ইয়াস: নোয়াখালীর প্রতি ইউনিয়নে বরাদ্দ আড়াই লাখ টাকা
নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াখালী জেলার ৯৩টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই আড়াই লাখ টাকা করে বরাদ্দ করেছে সরকার।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্তের জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (২৮ মে) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসক জানান, নোয়াখালী উপকূলীয় জেলা হওয়াতে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই অঞ্চলের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপণ করতে আরও সময় লাগবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে সহায়তা করার জন্য সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, জেলার ৯৩টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই আড়াই লাখ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। ইয়াসের প্রভাবে এবার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে কিংবা বাঁধ উপচে পানি ঢুকে অনেক এলাকার ঘেরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ কিছুটা কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ অঞ্চল হাতিয়া উপজেলা। হাতিয়ার প্রায় সব গ্রামে জোয়ারের পানি রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী রোববার (৩০ মে) ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারব বলে আশা করি।’
নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোতালেব হোসেন জানান, হাতিয়া উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার ৫০টি মৎস্য পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ২০০ ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চাষিদের প্রায় ১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণ দাস জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বড় গাছের ক্ষতি কম হয়। মূলত চারাগাছের ক্ষতি হয়। গত দুই বছরে যে সকল নতুন বাগান হয়েছে সেগুলো ক্ষতি হবে। বর্তমানে উপকূলে জোয়ারের পানি রয়েছে। জোয়ারের পানি ভাটায় নামা মাত্র আমাদের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট পাঠাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল হক জানান, এবারের জোয়ারের পানি অধিক লবণাক্ত হওয়ায় ফসলের ক্ষতির পরিমাণ বেশি। তবে জোয়ার আসা বন্ধ হলে ক্ষয়ক্ষতির আরও সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন জানান, হাতিয়া উপজেলায় ১২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে সোনাদিয়া, তমরদ্দি ও চরকিং ইউনিয়নে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও অনেক স্থানে বেড়িবাঁধের ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। বেড়িবাঁধের সংস্কার অব্যাহত আছে।
সুজন/বুলাকী