শাপলা উঠিয়ে ৪ শতাধিক পরিবারের দিন চলে
বর্ষা মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলায় শাপলা উঠিয়ে বিক্রি করে চার শতাধিক পরিবারের দিন চলে।
বর্ষার পানিতে টইটুম্বর খাল-বিল থেকে শাপলা তুলে তা বাজারে বিক্রি করে এই সব পরিবারের সদস্যরা। বছরের প্রায় দুই মাস তারা এই শাপলা বিক্রি করতে পারে।
বুধবার (৩ আগস্ট) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, খাল-বিলে জন্মানো শাপলা ফুল তুলে নৌকায় ভরে নিয়ে এসে সিরাজদিখান-নিমতলা সড়কের পাশে শুনিয়া, ইমামগঞ্জ, চোরমর্দন, লতব্দীসহ বিভিন্নস্থানে স্তূপ করে রাখছেন।
বিকেলে পাইকাররা এসে সেগুলো কিনে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে যাবেন সবজি হিসেবে বিক্রি করার জন্য।
বর্ষা মৌসুমে যখন হাতে তেমন কাজ থাকে না, অনেক কৃষক ও দিনমজুর শাপলা তুলে বিক্রি করেন। এতে পুঁজির দরকার হয় না। শুধু শ্রম দিলে চলে। শাপলা সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে বাণিজ্যিক আকারে সংগ্রহ করা যায় মাস দুয়েক।
দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, তিনি ১০ বছর ধরে শাপলা উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন। সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল মতিন বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর পর তারা শাপলা উঠিয়ে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে থাকেন। এতে দুই-তিন মাস সংসার চলে তাদের।
শাপলা সংগ্রহকারী আওলাদ হোসেন জানান, প্রতিদিন একজন ৩০ থেকে ৪০ আটি (৬০টিতে ১ আটি) শাপলা তুলতে পারে। পাইকাররা তাদের কাছ থেকে এসব শাপলা কিনে নিয়ে যায়। এতে তাদের ৫০০-৬০০ টাকা আয় হয়।
উপজেলার দানিয়াপাড়া গ্রামের পাইকার ব্যবসায়ী মোহন মিয়া জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে তিনি দেড় হাজার থেকে দুই হাজার আটি শাপলা কিনে নিয়ে যান। তিনি প্রতি আটি ১৫-২০ টাকা দরে কেনেন। এর সঙ্গে আটিপ্রতি ৩ টাকা গাড়ি ভাড়া, ১ টাকা লেবার খরচ, ২ টাকা আড়ৎ খরচ যোগ হয়। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে প্রতি আটি ২৫ থেকে ২৭ টাকা দরে বিক্রি করেন।
সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাফিয়ার রহমান বলেন, শাপলা কীটনাশক ও রাসায়নিক সারমুক্ত সবজি। শাপলা বিক্রি করে প্রতি মাসে কোটি টাকা উপার্জন করছেন সিরাজদিখান উপজেলার কৃষকরা। এটি আবাদ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে।
ঢাকা/বকুল