করোনাকালে বাগেরহাটের কমিউনিটি ক্লিনিকে বাড়ছে রোগী
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঝুঁকির মধ্যেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা। অন্যান্য সময়ের থেকে ক্লিনিকে রোগীও বেড়েছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ির পাশে ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় খুশী স্থানীয়রা।
বাগেরহাট জেলায় ২০৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতি ক্লিনিকে নিরাপত্তা সামগ্রী পিপিই মাস্ক, সেনিটাইজার, হ্যান্ডগ্লোভস দেওয়া হয়েছে। রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশমতে সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়দের।
বাগেরহাট সদর উপজেলার মুক্ষাইট কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মিজানুর রহমান বলেন, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মাঝে তৃনমূল জনসাধারণকে নিয়মিত সেবা প্রদান করছি।প্রতিদিন যেসব রোগীরা সেবা নিতে আসছেন, তারা অধিকাংশই মৌসুমি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথায় আক্রান্ত। করোনা সংক্রমণের উপসর্গের সঙ্গে অনেকটা মিল থাকায় কোন করোনা আক্রান্ত রোগী হলেও তা নির্ধারণ করা কঠিন কাজ। ক্লিনিকে আগত রোগীদের নিকট থেকে তাদের শারীরিক সমস্যার তথ্য জেনে সিএমইডি এজেন্ট অ্যাপস ব্যাবহার করে করোনার সম্ভাবনা আছে কিনা তা নির্ধারণ করে তাদেরকে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান করে থাকি। সুরক্ষা সামগ্রী ব্যাবহারের মাধ্যমে যতটা সম্ভব নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সেবা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আগের থেকে রোগীও বৃদ্ধি পেয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা গৃহবধু রেবেকা খাতুন বলেন, করোনার কারণে হাসপাতালে যেতে পারি না। ঠান্ডা গরমের জন্য জ্বর, মাথা ব্যাথা নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে আসছি।এখানে ডাক্তার দেখালাম। পেশার মাপল, ওজন মাপল। পরে ঔষধ দিল, চলে আসলাম। গ্রামের অনেকেই ওখানে যায়।
বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ কুমার বকসী বলেন. উপজেলার ৩২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিকে করোনা সংক্রমনের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রদান করা হয়েছে। শরীর থেকে নেওয়ার ওপর একদিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে সিএইচসিপিদের। করোনা ভাইরাসের এই সংকটময় মুহূর্তে সদর উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি নিরবিচ্ছিন্নভাবে তৃনমূল মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। সিএইচসিপিদের অগ্রনী সাহসী ভূমিকার জন্য যা সম্ভব হচ্ছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, করোনাকালে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। করোনার আগের মাসে যেখানে দেড় লাখ রোগী সেবা নিতো, সেখানে করোনা আতঙ্কে এক লাখে নেমে আসে। আমাদের সচেতনতার ও বিভিন্ন পদক্ষেপে কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিমাসে ১০ থেকে ১২ হাজার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সিএইচসিপিদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য।
বাগেরহাট/টুটুল/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম