আসছে বর্ষাকাল, চলছে নৌকা তৈরি

বর্ষাকাল আসন্ন। বিল এলাকা খ‌্যাত নাটোরের গ্রাম অঞ্চলগুলোর জেলে পাড়ায় চলছে বর্ষাকালের নানান আয়োজন।

বিশেষ করে নাটোরের জেলে সম্প্রদায়ের লোকেরা এখন ব্যাস্ত সময় পার করছেন জাল বুনন ও নতুন নৌকা তৈরির কাজে।

শনিবার দুপুরে (৩০ মে) দেখা যায়, মাধনাগর গ্রামে জেলেদের অনেকেই মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ছোট ছোট নৌকা বানানোর কাজে কাঠমিস্ত্রিদের সাথে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বর্ষায় জলমগ্ন মাঠে নৌকা ছাড়া মাছ ধরা সম্ভব নয়। আবার নৌকা ছাড়া চলাচলেরও কোনো উপায় থাকে না। বর্ষায় নৌকাই হয়ে ওঠে জেলেদের চলাচল আর সংসার চালানোর একমাত্র অবলম্বন।

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বাঁশিলা গ্রামের কাঠমিস্ত্রি নিতাই চন্দ্র সরকার (৫২) বলেন, ‘সারা বছর অন্য কাজে ব্যস্ত থাকি। তবে বর্ষার এ দুই মাস ব্যস্ত থাকতে হয় জেলেদের মাছ ধরার নৌকা বানানোর কাজে। চাহিদা মোতাবেক ছোট-বড় বিভিন্ন রকম নৌকা বানাই। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে নৌকা বানাচ্ছি।’

বাঁশিলা গ্রামের দক্ষিণপাড়া নৌকার মাঝি মিজানুর রহমান মিনু (৫৫) বলেন, ‘আগে ভালো ভালো কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করা হতো। এখন কড়ই আর বাবলা দিয়েই বেশিরভাগ নৌকা তৈরি করা হয়। নৌকা তৈরিতে কাঠ ছাড়াও মাটিয়া তৈল, আলকাতরা, তারকাঁটা, গজাল, পাতাম ইত্যাদি লাগে। যা নৌকাকে দীর্ঘদিন টেকসই রাখে। বর্তমানে একটি ছোট নৌকা তৈরিতে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয়।’

শহীদ নজমুল হক সরকারি কলেজের অধ্যাপক মামুন রশিদ তোতা বলেন, ‘বর্ষার শুরুতে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করে কাঠমিস্ত্রিরা। এক সময় পণ‌্য পরিবহন ও যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নলডাঙ্গার বুক চিরে বয়ে চলা বারনই নদী। তবে কয়েক বছর থেকে সেই দৃশ্য তেমন আর চোখে পড়ে না।’

 

আরিফুল ইসলাম/সনি