সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধ সংস্কারে হাজার মানুষের স্বেচ্ছাশ্রম
সুপার সাইক্লোন আম্ফানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় ২৩টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধ সংস্কারে স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জোয়ারের পানি ঠেকাতে এলাকাবাসীর প্রাণপন এই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার (২৭ মে) সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। একই সাথে ঝড়ো বাতাস বইছে। এর সাথে নদনদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের পানি ঠেকাতে উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন বেড়িবাঁধ নির্মাণে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছে।
এদিকে, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর আওতাধীন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের তিন টি পয়েন্টে স্থানীয় জনতা স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ দিলেও বাকী পাঁচটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ এখনও সংস্কার করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে এসব বেড়িবাঁধ সংস্কারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের দাবী ত্রাণ চাই না, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।’
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, শ্যামনগর উপজেলার গাবুরার লেবুবুনিয়া, কাশিমাড়ির কোলা ও বুড়িগোয়ালিনীর দাতিনাখালি বাদে বাকীসব পয়েন্টের বেড়িবাঁধ পানি উন্নয়নবোর্ডের সহযোগিতায় স্থানীয় জনতা রিংবাঁধ দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সংস্কার করেছেন।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় স্থানীয় জনতা বেড়িবাঁধগুলো রিংবাঁধ দিয়ে সংস্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, ভাঙন কবলিত এলাকায় যারা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন, তাদের জন্য ইতোমধ্যে ৫০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পানি সম্পদ মন্ত্রানালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার জানান, ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলো পরিদর্শনে গিয়ে উপকূলবাসীর বলেন যতদ্রুত সম্ভব বাঁধ মেরামতে সরকারের ডেল্টাপ্লান বাস্তবায়নে কার্যকরি উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘নদীতে প্রবল জোয়ারের কারণে কাজ করা কঠিন হচ্ছে। তবে বেড়িবাঁধ ভাঙনের জন্য শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগই দায়ী নয়।’
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ সেনাবাহিনীকে মেরামতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু জায়গায় সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে ও কিছু জায়গায় সিভিল প্রশাসনের ত্বাবধানে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে।
সাতক্ষীরা/সনি
রাইজিংবিডি.কম