তামাবিলবন্দরে বেড়েছে পাথর আমদানি, ফিরেছে প্রাণ
তামাবিল বন্দর (ফাইল ছবি)
ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম জৈন্তিয়া পাহাড় জেলার ডাউকি, এপারে বাংলাদেশের সিলেটে জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল। বাংলাদেশ অংশে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অবস্থান তামাবিল স্থলবন্দরের। মেঘালয় ও ভুটান থেকে আমদানি করা পাথর, চুনাপাথর, কয়লাসহ আমদানিকৃত বিভিন্ন পণ্য এ বন্দর দিয়েই বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
সম্প্রতি এ বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বেড়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে এখনও বন্ধ আছে কয়লা আমদানি। পাথর আমদানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বন্দর এলাকায় ব্যবসায়ীদের মাঝে ফিরেছে কর্মপ্রাণ। স্বস্তি ফিরেছে করোনাকালে কর্মহীন থাকা শ্রমিকদের মাঝেও।
ভারতে লকডাউনের কারণে চলতি বছরের ১৯ মার্চ থেকে তামাবিল স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রায় ৫ মাস পর গত ১৭ আগস্ট থেকে ফের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে আমদানি কার্যক্রম। পাথরের পাশাপাশি ফল এবং সবজিও আমদানি হচ্ছে এ বন্দর দিয়ে।
পাথর আমদানিকারক এনামুল হক রাইজিংবিডিকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ ছিল আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম। গত মাসে ফের চালু হওয়ার পর থেকে কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। সম্প্রতি পাথর আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কয়লা আমদানি এখনও বন্ধ আছে।
তিনি বলেন, আমদানি স্বাভাবিক থাকার কারণে বন্দরের প্রাণ ফিরেছে। ব্যবসায়ীরাও তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি বেকার থাকা শ্রমিকরাও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় আমদানিকারকরা এলসি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন ছেদু রাইজিংবিডিকে বলেন, বর্তমানে বন্দরে পাথর আমদানি কার্যক্রম প্রায় স্বাভাবিক। তবে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে প্রায় ৪০০ পাথরবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি চন্দন সাহা বলেন, কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় আমাদের অনেক এলসি আটকে আছে। যে কারণে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকা ডিউটি বাংলাদেশে জমা রয়ে গেছে, তা আমরা ব্যবহারও করতে পারছি না।
তামাবিল স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা সজিব মিয়া বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।
সম্প্রতি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সিলেটের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা আমদানি না হলে আমদানির আগে দেওয়া ডিউটি (অগ্রিম শুল্ক ও কর) রিফান্ডের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে সিলেট অঞ্চলের সব শুল্ক স্টেশনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবিও জানান।
এ বিষয়ে সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, সিলেটের ব্যবসায়ীদের বড় একটি অংশ আমদানি রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও আমদানি-রপ্তানিকারকদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চেম্বারের পক্ষ থেকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।
সিলেট/সাইফ