রতন চাকমা এখন রাঙামাটিতে আমের ব্র্যান্ড
বিজয় ধর || রাইজিংবিডি.কম
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে আম বাগান করে ভাগ্য বদল করতে সক্ষম হয়েছেন কৃষক রতন চাকমা। তিনি নিজেই এখন আমের ব্র্যান্ড।
রাঙামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের চাকমা পাড়া এলাকায় নিজস্ব জায়গায় আম চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।
রতন জানিয়েছেন, ২০০৪-০৫ সালে ১৮ একর জায়গার মধ্যে আম গাছের চারা রোপণ করেন। বর্তমানে তার বাগানে হাজারেরও বেশি আমের গাছ রয়েছে । বাগানে আম্রপালি, রাঙ্গুয়াই, বারি-৪, চোষা চার জাতের আম গাছ রয়েছে।
রতন চাকমার ভাই অমরধন চাকমা বলেন, গতবারের তুলনায় এবার বাগানে ভালো আমের ফলন হয়েছে। আশা করছি লাভও হবে দ্বিগুণ।
তিনি বলেন, পাহাড়ের আম রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন বেশ জনপ্রিয়। রাঙামাটির বিভিন্ন বাগানের আম রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে প্রতিদিন।
রাঙামাটি শহর থেকে চাষি রতনের আম বাগান দেখতে আসা সুমন দাশ বলেন, এই আমের বাগানটি অনেক বড় বাগান। এখানকার বাগানের আমগুলো বেশ সুস্বাদু। বিশেষ করে আম্রপালি ও রাঙ্গুয়াই।
রতন চাকমা বলেন, আমি এ বাগান শুরু করি ২০০৪ -০৫ সালে। আমের চারা লাগানোর চার-পাঁচ বছর পর থেকে গাছে ফল আসে। এ বাগানের প্রথম আম বিক্রয় করেছি প্রায় ৮০ হাজার টাকায়। এর পরে বাগানে আস্তে আস্তে আমের ফলনও বাড়তে থাকে এবং আমার আয়ও বাড়ে।
তিনি বলেন, গতবারের তুলনায় এবার বাগানে আমের ফলন ভালো হয়েছে। এবার প্রায় ১০ হাজার কেজি আমের উৎপাদন হবে। এতে করে আমার প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা আয় হবে ।
রাঙামাটি কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার রাঙামাটিতে ৩৩৯২ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৭ হাজার ৩১২ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন হবে। হেক্টর প্রতি আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ মেট্রিক টন । এবার রাঙামাটি সদর উপজেলায় আমের উৎপাদন হয়েছে ৪৪৩ হেক্টর জমিতে ৪৮৭৩ মেট্রিক টন, কাপ্তাই উপজেলায় ৭৫২ হেক্টর জমিতে ৮২৭২ মেট্রিক টন, কাউখালী উপজেলায় ২৭৫ হেক্টর জমিতে ৩০২৫ মেট্রিক টন, নানিয়ারচর উপজেলায় ২৭৪ হেক্টর জমিতে ৩০১৪ মেট্রিক টন,বরকল উপজেলায় ২৭০ হেক্টর জমিতে ২৯৭০ মেট্রিক টন, জুরাছড়ি উপজেলায় ৩১৫ হেক্টর জমিতে ৩৪৬৫ মেট্রিক টন, লংগদু উপজেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে ৪৫১০ মেট্রিক টন,বাঘাইছড়ি উপজেলায় ২৮৮ হেক্টর জমিতে ৩১৬৮ মেট্রিক টন,রাজস্থলী উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে ১৬৫০ মেট্রিক টন ও বিলাইছড়ি উপজেলায় ১১৫ হেক্টর জমিতে ১২৬৫ মেট্রিক টন ।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্ল্কি বলেন, রতন চাকমার পাশাপাশি অনেক ঊদ্যোক্তা আছেন যারা রাঙামাটিতে আমের ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ভবিষ্যতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি আমের জন্য বিখ্যাত হবে।
রাঙামাটি/টিপু