ঢাকা     বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২২ ১৪৩১

লকডাউনে কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ, দিন কাটাছে অনাহারে

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ২৪ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৫:৪১, ২৪ এপ্রিল ২০২১
লকডাউনে কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ, দিন কাটাছে অনাহারে

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চাপাইল গ্রামের রিকশাচালক মফিজুর রহমান। সংসারে রয়েছেন বয়স্ক মা, স্ত্রী আর ১০ বছর বয়সি এক ছেলে ও ৬ মাস বয়সি এক মেয়ে। সরকার ঘোষিত প্রথম দফায় লকডাউন রিকশা নিয়ে বের হননি তিনি। কিন্তু সরকারি সহযোগিতা না পাওয়ায় ৫ জনের সংসার চালাতে রিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন তিনি। রাস্তায় লোকজন না থাকায় ভাড়া কম হওয়ায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

তার মতো একই অবস্থা জেলার শ্রমজীবী মানুষের। কাজের খোঁজে বাইরে বের হলেও পুলিশি বাধায় কাজ করতে পারছেন না তারা। ফলে এক প্রকার কর্মহীন হয়ে পড়ায় পরিবারের ভরণ পোষণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে তাদের।

গোপালগঞ্জ জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, লকডাউনের কারণে গোপালগঞ্জে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। কাজ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে পরিবার নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। পেটের তাগিদে বাইরে বের হলেও পুলিশি বাধার মুখে পড়ছেন তারা। জেলা শহরের পুলিশ লাইন থেকে পাচুরিয়া পযর্ন্ত অন্তত ৬টি স্থানে ব্যরিকেড দিয়ে গাড়ি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে পুলিশ। এসময় তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

এদিকে, তাদের মত একই অবস্থা দোকান কর্মচারীদের। দোকান পাট বন্ধ থাকায় কাজ করতে পারছেন না তারা। এতে দোকান মালিকদের কাছ থেকে বেতন তো দূরের কথা আর্থিক সহযোগিতাও পাচ্ছেন না। ফলে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে তাদের।

সদর উপজেলার চর সোনাকুড় গ্রামের রিকশাচালক ইবাদুল মোল্যা বলেন, ‘গাড়ি নিয়ে বাইরে বের হলে এখন আর ভাড়া পাচ্ছি না। আগে যেখানে ৮’শ টাকা রোজগার করতাম সেখানে এখন দু’শ টাকাও রোজগার করতে পারছি না। এতে সাংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’

সদর উপজেলার কংশুর গ্রামের মিরাজ ফ‌কির বলেন, ‘আমার সংসারে ৮ জন লোক। রিকশা নিয়ে বাইরে বের হলে পুলিশ বাঁধা দিচ্ছে। এতে রিকশা চালাতে পারছি না। ফলে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়।’

দোকান কর্মচারী সুশান্ত সাহা বলেন, ‘সংসারে তিনজন রয়েছে। দোকান মালিক দোকান খুলতে না পারায় দোকানে যেতে পারছি না। এতে বেতনও পাচ্ছি না। এখন পযর্ন্ত কোনো সরকারি সহযোগিতা পাইনি। লকডাউন তুলে দোকান খুলে দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানাই।’

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, লকডাউন ঘোষণার পর এর মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলায় ৬ হাজার ৬৬২টি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জিআর পেয়েছি ৩৫ হাজার পরিবারের জন্য ৫’শ টাকা করে এং ভিজিএফ এসেছে ৮৯ হাজার ৩৬৩ পরিবারের জন্য ৪৫০ টাকা করে। আজ থেকে এ বরাদ্দগুলো যেন মানুষের কাছে পৌঁছে যায় তার কাজ শুরু করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়