ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মেহেরপুরে করোনা আতঙ্কে হাসপাতাল ছাড়ছেন রোগীরা!

মেহেরপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:১৩, ২ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মেহেরপুরে করোনা আতঙ্কে হাসপাতাল ছাড়ছেন রোগীরা!

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বর, কাশি নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ওই হাসপাতাল ছাড়ছেন রোগীরা। এমনকি সেখানকার চিকিৎসক ও নার্সরাও সেবা দিতে ভয় পাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) রাতে ওই ব্যক্তিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই রোগী করোনায় আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করবে আইইডিসিআর।

এদিকে, ওই ব্যক্তির বাড়ির পাশের ১০টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।

ওই রোগীর ছেলে বলেন, করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীরা গত সোমবার আমার বাবাকে পর্যবেক্ষণ করেন। করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই, জানিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন তারা। সোমবার সন্ধ্যায় তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়ে বিদায় করেন চিকিৎসক। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী মঙ্গলবার তাকে একটি ইনজেকশন দিতে চাইলে গ্রাম্য চিকিৎসকরা বাড়িতে আসতে রাজি হননি। নিরুপায় হয়ে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে ভর্তি করেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে চারতলায় ওয়ার্ড কেবিনে রোগীকে রাখায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালটিতে। ওয়ার্ড ছেড়ে চলে যান নার্সরা। অন্য রোগী ও তাদের স্বজনরাও হাসপাতাল ছেড়ে যান।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জীবন মিয়া বলেন, ওই রোগী ভর্তি হওয়ার পর নার্সরা জীবন বাঁচাতে রোগীদের হাসপাতাল ছেড়ে যেতে বলেন। একথা শুনে হাসপাতালের ওয়ার্ড ছেড়ে সবাই পালিয়ে গেলেও আমি ও আমার স্ত্রী রয়ে গেছি।

এক রোগীর স্বজন শাকিলা খাতুন বলেন, ওই ব্যক্তি ভর্তি হওয়ার পর থেকে নার্সরা নিচ তলায় নেমে গেছেন। ডাক্তারাও এ ওয়ার্ডে আসছেন না।

নার্স হোসেনে আরা বলেন, আমি হাইপার টেনশানের রোগী। চাপ নিতে পারছি না। তাই ওই ওয়ার্ড ছেড়ে দোতলায় এসেছি।

প্রসূতি বিভাগে ওয়ার্ডের ইনচার্জ সীমা মন্ডল বলেন, ওই রোগীকে যেহেতু সবাই সন্দেহ করছেন, তাকে অন্য কোথাও রেখে চিকিৎসা দিলে ভালো হতো।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন, মঙ্গলবার রাতে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি নিয়ে একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে যোগাযোগ করেছি।

মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. নাসিরউদ্দিন বলেন, এ রোগী আগেও হাসপাতাল থেকে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই রোগীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হচ্ছে।

গাংনী উপজেলার নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই রোগীর বাড়ির পাশের ১০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। সেসব বাড়ির লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। জরুরি কিছুর প্রয়োজন হলে সেগুলো তাদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।

 

মেহেরপুর/মহাসিন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়