কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত গৃহিণীরা
মহাসিন আলী || রাইজিংবিডি.কম

চলছে কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ
শীতকে স্বাগত জানিয়ে মেহেরপুরে ঘরে ঘরে চলছে কলাই আর চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি বানানোর কাজ। জেলার কয়েকশ পরিবার কুমড়া বড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
গ্রামের বাড়ির চালে ও মাচাই এখন শোভা পাচ্ছে বড় বড় চাল কুমড়ো। যা দিয়ে তৈরি হচ্ছে কুমড়ো বড়ি। শীতের ভোরে মেহেরপুর শহর ও পাড়া-মহল্লার নারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বড়ি তৈরি করে। কেউ ছুটছেন ঢেঁকির কাছে, কেউবা সাহায্য নিচ্ছেন শিলপাটার। আবার অনেকে সাহায্য নিচ্ছেন বৈদ্যুতিক মেশিনের।
বড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত কলাইয়ের ডালের সঙ্গে চাল কুমড়োর পরিবর্তে অনেকে মূলা অথবা পেঁপে ব্যবহার করেও থাকেন।
মুজিবনগর উপজেলার মানিকনগর গ্রামের ছকিদা খাতুন জানান, এ বড়ি মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য মাছ-মাংসের সমান। তাই শীত এলেই গ্রামাঞ্চলের লোকজন বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পাড়ার অনেক পরিবার একত্রিত হয়ে বড়ি বানাই। বড়ি প্রতিটি তরকারিতে বাড়তি স্বাদ এনে দেয়। বড়ি ভেঙে পেঁয়াজ, রসুন ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁজি করলে এক চমৎকার খাবার তৈরি হয়। এছাড়া, বড়ি দিয়ে রান্না করা বেগুন, লাউ, ফুলকপি, আলুর তরকারির স্বাদই আলাদা।
মেহেরপুর শহরের ভূমি অফিসপাড়ার গৃহবধূ মেরিনা আক্তার জানান, প্রতিবছর শীত এলে শহর ও গ্রামে সব জায়গাতে এই বড়ি বানানো হয়। সকাল হলেই পাড়া-মহল্লার গৃহিণীরা বিভিন্ন বাড়ির ছাদে একত্রে দল বেঁধে বড়ি বসানোর কাজ করেন। মেহেরপুরের বড়ি ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে।
মেহেরপুর শহরের বড় বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানান, মূলত শীতের মৌসুমে কুমড়া বড়ির বাজার ধরতে আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ এই তিন মাসে কুমড়া বড়ি তৈরি করা হয়। ২-৩ দিন কড়া রোদে শুকিয়ে প্রস্তুত করা হয় সুস্বাদু বড়ি। এ কাজে নারীদের শ্রম বেশি দিতে হয়।
বর্তমানে এ অঞ্চলের হাট বাজারে প্রতি কেজি কুমড়া বড়ি ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিনে নিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।
স্থানীয়রা বলেন, ডাল ও মসলার দাম বেড়ে যাওয়ায় কুমড়া বড়ি তৈরিতে খরচ বেশি পড়ছে। ফলে হিমশিম কেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তাই স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি করেন তারা।
মেহেরপুর/ইভা