ভাঙনে শতাধিক পরিবারের ভিটেবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। দুইবছর আগে পৌলী রেলসেতুর দু’পাশের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তির শিকার হন হাজার হাজার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে জেলার কালিহাতীর পৌলী নদীর ওপর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহাসড়ক ও রেল সেতুর অদূরে ভেকু বসিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। অসংখ্য ট্রাক ভর্তি মাটি যাচ্ছে দেশের বিভিন্নপ্রান্তে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাইড রক্ষা বাঁধটিও রয়েছে হুমকির মুখে। ভেকু বসিয়ে মাটি কাটার ফলে গ্যাসপাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভেকু বসিয়ে মাটি কাটার কারণে দুইবার তিতাস গ্যাসের মূল পাইপলাইন ফেটে ভেসে ওঠে। এতে টাঙ্গাইল, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষকে পোহাতে হয়েছে চরম দুর্ভোগ। ওই সময় নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বেশ কিছুদিন বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ থাকে। পরে পাইপলাইন মেরামত করা হলে পুনরায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে প্রভাবশালীরা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, সরকার দলীয় লোকজন প্রভাব খাটিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলে, এ প্রশ্ন সকলের।  বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সরকারি স্থাপনাসহ এই জনপদের বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যাবে।

এলাকাবাসী আরো জানান, বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। এতে যে কোন সময় সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, পুংলী নদীতে রেল ও মহাসড়কের পাশাপাশি দুইটি বড় সেতু থাকায় এলাকাটিকে স্পর্শকাতর ও বিপদজনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ কারণে এলাকাটি বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম) প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) আওতারও বাইরে রাখা হয়েছে। এখানে বালু উত্তোলনের জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি। বালু উত্তোলনে বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হবে।

এ ব্যাপারে কালিহাতী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান জানান, এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পৌলী নদীর মাটি উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আবার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সিফাত/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়