করোনা এবং ভারতীয় গরু কুষ্টিয়ার খামারিদের শঙ্কা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
কোরবানি ঈদ সামনে রেখে কুষ্টিয়ার প্রায় ১৭ হাজার খামারি গরুর পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে জেলা থেকে প্রায় তিন লাখ গরু ঢাকা ও চট্টগ্রামের পশুর হাটে যাবে। কিন্তু খামারিদের এই শ্রম, স্বপ্নের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাসৃষ্ট জটিল পরিস্থিতি। পাশাপাশি খামারিদের মনে রয়েছে ভারতীয় গরু প্রবেশের শঙ্কা।
জানা গেছে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে জেলার ৬টি উপজেলায় ১৭ হাজারেরও বেশি খামারে প্রায় এক লাখ পঞ্চাশ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলাজুড়ে প্রান্তিক কৃষকের কাছে রয়েছে আরো প্রায় দেড় লাখ গরু। জেলার খামারে ছাগলের পরিমাণও প্রায় দেড় লাখ। পশুগুলো জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন খামারিরা। বছরের এই সময়ের জন্য তারা আলাদাভাবে ব্যবসার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু গত বছর করোনার কারণে অবিক্রিত পশু ছিল। এবারো যদি ঠিকমতো বাজার ধরতে না পারেন তাহলে অবিক্রিত পশুর সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা।
এদিকে অবৈধ পন্থায় গরু মোটাতাজা ঠেকাতে জেলা প্রশাসন ও প্রাণী সম্পদ অফিস নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামের খামারি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার খামারে ১৫টি গরু মোটাতাজা করেছি। দাম ভালো না পেলে লস হবে। ভাবছি ঢাকার গাবতলী হাটে নিয়ে যাব। কিন্তু করোনার কারণে নিতে পারবো কিনা সন্দেহ।’
ঈদের আগে ভারতীয় গরু এলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে বলে জানান এই খামারি।
করোনার কারণে এবার এমনিতেই পশু খাদ্যের দাম বেশি। ফলে খামারিদের বিনিয়োগ করতে হয়েছে তুলনামূলক বেশি। অথচ চোখ রাঙাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। ফলে অধিকাংশ খামারি শঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, পশুপালন ভালো হলেও গরুর বাজার নিয়ে তারা চিন্তিত।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ঢাকা ও চট্টগ্রামে কুষ্টিয়ার গরুর আলাদা কদর রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় গরু একটানা ভ্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে করোনা পরিস্থিতিও ভাবতে হবে। ফলে গরু বহনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
এদিকে কোরবানির পশু পরিবহনে চাঁদা কিংবা ডাকাতির ঘটনা ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে সরকারী নির্দেশনা অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোরবানির পশু বোঝাই ট্রাক ও গরু ব্যবসায়ীদের মহাসড়কে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।
রাস্তায় চাঁদাবাজির বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ জিরো টলারেন্স বলেও জানান তিনি।
কাঞ্চন/তারা