মিতু হত্যার পর ঘটনাক্রম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
২০১৬ সালের ৫ জুনঃ সকাল সাড়ে ৬টা। সন্তানকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম জিইসি মোড়ে নিজ বাসার কাছে প্রধান সড়কের ওপর খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
৬ জুনঃ চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার বড় গ্যারেজ এলাকা থেকে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত মোটর সাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। একই দিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে সন্দেহভাজন আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যামামলা দায়ের করেন।
৮ জুনঃ হাটহাজারী থেকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় আবু নসুর গুন্নু নামের একজনকে।
১১ জুনঃ চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন শীতল ঝর্ণা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শাহ জামান ওরফে রবিন নামে একজনকে। পরে পুলিশ গুন্নু ও শাহ জামানের হত্যায় সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়।
২৪ জুনঃ একটি ফোন রেকর্ডের সূত্র ধরে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরের বাসা থেকে ঢাকার গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয় তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে। প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বাবুল আক্তারকে ছেড়ে দেওয়া হলে তিনি পুলিশের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।
২৬ জুনঃ মিতু হত্যায় জড়িত সন্দেহে মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তারা আদালতে নিজেরা হত্যায় জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয়।
২৮ জুনঃ চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এই সময় গ্রেপ্তার করা হয় অস্ত্র সরবরাহকারী এক সময়ে বাবুল আক্তারের অন্যতম সোর্স এহেতাশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মো. মনিরকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি ছিল পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তল।
১ জুলাইঃ হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল সরবরাহকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় সাইদুল আলম শিকদার ও শাহজাহানকে। তাদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে- মিতু হত্যার নির্দেশদাতা মুছা নামের এক ব্যক্তি। যিনি বাবুল আক্তারের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সোর্স।
৪ জুলাইঃ মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, পুলিশ তার স্বামী মুছাকে তুলে নিয়ে গেছে। এই সংবাদ সম্মেলন থেকে মুছাকে আদালতে হাজির করার আর্জি জানান তিনি। তবে ৪ জুলাইয়ের পর থেকে মুছার সন্ধান পায়নি তার পরিবার।
৫ জুলাইঃ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি এলাকায় মিতু হত্যায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি নুরুল ইসলাম রাশেদ ও নুরুন্নবী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
৬ সেপ্টেম্বরঃ পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিঃ ভোলা জেলার লালমোহন এলাকা থেকে মিতুর ব্যবহৃত ফোনের সিমকার্ড উদ্ধার করে পুলিশ।
১১ জুলাইঃ চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে তদন্ত কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদে উপস্থিত হয়ে হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন বাবুল আক্তার। এই সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
২০২০ সালের জানুয়ারিঃ মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারিঃ ৬ মের মধ্যে মিতু হত্যা মামলার অগ্রবর্তী প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
১১ মেঃ মিতু হত্যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ডেকে আনা হয় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে। এরপর তাকে হেফাজতে রাখে পিবিআই।
১২ মেঃ স্ত্রী মিতু হত্যায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রেজাউল/বকুল