ডুবছে লক্ষ্মীপুরের নিম্নাঞ্চল
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বুধবার (২০ মে) দুপুর আড়াইটার পর থেকে মেঘনায় জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। বিকেল ৩টার দিকে মেঘনার পানি উপকূলে ঢুকে পড়ে। এখন পর্যন্ত তিন ফুট পানিতে ডুবে আছে উপকূলের ফসলি জমি।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ১০ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগর ও নদী উপকূলীয় অন্যান্য জেলার সঙ্গে লক্ষ্মীপুরেও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হচ্ছে। দুপুর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে মেঘনা। স্রোত আর ঢেউয়ের তীব্রতা বেড়েছে।
তবে এই ঝুঁকিতেও শতাধিক নৌকায় জেলেরা মাছ ধরায় ব্যস্ত রয়েছে। জেলেদেরকে উঠিয়ে নিতে প্রশাসন কিংবা স্বেচ্ছাসেবী কাউকেই নদী এলাকায় দেখা যায়নি।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর সদর থেকে কমলনগর হয়ে রামগতির আলেকজান্ডার পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙন কবলিত। এরমধ্যে চার কিলোমিটার এলাকায় নদীর তীর রক্ষা বাঁধ রয়েছে।
তবে বাঁধের দুই পাশই খালি। এজন্য মেঘনার তীব্র স্রোত ও ঢেউ দুই পাশ থেকে বাঁধে আঘাত করছে। এতে উপকূলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলসহ বাঁধটিও হুমকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধে ধস নামতে পারে।
কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফসলি ক্ষেতের পাশাপাশি মতিরহাট ও চরকালকিনি এলাকার বসতবাড়িতে মেঘনার জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
আবার ওই এলাকায় শুধু মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো আশ্রয় কেন্দ্র নেই। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান যদি ১০ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে পরিণত হয়, তাহলে পুরো উপকূল লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বিভাগ সূত্র জানায়, রামগতিতে এক কিলোমিটার, আলেকজান্ডারে সাড়ে তিন কিলোমিটার ও কমলনগরে এক কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। সেসব স্থানে তেমন কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে যেসব স্থানে বাঁধ নেই সেসব স্থান খুব ঝুঁকিতে রয়েছে। মেঘনার লুধুয়া, চরফলকন, মতিরহাট, কালকিনিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙন ঝুঁকিতে আছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেঘনায় পানির উচ্চতা কতটুকু বেড়েছে তা এখনো নির্ণয় করা যায়নি। আম্ফান আঘাত করলে এটি নির্ণয় করা হবে। এখনো স্বাভাবিক জোয়ার চলছে। মেঘনা উপকূলীয় পুরো এলাকা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে উপকূল রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ফরহাদ হোসেন/সনি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন